পোস্টগুলি

নোয়াখালী লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মা নাই যার, সংসার অরণ্য তার

ছবি
মা নাই যার সংসার অরণ্য তার — নোয়াখালীর মাহাতাবপুরের মায়ের স্মরণে মা ছিল আমার, এক মাটির প্রতিমা, নোয়াখালীর মাহাতাবপুর, বজরার কাছে ছিল তার ভূমিকা। চৌমুহনী থানার প্রান্তে, শান্ত এক হিন্দু পরিবারে, ছয় সন্তানের জননী হয়ে, আলো জ্বেলেছিলেন ঘরে ঘরে। তার কপালের সিঁদুর যেন ছিল সূর্যোদয়ের প্রতিচ্ছবি, তার আঁচলে ছিল গন্ধ, ধানভাঙা বিকেলের ছবি। তিনি ছিলেন ঘরের শ্রুতি, প্রতিটি শিশুর মুখে হাসি, জীবনের কষ্টকে ঢেকে রাখতেন মায়াবী ভালবাসায় ভাসি। ভোরে উঠেই হাঁড়িতে চড়াতেন ভাত, শীতের সকালে কাঁপতে কাঁপতে দিতেন গায়ে হাত। ঈশান কোণে প্রদীপ জ্বলত, তারই প্রার্থনায়, আমার ছোট ছোট দুঃখগুলো গলে যেত মায়ের ছায়ায়। আজ তিনি নেই... ঘরের উঠোনে আর তার পায়ের চিহ্ন পড়ে না, ভাতের হাঁড়িতে তার হাতের গন্ধ আর জাগে না। আলো জ্বালানো সেই চোখজোড়া এখন নিভে গেছে, শুধু স্মৃতির ঝর্নাধারায় মন আমার ভেসে চলে, ক্লান্ত, অনিশ্চিত পথ বেয়ে। দরজায় আজো কাঁপে হাওয়া, কিন্তু সে তো মায়ের নয়, দেয়ালে আজো ঝোলে ছবিখানি, নিঃশব্দে কেবল কাঁদে অশ্রু-ঢেউয়ে। তার ডাকা নামে কেউ আর ডাকেন...

স্বাধীনতা-পরবর্তী: নোয়াখালী থেকে নারায়ণগঞ্জ

ছবি
   স্বাধীনতা-পরবর্তী: নোয়াখালী থেকে নারায়ণগঞ্জ — এক জীবন্ত দলিল ✍️ নিতাই বাবু) (জন্ম: ৮ জুন ১৯৬৩, মাহাতাবপুর, নোয়াখালী | বর্তমান নিবাস: নারায়ণগঞ্জ) 🌾 মাহাতাবপুর: আমার শৈশবের স্বর্গভূমি আমার জন্ম ১৯৬৩ সালের ৮ই জুন, নোয়াখালীর চৌমুহনী থানার অন্তর্গত বজরা রেলস্টেশনের পাশের গ্রাম মাহাতাবপুরে। আমাদের পরিবার ছিল গ্রামের মধ্যে অন্যতম প্রতিষ্ঠিত ও সম্মানিত হিন্দু পরিবার। আমার শৈশব যেন ছিল এক নির্মল সময়ের রঙিন ক্যানভাস — ট্রেনের হুইসেল, পাশের খালের জেলেদের মাছ ধরা, আম-কাঁঠালের বাগানে খেলাধুলা, আর সন্ধ্যায় হারিকেনের আলোয় গল্পে মেতে ওঠা। 🔥 একাত্তরের আগুনে আমাদের উঠোন ১৯৭১ সালে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। আমার জ্যাঠা ছিলেন পাকিস্তান আমলে পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করা একজন দেশপ্রেমিক মানুষ। তাঁর অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বে আমাদের বাড়ি হয়ে ওঠে মুক্তিবাহিনীর এক গোপন ঘাঁটি। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধারা এসে জড়ো হতেন, আমার জ্যাঠার সঙ্গে যুদ্ধের পরিকল্পনা করতেন। অস্ত্রও আনা হতো গোপনে। শিশুরা দূরে থাকত, তবু টের পাওয়া যেত সবকিছু। ⚔️ স্বাধীনতা, কিন্তু শান্তি ন...

নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষার কিছু শব্দ

ছবি
বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ রয়েছে। ৮টি বিভাগে রয়েছে ৬৮ হাজার গ্রাম। এই ৬৮ গ্রামের মানুষ কিন্তু শুদ্ধ বাংলা ভাষায় কথা বলে না। শুদ্ধ বাংলা ভাষা যে বলতে পারে না, তা কিন্তু নয়। অনেকেই শুদ্ধ বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে। তারপরও যে যেই অঞ্চলের, সে সেই অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষাতেই কথা বলতে বেশি পছন্দ করে। কারণ মাটির টার আর মাতৃত্বের টান তো সবারই থাকে।  যেমন; যাদের জন্ম চট্টগ্রাম, তারা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষাতেই কথা বলতে পছন্দ করে। বরিশাল অঞ্চলের মানুষ বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। যদিও আমার বাপদাদার ভিটেমাটি নোয়াখালী। তবুও বর্তমানে আমি নারায়ণগঞ্জের মানুষ। কারণ আমি ছোটবেলা থেকেই নারায়ণগঞ্জে বসবাস করছি। তাই আমি নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে পছন্দ করি। আর যারা  নোয়াখালীর মানুষ, তারা তাদের মাতৃভাষা নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। তো আমি বাংলাদেশের গুটিকয়েক অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা কিছু জানি এবং কথাও বলতে পারি। অন্য অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা জানলেও, আমি অন্য অঞ্চলের ভাষা নিয়ে কিছু লিখছি না। আমি যেহেতু নোয়াখালীর সন্তান, তাই আমি নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষার কিছু শব্দের সাথে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিত...