পোস্টগুলি

ইতিহাস লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আদমজী জুট মিলস এর ইতিকথা ও বর্তমান আদমজী ইপিজেড

ছবি
  আদমজী জুট মিলস বা আদমজী পাটকল।  নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী আর আদমজী জুট বা আদমজী পাট-কলের নাম শোনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কোনও একসময় শীতলক্ষ্যা নদীর স্বচ্ছ পানির যেমন সুনাম ছিল, আদমজী জুট মিলস বা আদমজী পাট-কলের তার চেয়েও বেশি সুনাম ছিল।  কোনও একসময় এই শীতলক্ষ্যার স্বচ্ছ পানি ঔষধ তৈরির কাজে ব্যবহৃত হতো। আর আদমজী জুট মিলে তৈরি বিভিন্নরকম পাটজাত দ্রব্য রপ্তানি হতো সারা দুনিয়ায়।এটি ছিল এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ জুট মিলস বা পাটকল।  এই আদমজী জুট মিলস একসময় নারায়ণগঞ্জকে এনে দিয়েছিল প্রাচ্যের ডান্ডি উপাধি। আদমজী জুট মিলে ছিল প্রায় একলক্ষ লোকের কর্মসংস্থান। আদমজী জুটমিলে কর্মরত শ্রমিক ছিলো পাকিস্তানি অনেক মাড়োয়ারি। পাকিস্তানি মাড়োয়ারিদের পাশাপাশি বাঙালি শ্রমিকও ছিলো প্রায়ই সমানে-সমান।  এসব মাড়োয়ারি শ্রমিকরা মিল অভ্যন্তরে সপরিবারে বসবাস করতো। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে বর্তমানে অনেকেই তাদের পাকিস্তানি শরণার্থী বলে। বর্তমানে আদমজী জুট মিলস অভ্যন্তরে যেই জায়গায় মাড়োয়ারি শ্রমিকরা বসবাস করে, সেই জায়গার নাম শিমুলপাড়া বিহারি ক্যাম্প।  আদমজী জুট মিলস প...

ডিএনডি বাঁধের ইতিহাস ও বর্তমান ভবিষ্যত

ছবি
ডিএনডি বাঁধের বর্তমান লেক। ছবিটি বার্মাস্ট্যান্ড থেকে তোলা। প্রিয় পাঠক, আপনি জানেন কি ডিএনডি বাঁধের ইতিহাস?  এবং কেন-ই-বা এই বাঁধ তৈরি করেছিলো? আর কি-ই-বা উদ্দেশ্য ছিলো তৎকালীন সকারের? যদি আপনার জানা না থেকে, তো আমার এই লেখাটা শেষ পর্যন্ত পড়লে ডিএনডি বাঁধের ইতিহাস এবং বর্তমান হালহকিকত সবকিছু জানতে পারবেন, আশা করি। তো চলুন শুরু করা যাক! ডিএনডি'র সারমর্ম: ডি=ঢাকা, এন=নারায়ণগঞ্জ, ডি=ডেমর। মানে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও ডেমরা, এই তিন জায়গার কিছুকিছু অংশ জুড়ে ডিএনডি বাঁধ। যা, বর্তমান ঢাকা-৪ ও ৫ এবং নারায়ণগঞ্জ-৩ ও ৪ সংসদীয় আসন নিয়ে ডিএনডি বাঁধের অবস্থান। ডিএনডি বাঁধের ইতিহাস: জানা যায়, ১৯৬৬ সালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা এলাকার ৮ হাজার ৩শ ৪০ হেক্টর জমি নিয়ে ইরীগেশন প্রকল্প তৈরীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তৎকালিক পূর্ব পাকিস্তান সরকার। যা বাস্তবায়ন করা হয় ১৯৬৮ সালে।  নামকরণ করা হয় ডিএনডি বাঁধ। তৎকালীন সরকারের উদ্দেশ্য: তখনকার সময় শুধু ইরীধান চাষের জন্যই সরকার এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে তৎকালীন সরকারের ব্যয় হয়েছিল,২৩৩ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা। এর অভ্যন্তরে জমির পরিমাণ ...

শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কালের সাক্ষী হয়ে ভেসে আছে ভাসমান ডকইয়ার্ড

ছবি
ভাসমান ডকইয়ার্ড, বন্দর, চৌরাপাড়া, নারায়ণগঞ্জ।   শীতলক্ষ্যা একটি নদীর নাম। যা নারায়ণগঞ্জ শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলছে, যুগযুগ ধরে। স্বচ্ছ পানির জন্য সুনাম অর্জনকারী শীতলক্ষ্যা নদী বঙ্গদেশের সবার কাছেই পরিচিত। স্বচ্ছ পানির সুনাম বর্তমানে না থাকলেও, নদীর দুই পাড় নিয়ে সুখ্যাতি আজও অখ্যাত রয়ে গেছে।  শীতলক্ষ্যার দুই পাড়ে রয়েছে প্রচুর মিল-ইন্ডাস্টি, ব্যবসা বাণিজ্য সহ আরও অনেককিছু। এসব নিয়ে লিখে শেষ করা যায় না। তাই আর কিছু লিখলামও না। লিখতে চাই শীতলক্ষ্যা নদীর পানির উপরে ভেসে থাকা বি.আই.ডব্লিউ. টি.সি'র ভাসমান ডকইয়ার্ড নিয়ে। এই ভাসমান ডকইয়ার্ডটিও প্রাচ্যের ডান্ডি নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসের একটা ঐতিহ্য। যা যুগযুগ ধরে শীতলক্ষ্যা নদী, আর নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্য বহন করে চলছে। এই ভাসমান ডকইয়ার্ডটি পানিতে চলাচলকারী জাহাজ, লঞ্চ-ইস্টিমার, কার্গো, ট্রলার সহ আরও বহুরকম নৌযান মেরামত করার সময়োপযোগী স্থান।  আমরা সবাই সচরাচর দেখি ডকইয়ার্ড থাকে, নদীর পাড় ঘেঁষা খোলা জায়গায়। কিন্তু এটি নদীর পাড় ঘেঁষা কোনও খোলা জায়গা বা ভূমিতে নয়! এটি হলো পানির উপরে ভাসমান (ভেসে থাকা) অবস্থায়। নদীতে চলাচলকারী নৌযা...

স্মৃতিতে মুড়ির টিন বাস

ছবি
প্রিয় বন্ধুরা, কোনোএক সময়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলা যাত্রীবাহী মুড়ির টিন বাসের কথা আপনাদের মনে আছে কি? আমার মনে হয় আমার সমবয়সী যারা আছেন, কেবলমাত্র তাদেরই মনে আছে বলে আমার বিশ্বাস! আর যাদের ১৯৮৪-৮৫ সালের পর জন্ম হয়েছে, তারা সেই সময়কার ঐতিহ্যবাহী মুড়ির টিন বাসের নামই শুধু শুনেছে। কিন্তু কখনই মুড়ির টিন বাসে চড়ে দেখেনি এবং ওই ঐতিহ্যবাহী যানবাহন মুড়ির টিন বাসের ইতিহাসও তাদের কাছে অজানা। তবে আমি মনে করি বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে কারোর কাছে কোনোকিছু অজানা থাকার কথা নয়! কারণ বর্তমান যুগে সবার হাতে হাতেই অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম মোবাইল ফোন। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল মানেই সারা দুনিয়া হাতের মুঠোয়। আর এই অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে বিশ্ববিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগলে ‘ক’ লিখে সার্চ করলেই, ‘ক’র মর্মার্থ জানা হয়ে যায়। আর দুনিয়ার সবকিছু অজানা খবর তো মোবাইল স্ক্রিনে নিমিষেই ভেসে উঠে। তারপরও যাদের কাছে সেই সময়কার ঐতিহ্যবাহী মুড়ির টিন বাসের ইতিহাস অজানা থাকে, তাদের জন্যই আজকে আমার এই লেখা। তাই আজকে কোনোএক সময়ের বাংলার ঐতিহ্যবাহী যানবাহন মুড়ির টিন বাসের কিছু স্মৃতি, কিছু জানা-অজানা ইতিহাস সব...

দেবতা গণেশের আসল মাথা আর হাতির দেহ কোথায়?

ছবি
গণেশ পূজা ও “মঙ্গলঘট”: একটি প্রশ্নের উত্তর সন্ধানে আমি একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী। অর্থাৎ আমি হিন্দু। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি, আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, কাকা-কাকী, মামা-মামীসহ হিন্দু সমাজের সকলেই ধর্মীয় নিয়মনীতি মেনে বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজার্চনা করে আসছেন। আমিও প্রতিবছর নিজ এলাকায় অনুষ্ঠিত প্রায় প্রতিটি পূজায় অংশগ্রহণ করে ভক্তিভরে পালন করি। সবচেয়ে বেশি আনন্দ উপভোগ করি আমাদের হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ উৎসব দুর্গাপূজায়। আর প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ, অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের এই দিনে, দিনটি শুরু করি গণেশ পূজা করে। এই দিনেই প্রতি বছর নিজেকে একটি প্রশ্ন করি— “আচ্ছা, দেবতা গণেশের মাথা হাতির কেন? গণেশের আসল মাথা কোথায় গেল? আর হাতির দেহটাই-বা কোথায় গেল এবং কিভাবে পূজিত হচ্ছে?” এই প্রশ্নের উত্তর আমি কখনোই সঠিকভাবে পাইনি, এমনকি কোনো পুরোহিতের কাছ থেকেও নয়। কিন্তু আমি থেমে থাকিনি। আমার জানার আগ্রহ বরাবরই প্রবল। সেই আগ্রহ থেকেই একদিন ঘাঁটতে শুরু করলাম শিবপুরাণ। সেখান থেকেই পেলাম গণেশের মাথা বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং তাঁর দেহে হাতির মাথা স্থাপন হওয়ার কাহিনী। পরবর্তীতে আমি আমার স্বর্গীয় বড়দার কাছে বিষয়ট...