পোস্টগুলি

সমাজ লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মানুষ কেন মানুষের পূজারী বা সহযোগী হয় না? — বাস্তব উদাহরণসহ বিশ্লেষণ

ছবি
  মানুষ মানুষের পূজারী হয় না কেন? — সাহায্য-সহযোগিতার অভাবের কারণ ও সমাধান মানুষ মানুষের পূজারী হয় না কেন? — সাহায্য-সহযোগিতার অভাবের কারণ ও সমাধান লেখা: নিতাই বাবু • সমাজ ও নৈতিকতা আমরা প্রায়শই বলি—“মানুষ মানুষের পক্ষে হলে সমাজ সুন্দর হবে।” কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় অনেক সময় মানুষ অপরের কষ্টে পাশে দাঁড়ায় না। প্রশ্ন হল—কেন মানুষ মানুষের পূজারী (অর্থাৎ নিঃস্বার্থভাবে একে অপরকে পূজার মতো সম্মান ও সহায়তা) হয় না? নিচে কারণ, উদাহরণ ও সম্ভাব্য সমাধান বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো। মূল কারণগুলো ১. স্বার্থপরতা ও প্রতিযোগিতা আধুনিক জীবনে ব্যক্তিগত সাফল্য ও প্রতিযোগিতার চাপ অনেক। প্রচুর মানুষ নিজ স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। আর্থিক নিরাপত্তা, পদোন্নতি বা সামাজিক মর্যাদা অনেক সময় অন্যকে সাহায্য করার ইচ্ছাকে দমন করে। উদাহরণ: অফিসে একজন সহকর্মী সমস্যায় পড়লে অনেকেই সরাসরি সাহায্য না করে ভাবতে থাকে—“যদি সে আমার তুলনায় এগিয়ে চলে?” ২. ভয় ও অনাস্থা কেউ কাউকে সাহায্য করলে আইনগত জটিলতা বা ...

মানুষ নামের অমানুষ-গুলো : মানবতার অবক্ষয় ও সামাজিক বাস্তবতা

ছবি
  মানুষ নামের অমানুষ-গুলো পৃথিবীতে মানুষ নামের জীবটি নাকি সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী। কিন্তু সব সময় কি মানুষ সত্যিই মানুষ হয়ে বেঁচে থাকে? ইতিহাস আর বর্তমান আমাদের দেখায়—সবাই মানুষ হলেও, সবার আচরণ মানবিক নয়। যারা নিজেদের স্বার্থ, লোভ, নিষ্ঠুরতা বা অমানবিক কাজ দিয়ে অন্যের ক্ষতি করে, তারাই আসলে “মানুষ নামের অমানুষ” । অমানুষ হওয়ার রূপগুলো লোভ ও স্বার্থপরতা: যারা নিজের স্বার্থের জন্য অন্যের ক্ষতি করে, তারা মানবিকতার মুখোশ পরে অমানবিক কাজ করে। নিষ্ঠুরতা ও সহিংসতা: হত্যা, নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা, শিশুশ্রম—এসবই অমানুষের চিহ্ন। ভণ্ডামি: সমাজে ভদ্রতার মুখোশ পরে ভেতরে অমানুষ হয়ে থাকা লোকদের পাওয়া যায় প্রচুর। অন্যায়ের সহযোগী: যারা চুপ করে অন্যায়ের পাশে দাঁড়ায়, তারাও অমানুষেরই অংশ। ইতিহাসে ও সমাজে অমানুষ ইতিহাসের পাতায় আমরা দেখি—যুদ্ধ, দাসপ্রথা, উপনিবেশবাদ, গণহত্যা, দুর্নীতি—সবই মানুষের হাতে তৈরি। অথচ এসব কাজ যারা করেছে, তারা মানুষ হিসেবেই জন্ম নিয়েছিল। আজকের সমাজেও আমরা দেখি দুর্নীতিবাজ নেতা, লোভী ব্যবস...

অহংকার বনাম আত্মবিশ্বাস

ছবি
  অহংকার: আত্মবিশ্বাসের ছদ্মবেশ না আত্মবিনাশের পথ? একটি পুরনো বাংলা প্রবাদে আছে— "অহংকার পতনের মূল" । এই একটি বাক্যেই লুকিয়ে আছে বহু যুগের অভিজ্ঞতা, দর্শন ও সতর্কতা। অহংকার এমন একটি মানসিক অবস্থা, যা মানুষের চিন্তা, আচরণ ও সামাজিক সম্পর্ককে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে পারে। 🔍 অহংকারের সংজ্ঞা ও ব্যুৎপত্তি ‘অহংকার’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত "অহং" (অর্থাৎ ‘আমি’) এবং "কার" (অর্থাৎ ‘করা’ বা ‘সৃষ্টি’) থেকে। এর অর্থ—নিজেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ, বড় বা শ্রেষ্ঠ ভাবা এবং অন্যকে তুচ্ছ জ্ঞান করা। 🕋 ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অহংকার ইসলাম: ইসলাম ধর্মে অহংকারকে মারাত্মক গুনাহ বলা হয়েছে। নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন— “যার অন্তরে এক অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।” (সহীহ মুসলিম) হিন্দুধর্ম: ভগবদ্গীতায় (অধ্যায় ১৬, শ্লোক ৪) বলা হয়েছে— “অহংকার, দাম্ভিকতা ও রাগ হলো অসুরদের লক্ষণ।” অহংকার মানুষকে মায়া জালে বেঁধে রাখে এবং আত্মজ্ঞান থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। বৌদ্ধ ধর্ম: অহংকারকে “মান” বলা হয় এবং এটি “অবিধ্যা” বা অজ্ঞতার একটি রূপ। নির্বাণ লাভ করতে হলে...

আলো, সূর্য ও সমাজের আলোকিত মানুষ

ছবি
  ☀️ আলো, সূর্য ও সমাজের আলোকিত মানুষ আমরা সবাই সূর্যকে জানি—প্রতিদিন পূর্ব আকাশে উদিত হয়, আলো ছড়ায়, তাপ দেয়, আমাদের জীবন টিকিয়ে রাখে। কিন্তু আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি, এই সূর্য কাউকে গরিব বলে অবহেলা করে না , কাউকে ধনী বলে বেশি আলো দেয় না, কিংবা পাপী না সাধু—সে হিসেবেও আলোর মাপকাঠি স্থির করে না। সূর্য কেবল নিজের ধর্ম পালন করে—নিঃস্বার্থভাবে আলোকিত করে সবাইকে । কিন্তু মানুষ যখন আলোকিত হয়— শিক্ষায়, প্রতিভায়, প্রজ্ঞায় —তখন তার আলো আর নিঃস্বার্থ থাকে না। সে আলো বিক্রি হয় … ক্ষমতার কাছে, টাকার কাছে, কিংবা স্বার্থের কাছে। আমরা সমাজে যাদের আলোকিত মানুষ বলে জানি, তারা অনেকেই সেই আলোকে একটি মুদ্রায় পরিণত করে ফেলেছে। কারো কণ্ঠস্বর গাইডলাইন ছাড়া পাওয়া যায় না, কারো চিন্তার আলো কেবল ধনিক শ্রেণির জন্য সংরক্ষিত, আর কেউ কেউ আলো দেখায় এমনভাবে— যেন সে-ই ঈশ্বর! 🌻 প্রকৃত আলোকিত মানুষ কেমন? অথচ প্রকৃত আলোকিত মানুষ সেই, যিনি অন্ধকারকে তুচ্ছ জেনে, নিঃস্বার্থভাবে আলো বিলিয়ে যান । যিনি মানুষের মধ্যকার বিভেদ না দেখে, কেবল মানুষটিকে দেখেন। যিনি জানেন, আলো দিতে হলে প্রদীপ হতে হয়, এবং তেল জো...

যেদিন ঈশ্বর কাঁদলেন—গদ্য কবিতা (পর্ব-৯)

ছবি
  🕯️ গদ্য কবিতা – পর্ব–৯ যেদিন ঈশ্বর কাঁদলেন সেদিন আকাশ ছিল রক্তিম। বাতাসে ছিল পচা লাশের গন্ধ। শিশুর কান্না মিশে গিয়েছিল গোলাগুলির শব্দে। আর ঠিক তখনই, ঈশ্বর কাঁদলেন। তাঁর চোখে জল ছিল না— কারণ মানুষের কান্না এতটাই গভীর ছিল, যে ঈশ্বরের নিজস্ব চোখকেই ম্লান লাগছিল তাদের সামনে। তিনি কাঁদলেন এক মায়ের আর্তনাদে, যে হারিয়েছিল তার একমাত্র সন্তানকে, কাঁদলেন সেই পিতার শূন্য দৃষ্টিতে, যে শেষবার ছেলের মুখ ছুঁতে পারেনি। তাঁর কান্না জমে ছিল মাটির গভীরে, যেখানে মানুষের রক্ত লেগে ছিল ঈশ্বরের প্রতিচ্ছবিতে। ঈশ্বর বললেন না কিছুই। কারণ তিনি জানেন— সব ধর্ম মিলেও যদি একটিও প্রাণ বাঁচাতে না পারে, তবে তা শুধু নিয়মের খোলস । ঈশ্বর তখন মানুষ হতে চাইলেন— যেন কাউকে জড়িয়ে ধরতে পারেন, যেন কারও হাত ধরে বলতে পারেন, “আমি আছি, আর কাঁদতে দিও না।” কিন্তু মানুষ তখন ঈশ্বরকে খুঁজছিল মন্দিরে, কেউ গীর্জায়, কেউ কাবায়, কেউ প্রতিমার চোখে— অথচ ঈশ্বর দাঁড়িয়েছিলেন বারান্দায় এক অনাথ শিশুর পাশে, যার কোনো ধর্ম ছিল না, ছিল শুধু ক্ষুধা...

মন্দিরে দান বনাম মানবসেবা

ছবি
  🕉️ মন্দিরে দান বনাম মানবসেবা: ঈশ্বর কি সত্যিই কিছু চান? মন্দিরের সামনে কত গরিব মানুষ না খেয়ে পড়ে থাকে, অথচ ওই মন্দিরেই দানবাক্স উপচে পড়ে টাকায়, সোনায়—এই দৃশ্য আমাদের সমাজে নতুন নয়। প্রশ্ন আসে: ভক্তরা এই দান যদি পাশের ক্ষুধার্ত মানুষদের উপকারে না আনেন, তবে সেটা কী সত্যিই পূণ্য? 🧭 দেবতার দরকার কী? ভক্তরা বলেন: “আমরা ঈশ্বরকে ভালোবেসে দান করি।” কিন্তু ভাবুন—ঈশ্বর কি কখনো বলেছেন, "আমাকে সোনা দাও, রূপা দাও, গম্বুজে টাইলস লাগাও?" নাহ্! ঈশ্বরের তো কোনো কিছুতেই অভাব নেই। অভাব আমাদের সমাজে—আমাদের চারপাশে। 🤲 দানের প্রকৃত অর্থ কী? প্রকৃত ধর্ম শিক্ষা বলে, “পরার্থে জীবনই ধর্ম।” গীতা বলে: যে ব্যক্তি সকল প্রাণীতে ঈশ্বরকে দেখতে পায়, সেই প্রকৃত জ্ঞানী। তাহলে ঈশ্বরকে তুষ্ট করতে হলে কেন আমরা ক্ষুধার্ত শিশুর পাশে দাঁড়াই না? কেন এত সোনা, টাকা, ফুল আর সুগন্ধি মন্দিরে, আর ভিক্ষুকের থালায় নীরবতা? 📿 কিছু মন্দির সমাজসেবায় যুক্ত, তবে? হ্যাঁ, কিছু মন্দির: অন্নদান প্রকল্প চালায় ফ্রি ওষুধ ও স্বাস্থ্য সেবা দেয় শিক্ষা সহায়তা ও বিয়ের অনুদান দেয় তবে বেশিরভাগ মন্দিরেই স...

আমি সমাজের ঘৃণিত মানুষ

ছবি
                 শ্রী নিতাই চন্দ্র পাল (নিতাই বাবু) আমি হিন্দু আমি বিধর্মী আমি ছাড়াল আমি চণ্ডাল, আমি মূর্তিপূজা করি তাই কেউ বলে আমি সমাজের জঞ্জাল। আমি গরিব আমি দরিদ্র আমি অর্থহীন আমি ভূমিহীন, আমি অসহায় নিঃস্ব তাই কেউ বলে আমি সমাজের ডাস্টবিন। আমি কুশ্রী আমি অসুন্দর আমি দুর্বল আমি শক্তিহীন, আমি চাকরি করি তাই কেউ বলে আমি চাকর পরাধীন। আমি শত্রু আমি কুলাঙ্গার আমি গৃহহীন আমি সর্বহারা, আমি বস্তিতে থাকি তাই কেউ বলে আমি উদ্বাস্তু বাস্তুহারা। আমি অসহায় আমি অভিশপ্ত আমি সংখ্যালঘু আমি ঘৃণিত, আমি মূর্খ অশিক্ষিত তাই কেউ বলে আমি সমাজের নিন্দিত। আমি মানব আমি সৃষ্টির সেরা আমি স্রষ্টার প্রেরিত মানুষ, আমি সমাজের দরিদ্র তাই কেউ বলে আমি সমাজের অমানুষ। আমার জীবনের গল্প নিয়ে কিছু লেখার লিংক দেয়া হলো।  জীবনের গল্প-১ এখানে।   জীবনের গল্প-২ এখানে। জীবনের গল্প-৩ এখানে।   জীবনের গল্প-৪ এখানে। জীবনের গল্প-৫ এখানে।   জীবনের গল্প-৬ এখানে। জীবনের গল্প-৭ এখানে।   জীবনের গল্প-৮ এখানে। জীবনের গল্প-৯ এখানে।   জীবনের গল্প-১০ এখানে। ...