পোস্টগুলি

গদ্য কবিতা লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বিশ্বাসঘাতক

ছবি
  🖋️ বিশ্বাসঘাতক (একটি গদ্য কবিতা) তাকে আমি বিশ্বাস করেছিলাম। না, শুধু বিশ্বাস নয়— নিজের ভেতরের সব আলো, সব অন্ধকার, সবটুকু নির্ভরতা উজাড় করে দিয়েছিলাম। সে ছিল আমার জীবনের একমাত্র সেই মানুষ, যার সামনে দাঁড়িয়ে আমি নিজের দুর্বলতাগুলো খুলে দেখাতে পারতাম, যার ছায়ায় আমি ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়তে চেয়েছিলাম। সে বলেছিল— "আমি আছি, সবসময় থাকব।" আর আমি, নির্বোধের মতো, চোখ বুজে সেই কথাকে রেখেছিলাম হৃদয়ের ঘরে। ভেবেছিলাম, এই 'থাকা'টাই চিরকাল চলবে, এই 'থাকা'র মানে বিশ্বাস, ভালোবাসা, বন্ধুত্ব— সব একসাথে। কিন্তু একদিন, হঠাৎ করেই, সে বদলে গেল। বদলানোটা শব্দের মতো নিঃশব্দ ছিল না— তা ছিল একটা বিস্ফোরণ, যেখানে আমার স্বপ্নগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে আকাশে উড়ে গেল, আর আমি নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম শুধু। সে চলে গেল, কিন্তু তার রেখে যাওয়া ছায়া আজও রয়ে গেছে আমার ভেতরে— বিশ্বাসের কবর হয়ে। আমি যখন শুনি সে অন্য কারো পাশে হাসছে, যখন দেখি সে আমার গল্প অন্য কাউকে শোনাচ্ছে— তখন আমি বুঝি, বিশ্বাসঘাতকতা কেবল প্রতারণা নয়, এ ...

যদি সময় না পাই

ছবি
  ✍️ গদ্য কবিতা: "যদি সময় না পাই" লেখক: নিতাই বাবু যদি কোনো একদিন সময় না পাই, বন্ধু… তখন আমার না-বলা কথাগুলো পড়ে নিও চোখ বুজে। আমি তোমার জন্যই ছিলাম… তোমার প্রতিটি কষ্ট আমি বুঝতে চেয়েছি, তবুও হয়তো সময় দিতে পারিনি। তোমার চোখের জল আমি দেখিনি, তবে অনুভব করেছি... তোমার একা রাতের দীর্ঘশ্বাস আমার বুকের ভেতর কাঁপন তুলেছে! যদি কোনো একদিন চলে যাই নিরুদ্দেশে— কোনো চিঠি, কোনো বার্তা, কোনো ঘোষণা ছাড়াই… তবে জানবে—এমন নয় যে ভুলে গিয়েছি, বরং সবটুকু মন দিয়েই চেয়েছিলাম— তোমার পাশে দাঁড়াতে, তোমার ছায়া হতে। বন্ধু, তুমি জানো না, এই পৃথিবীর শত ব্যস্ততার ভিড়ে আমি কীভাবে তোমার নামটা বুকের ভেতর সযত্নে রেখে চলেছি! যদি কখনো না দেখা হয়, তবুও আমার সেই চেনা হাসিটা মনে রেখো, আমার চুপচাপ ভালোবাসাটাকে বিশ্বাস রেখো… যদি সময় না পাই বন্ধু, তবে তুমি সময় নিয়ে পড়ে নিও এই না-বলা কবিতাটা, তোমার নামেই লেখা — ভালোবাসার সবচেয়ে নিঃশব্দ অথচ সবচেয়ে গভীর পঙ্‌ক্তিগুলো। ❤️ "ভালোবাসা প্রকাশে সময় লাগেনা, কেবল সাহসটাই দরকার..." 📚 অন্যান্য টিউটোরিয়াল সিরিজ: 👉 📸 ফটোগ্রাফি টিউটো...

গদ্য কবিতা: এখনো বেঁচে আছি…

ছবি
  ✍️ গদ্য কবিতা: "এখনো বেঁচে আছি…" লেখক: নিতাই বাবু আমি এখনো বেঁচে আছি… কারণ, এখনও অনেক কিছু দেখা বাকি। দেখেছি আগুনে পুড়তে বাংলার মাটি, রক্তে ভেসে যেতে সরু খাল আর কাঁচা পথ। দেখেছি মা-বোনের আর্তনাদে কেঁপে উঠতে আকাশ, সেই আকাশ এখনো মাথার ওপর। আমি ছিলাম ছোট, তবুও চোখে আঁকা সব দৃশ্য— নির্মমতা, নির্যাতন, ভয়ের ছায়া, বুকে গেঁথে আছে এখনো। আজ দেখি আরেক রূপ, দ্রৌপদীর বস্ত্র হরণ আজও চলে... তফাৎ শুধু—আজ হানাদার বিদেশি নয়, আজকের রক্তচক্ষু আমাদেরই কাঁধে ব্যাজধারী! আজ যারা চালায় গুলি, ফাটায় বোমা, তারা আমাদেরই রক্ত। আজ যাদের হাতে পঙ্গু হয় যুবক, তাদের ডান হাতে জাতীয় পতাকা, বাম হাতে রাইফেল! কী নিদারুণ ব্যথা! যে স্বাধীনতার জন্য ত্রিশ লক্ষ প্রাণ, লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম উৎসর্গ, আজ সেই দেশের বুকে গর্জে ওঠে রাষ্ট্রীয় বর্বরতা। আরো কষ্ট হয় যখন দেখি— আমাদেরই পাশের বাড়ির লোকটা, দুধেভাতে বড় হওয়া ছেলেটা, হিংসার চোখে মিছিল দেখে, চুপচাপ সহযোগিতা করে দমনযন্ত্রকে। ঠিক যেমন ১৯৭১-এ— আমাদেরই কিছু মানুষ হয়েছিলো সহিংসতার বন্ধু। তখন শত্রু ছিল বাইরে, এখন শত্রু আমাদের ভিতরে। দেখেছি ২০২৪ সালে ...

আমি আছি সবার মাঝে

ছবি
আমি আছি সবার মাঝে আমি আছি সবার মাঝে। সকালবেলায় যখন শহর ঘুম ঘুম চোখ মেলে, আমি হাঁটি মানুষের মুখের ভিড়ে। সন্ধ্যায় যখন সবাই ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফেরে, আমি দাঁড়িয়ে থাকি সেইসব মুখগুলোর পাশে— যাদের ঘরে আলো জ্বলে না, যারা ভালোবাসা বোঝে, অথচ ভালোবাসা পায় না। আমি দল বুঝি না, জাত বুঝি না, আমি শুধু মানুষ বুঝি। আমি কারও ধর্ম দেখি না, দেখি তার চোখে থাকা অশ্রু। আমি কারও পরিচয় জিজ্ঞেস করি না, জিজ্ঞেস করি— ‘তোমার কিছু লাগবে?’ দুঃখ পাই যখন কারো কান্না শুনি। মনে হয় যদি পারতাম, সেই কান্নাকে মুছে দিতে। অর্থ নেই হাতে, কিন্তু থাকলে আমি এক মুহূর্ত দেরি করতাম না। আমি দিতে চাইতাম, খোলা হাতে— আশ্রয়হীনকে আশ্রয়, ক্ষুধার্তকে খাদ্য, ক্লান্ত পথিককে একটু পানি, বৃদ্ধকে একটু সাহচর্য। কেউ যখন চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তার ধারে, আমি বুঝি, সে কোনো কিছু বলার অপেক্ষায় আছে। একটা ভালোবাসার শব্দ, একটা নির্ভরতার স্পর্শ— অনেক সময় সেটাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। আমি চাই না বিখ্যাত হতে, চাই না বড় কিছু হত...