পোস্টগুলি

নিতাই বাবু লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আমরা কী না খাই?

ছবি
  আমরা কী না খাই? আমরা ভাত খাই, মাছ খাই, মাংস খাই, বিস্কুট খাই, রুটি খাই, কলা খাই, ডিম খাই, মামলেট খাই, ভাজি খাই, হালুয়া খাই, পরোটা খাই, পরেরটা খাই, আমরা কী না খাই? আমরা সব খাই! আমরা বুট খাই, বাদাম খাই, চানাচুর খাই, বার্গার খাই, কেক খাই, জিলাপি খাই, নিমকি খাই, মুড়ি খাই, চিড়া খাই, খিরা খাই, কীড়া খাই, কসম খাই, আমরা কী না খাই? আমরা সব খাই! আমরা কচু খাই, লতি খাই, শিম খাই, আলু খাই, পটল খাই, বেগুন খাই, ফুলকপি খাই, বাঁধাকপি খাই, লাউ খাই, কুমড়া খাই, হামলা খাই, মামলা খাই, আমরা কী না খাই? আমরা সব খাই! আমরা পিঠা খাই, মিষ্টান্ন খাই, খই খাই, লাড়ু খাই, পায়েস খাই, সন্দেশ খাই, মিষ্টি খাই, ছানা খাই, দানা খাই, দুধ খাই, দই খাই, নদী খাই, আমরা কী না খাই? আমরা সব খাই! আমরা মাঠা খাই, ঘোল খাই, মাখন খাই, পুরি খাই, সিঙ্গারা খাই, চটপটি খাই, ফুচকা খাই, হালিম খাই, গ্রিল খাই, কাবাব খাই, গোল খাই, দোল খাই, আমরা কী না খাই? আমরা সব খাই! আমরা বেদানা খাই, কমলা খাই, পেস্তা খাই, বড়ই খাই, চড়ুই খাই, তেল খাই, বেল খাই, ঝোল খাই, আম...

ব্যর্থ জীবন

ছবি
  ব্যর্থ জীবন কেন এই পৃথিবীতে এলাম? কার উদ্দেশ্যে এই আগমন? বেঁচে থাকবার অর্থ কি শুধুই নিঃশ্বাস নেওয়া আর মৃত্যুর অপেক্ষা করা? এত বছর কেটে গেলো— তবুও আজ নিজেকে জিজ্ঞেস করতে হয়, কি করলাম আমি এই জীবনে? না পেরেছি নিজের অস্তিত্বের অর্থ খুঁজে পেতে, না পেরেছি মানুষের জীবনে আলো জ্বালাতে। জন্মের পর থেকে কেবলই ছুটেছি। কখনো জীবিকার জন্য, কখনো প্রমাণের জন্য, কখনো আপনজনের ভালোবাসা পাবার আকুতি নিয়ে। তবুও যেন কোথাও পৌঁছাতে পারিনি। শুধু কষ্ট জমেছে বুকের খাঁচায়, শুধু ঋণ বেড়েছে জীবনের কাছে। স্মৃতির খাতায় যদি চোখ রাখি, দেখি সেখানে আছে অপূর্ণতা, অসফলতার দীর্ঘ ছায়া, আর আছে কিছু অনুতাপ— যা রাতে নিঃশব্দে কাঁদিয়ে তোলে। অহংকার করেছিলাম এই দেহ নিয়ে— চেহারা, সামান্য বিদ্যা, সামান্য কিছু সম্পদ। ভেবেছিলাম, এটাই বুঝি আমার অর্জন! কিন্তু মৃত্যু এসে বলে দেবে— "তোর কিছুই তোর নয়, সবই সময়ের ধার।" এই দেহ পুড়ে যাবে চিতার আগুনে, রেখে যাবে একমুঠো ছাই আর কিছু শোকবার্তা। কারও চোখে অশ্রু নাও আসতে পারে, কারও মুখে উচ্চ...

ব্যর্থ জীবনের গল্প

ছবি
  গল্প: ব্যর্থ জীবন বিকেলটা ছিল অদ্ভুত রকমের নীরব। সূর্যটা ছিল যেন একটু তাড়াহুড়োয়, নরম আলোটা ঘরের মেঝেতে হেলে পড়ছিল ধীরে ধীরে। সোহেল উদাস চোখে জানালার বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিল। বাড়ির পাশের পুরনো আমগাছটার পাতার ফাঁকে ফাঁকে আলো এসে পড়ছে তার মুখে, আর তাতেই যেন বেদনার রংটা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। ৬৩ বছর বয়স— এই জীবনে কী পেল সে? একটা চাকরি ছিল, তাও মাঝখানেই ছেড়ে দিতে হয়েছিল পারিবারিক চাপে। ব্যবসা শুরু করেছিল—হঠাৎ এক বন্ধু বিশ্বাসঘাতকতা করল। স্ত্রীকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল, আজ সেই স্ত্রী-ই যেন প্রতিদিন মনে করিয়ে দেয়— সে ব্যর্থ। সোহেল ধীরে ধীরে উঠলো, চুপচাপ আয়নার সামনে দাঁড়ালো। চুলে পাক ধরেছে অনেক আগেই, চোখে কালি, মুখে গাঢ় ক্লান্তি। নিজেকে দেখে তার মনে হলো, “এই আমি কি সেই সোহেল, যে একদিন স্বপ্ন দেখত—জীবনের রং পাল্টে দেবে?” সে জানালার পাশে বসে গেল। পিঠে একটা পুরনো চাদর জড়িয়ে, এক কাপ কড়া লাল চা হাতে নিয়ে ভাবতে লাগলো— “কেন এসেছিলাম এই পৃথিবীতে?” “শুধু ব্যর্থতা দেখার জন্য?” স্মৃতিগুলো একে একে ভিড় করতে লাগল ...

খুঁজেছিলাম

ছবি
খুঁজেছিলাম সুখ খুঁজেছিলাম ভোরের শিশিরে, পাখির কূজনে, ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণে— কিন্তু পাইনি শান্তি এক বিন্দুও হৃদয়পটে। পেয়েছি কেবল দুখীর দীর্ঘশ্বাস, পেয়েছি ক্লান্ত আত্মার কান্না নিঃসাড় রাতে। শান্তির মা’কে খুঁজেছিলাম উপবাসে, প্রার্থনায়, বসে ছিলাম ধ্যানস্থ নিস্তব্ধ বিকেলে— কিন্তু নেমে এলো কেবল অশান্তির ঝড়, আমার হৃদয়ের নিভৃত বাগানে। ভালোবাসা খুঁজেছি দুয়ারে-দুয়ারে, কিন্তু ফিরেছি কেবল শূন্যতার হাহাকারে। প্রেমের পিপাসা নিয়ে ঘুরেছি দ্বারে-দ্বারে, দেখেছি সেখানে অভিনয়ের বাজারে তামাশার ঝাড়ে। টাকা-পয়সা খুঁজেছি রাস্তায় রাস্তায়, পেয়েছি কেবল মরিচিকার ধুলো ছড়ায়। ধনসম্পদ খুঁজেছি মহল্লায় মহল্লায়, শেষে হাতে উঠেছে অদৃশ্য ফাঁসির দড়ি—নিভৃতে বালায়! মানুষ খুঁজেছি মানুষের মেলায়, তবু মনুষ্যত্ব পাইনি কোথাও, ছিল শুধু ছায়া! স্রষ্টাকে খুঁজেছি পাথরে, ধূপে, রীতিতে, তিনি ধরা দেননি—শুধু ছিলেন আমার হৃদয়ের গভীর সীমানায়! ✍️ লেখক পরিচিতি: নিতাই বাবু — একজন সাহিত্যনিবেদিত প্রাণ, সমাজসচেতন ও দার্শনিক কবি। তাঁর কবিতায় ফুটে ওঠে মানুষের বেদনা...

খুঁজি যারে

ছবি
“খুঁজি যারে” আমি খুঁজি যারে, পাই না যে তারে! খুঁজি ভোরের শিশিরে, সন্ধ্যার আঁধারে, ঝরে পড়া পাতায়, বাতাসের নাড়াচাড়ায়, সূর্যের দীপ্তিতে, চাঁদের নিঃশব্দ স্নেহে, পাই না, কোথাও পাই না—সে অদেখা প্রিয় মুখ। খুঁজি ঘরে-বাইরে, গ্রাম থেকে শহরে, নালার কাঁদায়, অথবা ঝিলের জলে, আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে মেঠো রোদে হেঁটে, পথিকের মতো খুঁজি নিরন্তর—একই ছায়ার পিছে! মহল্লার অলি-গলিতে, হাট-ঘাট-বাজারে, পাথরে-খোদাই মূর্তিতে, প্রাচীন মন্দিরে, পুরনো পাণ্ডুলিপির পাতায়, গানের সুরে, ধূপধুনোর গন্ধে, মন্ত্রোচ্চারণে— কোথাও পাই না তারে। কেউ বলে — “আছে সে হিমালয়ে”, “পাহাড়ের গুহায় ধ্যানে রত সাধু তার পথ চিনে”, কেউ বলে “বিরাট শূন্যে”, কেউ বলে “ঈশ্বরের সিংহাসনে”! তবুও আমার হৃদয় খুঁজে ফেরে—একটা চেনা চিহ্নের তরে। আমি গেছি মথুরায়, বৃন্দাবনে, কাশী-পুষ্করে, খুঁজেছি গয়া-প্রয়াগে, গঙ্গার ঘাটে শতবার স্নানে, তীর্থে-তীর্থে শুধাই সবাইকে— "তুমি কি জানো তার ঠিকানা?" কেউ দেয় চুপচাপ হাসি, কেউ চেয়ে থাকে অন্তরীক্ষের ...

মেহনতি মানুষের জয় হোক

ছবি
মেহনতি মানুষের জয় হোক ✊ রাজা তলোয়ারে ঠেকিয়ে বলে, "এই যে নিত্য গোপাল! তুই কেন এমন কপাল! দিনরাত খাটিস, মাটি কাটিস— বল তো, কবে পাবি আরেকটা ভালো হাল?" নিত্য গোপাল হেসে জবাব দেয়, "রাজামশাই, আপনারও তো দরকার জয়! আমি না খাটলে, ফসল উঠবে কই? রাজ্য জয়ের পেছনে, লুকিয়ে আছে গরিবের ক্ষয়।" রাজা চোখ লাল করে গর্জে ওঠে, "তোদের রক্তে নয় মোর কপাল! আমি ভাগ্যবান, রাজার মতোই মোর চাল— তোদের মতো সাত কপাল না, আমার একটাই রাজকপাল!" নিত্য গোপাল মাথা নিচু করে বলে, "রাজা মশাই, ভাগ্য কারো এক, কারো দুই নয়, আছে শুধু সময়ের খেলা—একালের পরে আসে সেকাল! টাকার ঢেউয়ে সুখ আসে না, বুকের শান্তিতেই তো প্রকৃত কপাল!" রাজা হাসে, রঙ্গ করে— "বোকা গোপাল! সুখ তো আমার রাজপ্রাসাদে! তোর জীবনে কেবল হাহাকার, আর আমার প্রাসাদে সুখের পাহাড়!" নিত্য গোপাল এবার চোখ তুলে চায়— "রাজা মশাই, সুখ যার ভেতরে, সে-ই রাজা হয়! স্রষ্টা একদিন সবাইকে সমান করে দেয়— সেই দিন রাজাও ফকির হয়! তখনই বোঝা যাবে কার সত...

আমি আছি সবার মাঝে

ছবি
আমি আছি সবার মাঝে আমি আছি সবার মাঝে। সকালবেলায় যখন শহর ঘুম ঘুম চোখ মেলে, আমি হাঁটি মানুষের মুখের ভিড়ে। সন্ধ্যায় যখন সবাই ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফেরে, আমি দাঁড়িয়ে থাকি সেইসব মুখগুলোর পাশে— যাদের ঘরে আলো জ্বলে না, যারা ভালোবাসা বোঝে, অথচ ভালোবাসা পায় না। আমি দল বুঝি না, জাত বুঝি না, আমি শুধু মানুষ বুঝি। আমি কারও ধর্ম দেখি না, দেখি তার চোখে থাকা অশ্রু। আমি কারও পরিচয় জিজ্ঞেস করি না, জিজ্ঞেস করি— ‘তোমার কিছু লাগবে?’ দুঃখ পাই যখন কারো কান্না শুনি। মনে হয় যদি পারতাম, সেই কান্নাকে মুছে দিতে। অর্থ নেই হাতে, কিন্তু থাকলে আমি এক মুহূর্ত দেরি করতাম না। আমি দিতে চাইতাম, খোলা হাতে— আশ্রয়হীনকে আশ্রয়, ক্ষুধার্তকে খাদ্য, ক্লান্ত পথিককে একটু পানি, বৃদ্ধকে একটু সাহচর্য। কেউ যখন চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তার ধারে, আমি বুঝি, সে কোনো কিছু বলার অপেক্ষায় আছে। একটা ভালোবাসার শব্দ, একটা নির্ভরতার স্পর্শ— অনেক সময় সেটাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। আমি চাই না বিখ্যাত হতে, চাই না বড় কিছু হত...

এইতো জীবন

ছবি
এইতো জীবন — এক আক্ষেপ, এক উপলব্ধি জীবন বেশি সময়তো নয়, যতটুকুই সময়, অনেক সময় হয় অপচয় কতো জয়, কতো ক্ষয়, কতো ভয় আশা-নিরাশার দোলাচালে বেঁচে রয় সময় ফুরিয়ে গেলে চলে যেতে হয়। জীবন বেশি সময়তো নয়।। জীবন বেশি সময়তো নয়, খুবই অল্প সময়, চাওয়া-পাওয়ার জয়-পরাজয় প্রেম-বিয়ে ভালোবাসাও তো হয় কেউ ব্যর্থ, সফলতায় জীবন মধুময় সময় ফুরোলে সবকিছুই স্মৃতি হয়ে রয়। জীবন বেশি সময়তো নয়।। 🖊️ কবি: নিতাই বাবু ✍️ লেখক পরিচিতি: নিতাই বাবু—(মূল নাম: নিতাই চন্দ্র পাল) একজন চিন্তাশীল কবি, ব্লগার ও সমাজ-মনস্ক লেখক। জন্ম ১৯৬৩ সালের জুন মাসে, বাংলাদেশের এক প্রাকৃতিক শোভাময় গ্রামে—নোয়াখালীর মহতাবপুরে। তাঁর শৈশব কেটেছে মুক্তিযুদ্ধের ছায়া ও দারিদ্র্যের বাস্তবতায়, যা তাঁর লেখায় গভীর জীবনবোধ ও সংবেদনশীলতার ছাপ রেখে গেছে। তিনি bdnews24 ব্লগের পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্লগার, লেখেন মানবিকতা, শহর-জীবন, নদী-সংস্কৃতি, এবং নান্দনিক সমাজবোধ নিয়ে। তাঁর কবিতায় ফুটে ওঠে সময়ের ক্ষণস্থায়িত্ব, ভালোবাসা, অপচয়, বেদনা এবং আশা-নিরাশার দোলাচল। নিতাই বাবুর লেখনী সরল অথচ হৃদয়গ্রাহী—যেখানে পাঠক খ...

পৃথিবীটা গোল

ছবি
🌍 পৃথিবীটা গোল পৃথিবীটা গোল, তাইতো এতো হট্টগোল। চারদিকে চিৎকার, কান্নার রোল, দেশে দশে বাজছে যুদ্ধের ডামাডোল! পৃথিবীটা গোলাকার, তাইতো দেখি চারদিকে হাহাকার। আশ্রয়হীনের আর্তনাদ, ক্ষুধার্তের চিৎকার, স্বদেশহারা শরণার্থীদের বুকফাটা আর্তচিৎকার! পৃথিবীটা ঘূর্ণায়মান, তবু কেন থেমে যায় মানবতার গান? বুকের ভিতর জমে ওঠে শত অভিমান, শান্তির নামে চলে রক্তাক্ত অভিযান। পৃথিবীটা ঘোরে, তবু বাঁচে না কাতর মায়ের চোখের কোণে ঘোরে। ক্ষমতার লোভে গড়ে বন্দুকের পাহাড় চূড়ে, অভাগাদের স্বপ্ন ভেঙে পড়ে মৃত্যু কবরের গহ্বরে। পৃথিবীটা ঘোরে ঠিকই, তবু হৃদয় যেন চিরদিনই অধিকারহীন একদিক! তবু কিছু শিশু আজও গায় নতুন দিনের সঙ্গীত, ভালোবাসা আর মানবতা হোক এই ধরণীর একমাত্র ঐশ্বরিক শক্তি চিরস্থায়ী নীত! ✍️ নিতাই বাবু পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্লগার, কবি ও সমাজসচেতন লেখক। bdnews24 ব্লগ -এ ‘নিতাই বাবু’ নামে লেখালেখি করেন বহু বছর ধরে। তাঁর লেখায় উঠে আসে শৈশব, গ্রামীণ জীবন, নারায়ণগঞ্জ শহর ও শীতলক্ষ্যার আত্মজ স্মৃতি...