পোস্টগুলি

বাংলা_সাহিত্য লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শীতলক্ষ্যা নদী – এক নদীর আত্মকথা

ছবি
  🌊 শীতলক্ষ্যা নদী – এক নদীর আত্মকথা শীতলক্ষ্যা, তুমি নীরব এক সাক্ষী, কালের কণ্ঠে বাজে তোমার গল্প-গান। ঢেউয়ের পর ঢেউয়ে শোনা যায় শত কথা— সুখ-দুঃখ, প্রেম-বিরহ, হাহাকার আর প্রাণ। তোমার তীরে গড়ে ওঠে শিল্পের শহর, কলের ধোঁয়ায় আকাশ ঝাপসা হলেও— প্রাণে তবুও ছড়িয়ে থাকে জীবন-উচ্ছ্বাস, চলার ছন্দ, শ্রমের গান, ভালোবাসা ঢেউ। নাবিকেরা গায় সুরে সুরে সারি গান, জেলেরা ফেলে জাল, গলায় আশার সুর। তোমার বুকে খেলে যায় পালতোলা নৌকা, স্টিমারের ভেঁপু যেন দূরের স্বপ্নদূত। তুমি কভু শান্ত, কভু হয়ে ওঠো উত্তাল, তোমার স্রোত যেন হৃদয়ের হাহাকার। তুমি শুধু নদী নও, তুমি ইতিহাস, তুমি সংস্কৃতির প্রাণ, জনপদের কাব্যধ্বনি। তোমার জলে মিশে আছে ঘাম আর আশা, স্বপ্ন আর কান্না, আত্মা আর ইতিহাস। তুমি অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য এক কণ্ঠস্বর— বুকে তোমার বাজে জীবনের আর্তনাদ। শীতলক্ষ্যা, প্রিয় নদী, বয়ে চলো চিরকাল, তোমার শীতল পরশে থাকুক শান্তি ও ছায়া। তোমার কুল কুল ধ্বনি হোক ঘুমপাড়ানি গান, তোমার জলে জেগে থাকুক আমাদের প্রাণ। ✍️ কবি:নিতাই বাবু| উৎসর্গ: প্রিয় শীতলক্ষ্যা নদী | ...

কবিতা: সংজ্ঞা, প্রকারভেদ, ছন্দ, পঙক্তি, চরণ, অলংকার ও রূপকের ব্যাখ্যা

ছবি
  📜 কবিতা: সংজ্ঞা, প্রকারভেদ, ছন্দ, পঙক্তি, চরণ, অলংকার ও রূপক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাখা হলো কবিতা । শব্দের ছন্দোময় বিন্যাস, ভাবপ্রবণতা ও অলংকারের সাহায্যে কবিতা হৃদয়কে স্পর্শ করে। নিচে কবিতার মূল উপাদান ও সংজ্ঞাগুলো বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো: ✒️ কবিতার সংজ্ঞা: কবিতা হলো এক বিশেষ সাহিত্যিক রচনা, যেখানে ছন্দ, রূপক, অলংকার, কল্পনা ও আবেগ মিলিয়ে শব্দের সুষম বিন্যাসে সৌন্দর্য ও ভাব প্রকাশ পায়। সংজ্ঞা: কবিতা হলো ভাব, কল্পনা ও সৃজনশীল শব্দচয়নের মাধ্যমে গঠিত ছন্দময় সাহিত্য। 📚 কবিতা কত প্রকার? কবিতা প্রধানত দুই প্রকার: পদ্য কবিতা: নির্দিষ্ট ছন্দ ও অন্ত্যমিলযুক্ত কবিতা। গদ্য কবিতা: ছন্দ ও অন্ত্যমিলবিহীন, কিন্তু ভাব ও কল্পনায় পূর্ণ কবিতা। 📌 কবিতার পঙক্তি (Pongkti) পঙক্তি হলো কবিতার প্রতিটি লাইন বা বাক্য। এটি কবিতার মৌলিক একক। উদাহরণ: “ক্ষণে ক্ষণে তোমায় পড়ে মনে” ← এটি একটি পঙক্তি। 📌 কবিতার চরণ (Charan) চরণ হলো কবিতার স্তবকের উপভাগ বা অংশবিশেষ। সাধারণত দুই চরণে একটি স্তবক গঠিত হয়। উদাহরণ: “তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম” ← প্রথম চরণ “নব আনন্...

আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি

ছবি
  🕊️ আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি — নিতাই বাবু আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি— না, সিনেমার পর্দায় নয়, ইতিহাস বইয়ের পাতায় নয়, আমি নিজ চোখে দেখেছি আগুনের নিচে পোড়া মাটি, দেখেছি কাঁপতে থাকা শিশুর চোখে পিতৃহীন বিস্ময়, দেখেছি বধ্যভূমির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া নীরব জনপদ। আমি স্বাধীনতা দেখেছি— রক্তের বিনিময়ে কেনা সেই একটুকরো সকাল, যেখানে সূর্য উঠেছিল এক নতুন পতাকা হাতে। আমি দেখেছি, কীভাবে এক জাতি তার অস্তিত্বের জন্য লড়েছিল আগুন আর বুলেটের বিপরীতে দাঁড়িয়ে। আমি দেখেছি বাংলার মা-বোনদের আর্তনাদ, দেখেছি টান পড়ে যাওয়া শাড়ির ভাঁজে একটা স্বাধীন দেশের জেদ আটকে আছে। সেই কান্নার শব্দ আজও বাতাসে বেজে ওঠে, শুধু আমরা কান পেতে শুনি না। আমি দেখেছি লক্ষ লক্ষ মানুষকে জীবন দিতে, তাদের চোখের শেষ দৃষ্টিতে ভেসে উঠেছিল একটি মুক্ত ভূখণ্ডের স্বপ্ন— যেখানে কেউ আর পরাধীন হবে না, কেউ আর মুখ বুজে কাঁদবে না। এই আমি, এক ক্ষুদ্র মানুষ, একটি বড় ইতিহাসের নীরব সাক্ষী। আমি বয়ে বেড়াই সেই অস্থিচূর্ণ করা অতীত, আর বুকের ভিতর আজও জ্বলে— এক অসমাপ্ত বিজয়ের আগুন। ✒️ নিতাই বাবু পুরস্কারপ্...

বিশ্বাস, প্রশ্ন ও অনুভব—গদ্য কবিতা সসিরিজ (পূর্ব-১-১২)

ছবি
  📚 পর্যালোচনা: গদ্য কবিতা সিরিজ – বিশ্বাস, প্রশ্ন ও অনুভব 🌿 ধর্ম নিয়ে যখন বিশ্ব উত্তাল, তখন বাংলা সাহিত্যে এমন একটি গদ্য কবিতা সিরিজ সত্যিই সাহসী এবং আত্মিক এক প্রয়াস। “ঈশ্বর কি বিভক্ত হন?” দিয়ে শুরু এই সিরিজ আমাদের ঈশ্বর, ধর্ম, ভাষা ও ভালোবাসার চিরন্তন দ্বন্দ্বকে তুলে ধরেছে। পরবর্তীতে “তোমার ঈশ্বর, আমার ঈশ্বর” , “আমি ঈশ্বরকে কাছে ডাকলাম” অথবা “যেদিন ঈশ্বর কাঁদলেন” — প্রতিটি পর্বে মানবতার সুরই মূল সুর হয়ে ওঠে। 🪔 এই সিরিজ শুধু কবিতা নয়, এক এক পর্ব যেন একেকটি আত্মজিজ্ঞাসা। যেখানে ঈশ্বরকে দেখা হয় নিখাদ মানুষের চোখে— কোনো নির্দিষ্ট ধর্মগ্রন্থের ফ্রেমে নয়, বরং অনুভবে, চোখের জলে, শিশুর হাসিতে, প্রেমিকের স্নেহে। 🔍 সিরিজের মূল দর্শন: ❖ ঈশ্বর কোনো একক ধর্মের নয়—তিনি সকলের। ❖ ভালোবাসাই প্রকৃত ধর্ম, ঘৃণা নয়। ❖ প্রার্থনা মুখের শব্দ নয়, হৃদয়ের ভাষা। ❖ ঈশ্বরকে পাওয়া যায় নিঃশব্দ আহ্বানে, প্রতিদিনের মানুষের ভিতর। 📘 পর্বসমূহ: 👉 পর্ব-১: ঈশ্বর কি বিভক্ত হন? 👉 পর্ব-২: তোমার ঈশ্বর, আমার ঈশ্বর 👉 পর্ব-৩: হৃদয়ে ধর্...

আমি ঈশ্বরকে কাছে ডাকলাম—গদ্য কবিতা (পর্ব-১১)

ছবি
  📜 গদ্য কবিতা: আমি ঈশ্বরকে কাছে ডাকলাম আমি দাঁড়িয়েছিলাম এক নীরব বিকেলে, যখন পাখিরাও আর গান গায় না, আর শহরের কোলাহলও ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ঠিক সেই মুহূর্তে আমি ঈশ্বরকে কাছে ডাকলাম। কোনো আয়াত, কোনো মন্ত্র, কোনো ঘন্টাধ্বনি ছাড়াই— শুধু মনের নিঃশব্দ ভাষায় বললাম, “তুমি কি একটুখানি বসবে আমার পাশে?” চারদিকে ছায়া নেমে এলো, আর বাতাস নরম হয়ে এল গাল ছুঁয়ে। আমি বুঝলাম— তিনি এসেছেন। তিনি কিছু বলেননি, কিন্তু আমি শুনতে পেলাম হৃদয়ের গভীরে এক অনন্ত সাহসের শব্দ: “তোমার কান্নাও আমার প্রার্থনা, তোমার ভালোবাসাও আমার পূজা।” আমি ঈশ্বরকে বললাম— “তুমি কি সব ধর্মের দেয়াল পেরিয়ে আসতে পারো?” তিনি মুচকি হেসে বললেন— “তোমরা যদি ভালোবাসতে জানো, তবে আমিও পারি।” সেই দিন আমি ঈশ্বরকে কাছ থেকে দেখিনি, কিন্তু আমি বুঝেছি— ঈশ্বর দূরের নয়, খুব নিজের । কেবল ডাকলেই তিনি নেমে আসেন— নাম ছাড়াই, ধর্ম ছাড়াই, নিঃশব্দে। – পর্ব-১১, গদ্য কবিতা সিরিজ নিতাই বাবু পুরস্কারপ্র...

আসলে ভবে যেতে হবে

ছবি
  আসলে ভবে যেতে হবে পাঠিয়েছে ভবে আমায় একাধিক শর্ত দিয়ে, তারমধ্যে আছে তিনটি জন্ম মৃত্যু আর বিয়ে। ভবে এসে রইলাম মজে ভবের মায়াজালে, হেলায় হেলায় সময় শেষ জনম গেলো বিফলে। আসলে ভবে যেতে হবে ভবের মায়া ছেড়ে, সেই চিন্তার ধার ধারি না চলি হেলা করে। এই দুনিয়ায় যা আছে সবকিছুই অনিশ্চিত, শাস্ত্রে আছে লেখা শুধু জীবের মৃত্যুই নিশ্চিত। তবুও নেই চিন্তা আমার নিজের ধান্ধায় চলি, আমিই সেরা আমিই সব লোকসমাজে বলি। যতই বলি আমার আমার আমার নেই কিছু, যতই করি বাহাদুরি যম আছে আমার পিছু। হই-না যতো মস্তবড় বাহাদুর রাজা জমিদার, যেতে হবে সবই ছেড়ে এই মায়ার ভবসংসার। পড়ে রবে ধনসম্পদ টাকাকড়ি বিলাসবহুল বাড়ি, সবই থাকবে ঠিকঠাক শুধু আমিই দিবো পাড়ি। থাকবে না কিছুই দেহের শক্তি জারিজুরি, মৃত্যুতেই হবে শেষ যতো শক্তির বাহাদুরি। মৃত্যুর দিনক্ষণ লেখা আছে যমদূতের কাছে, পালাইবার পথ নাই যে যম থাকবে পাছে। যেখানেই থাকি আমি যমে খুঁজে বের করবে, ঠিক সময়মত যমদূত আমার; সামনে দাঁড়াবে। যমদূতের কাছে নেই টাকা পয়সার কারবার, মৃত্যুর স্বাদ করতে হবে বরণ জগতের সবার। ...