পোস্টগুলি

গল্প লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ব্যর্থ জীবনের গল্প

ছবি
  গল্প: ব্যর্থ জীবন বিকেলটা ছিল অদ্ভুত রকমের নীরব। সূর্যটা ছিল যেন একটু তাড়াহুড়োয়, নরম আলোটা ঘরের মেঝেতে হেলে পড়ছিল ধীরে ধীরে। সোহেল উদাস চোখে জানালার বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিল। বাড়ির পাশের পুরনো আমগাছটার পাতার ফাঁকে ফাঁকে আলো এসে পড়ছে তার মুখে, আর তাতেই যেন বেদনার রংটা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। ৬৩ বছর বয়স— এই জীবনে কী পেল সে? একটা চাকরি ছিল, তাও মাঝখানেই ছেড়ে দিতে হয়েছিল পারিবারিক চাপে। ব্যবসা শুরু করেছিল—হঠাৎ এক বন্ধু বিশ্বাসঘাতকতা করল। স্ত্রীকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল, আজ সেই স্ত্রী-ই যেন প্রতিদিন মনে করিয়ে দেয়— সে ব্যর্থ। সোহেল ধীরে ধীরে উঠলো, চুপচাপ আয়নার সামনে দাঁড়ালো। চুলে পাক ধরেছে অনেক আগেই, চোখে কালি, মুখে গাঢ় ক্লান্তি। নিজেকে দেখে তার মনে হলো, “এই আমি কি সেই সোহেল, যে একদিন স্বপ্ন দেখত—জীবনের রং পাল্টে দেবে?” সে জানালার পাশে বসে গেল। পিঠে একটা পুরনো চাদর জড়িয়ে, এক কাপ কড়া লাল চা হাতে নিয়ে ভাবতে লাগলো— “কেন এসেছিলাম এই পৃথিবীতে?” “শুধু ব্যর্থতা দেখার জন্য?” স্মৃতিগুলো একে একে ভিড় করতে লাগল ...

আমার শৈশবের বন্ধু— শীতলক্ষ্যা

ছবি
🌊 আমার শৈশবের বন্ধু – শীতলক্ষ্যা 💙 নদী মানেই শুধু পানি নয়... নদী মানে এক বুক স্মৃতি, একমুঠো স্বপ্ন, একটুকরো শৈশব। স্বাধীনতার পর, বন্দরে আসার শুরুতেই আমার নতুন জীবনের গল্পে শীতলক্ষ্যা ছিল আমার প্রতিদিনের সঙ্গী। সকালবেলা স্কুলে যাওয়ার পথে তার কলকল শব্দ, দুপুরে ঘাটের ছেলেদের খেলাধুলা, আর বিকেলে নৌকার হালকা দুলুনিতে স্বপ্ন দেখা—এসব কিছুই বাঁধা ছিল এই নদীর সঙ্গে। কিন্তু আজ... আমার সেই প্রিয় বন্ধুটা আর আগের মতো নেই। কলকারখানার দূষণ, বেদখল আর লোভের আগ্রাসনে সে যেন দম বন্ধ হয়ে আসা এক নীরব আত্মা। এই নদীর বুকেই আমি ছুঁয়েছিলাম জীবনের প্রথম স্বাধীনতা। আজ সেই নদীর বুক চিড়ে বয়ে চলে বিষ ও বিসর্জনের ধারা। তবুও স্মৃতির ভেতর সে এখনো আছে। আমি আজও শুনতে পাই সেই ঢেউয়ের ডাক। — নিতাই বাবু

বেশি বুদ্ধি কুঁকড়িমুকড়ি মাধ্যম বুদ্ধি চিত্তরং

ছবি
          ব্যাঙের   ঈশ্বর ভাবনা বুদ্ধি পানির মধ্যে ধপ্পরং! বেশি বুদ্ধি কুঁকড়িমুকড়ি, মাধ্যম বুদ্ধি চিত্তরং, ঈশ্বর ভাবনা বুদ্ধি পানির মধ্যে ধপ্পরং। উপরোল্লিখিত লেখাভপড়ে অনেকেই ভাবছেন, কুঁকড়িমুকড়ি, চিত্তরং, ধপ্পরং এগুলো আবার কী? হ্যা পাঠক, এই তিনটে শব্দের অর্থ মাহাত্ম্য জানতে আপনাকে পোস্টের লেখার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। তা হলেই উপর বর্ণিত শব্দার্থ বুঝতে পারবেন। তার আগে বলে রাখা ভালো যে, উপর বর্ণিত তিনটি শব্দের অর্থ বোঝাতে হলে একটা গল্পের মাধ্যমে বুঝাতে হবে। তো চলুন, গল্পটা শুরু করা যাক↓↓↓ একজন সরকারি চাকরিজীবীর সন্তান বলতে একটি ছেলেই ছিলো । একটি মেয়ের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে অনেক বাসনা করেছিল, কিন্তু মেয়ে আর তাদের ভাগ্যে জোটেনি। বৃদ্ধ বয়সে চাকরিজীবী লোকটা মারা গেলো। মৃতব্যক্তির একমাত্র ছেলে ওয়ারিশ সূত্রে তার স্থাবর অস্থাবর টাকা-পয়সার মালিক হলো। সরকারি চাকরিজীবী লোকটা মারা যাওয়ার পর তার একমাত্র ছেলেটা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বাড়ির সব  দলিলপত্র বুঝে নিলো। বিরাট বড় বাড়ি! বাড়ি ছাড়াও চাষাবাদের জমিও আছে অনেক! বাড়ির চার-পাশেই চাষাবাদের ...

কুকুরের নাম ধলু ও তার ভালোবাসার গল্প

ছবি
                      ভালোবাসার কুকুর ধলু ছোটবেলা থেকেই রমেশের খুব শখ, কুকুর-বিড়াল পোষার। কিন্তু নিজের পৈতৃক ভিটেমাটি না থাকার কারণে এসব মনের শখ তার ভেস্তে যায়। তবুও রাস্তা-ঘাটে কোনও কুকুর-বিড়াল দেখলে রমেশ কাছে গিয়ে ওদের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে। রমেশ ছোটখাটো একটা চাকরি করে। বেতন যৎসামান্য! তবুও সবসময়ই ওদের কাছে ডাকে, খাবার কিনে দেয়, খাওয়ায়। এভাবেই রাস্তা-ঘাটে অযত্নে-অবহেলায় থাকা বেওয়ারিশ কুকুর- বিড়াল ভালোবেসে রমেশ দিন কাটাচ্ছিল। কিন্তু নিজের বাসায় রেখে মনোমত পোষতে পারছিল না। তারপরও মনের আশা কখনও বাদ দেয় না।  রমেশ প্রতিদিন নিজের কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার সময় ছোট্ট একটা কুকুরের বাচ্চাকে ফলো করতো। কুকুরের বাচ্চাটার গায়ের রং ছিলো ধবধবে সাদার মোঝে হালকা লাল খয়েরী। দেখতে খবই সুন্দর ছিলো বিধায়, রমেশ কুকুরের বাচ্চাটাকে খুবই পছন্দ করতো। তার কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে থাকা দোকান থেকে দু'একটা বিস্কুট কিনে ভেঙে ভেঙে কুকুরের বাচ্চাকে খাওয়াতো। সাথে কুকুরের বাচ্চার মা কুকুরটাকেও খেতে দিতো।  এভাবে কেটে গেলো প্রায় সপ...