পোস্টগুলি

নারায়ণগঞ্জ লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

স্বাধীনতা-পরবর্তী: নোয়াখালী থেকে নারায়ণগঞ্জ

ছবি
   স্বাধীনতা-পরবর্তী: নোয়াখালী থেকে নারায়ণগঞ্জ — এক জীবন্ত দলিল ✍️ নিতাই বাবু) (জন্ম: ৮ জুন ১৯৬৩, মাহাতাবপুর, নোয়াখালী | বর্তমান নিবাস: নারায়ণগঞ্জ) 🌾 মাহাতাবপুর: আমার শৈশবের স্বর্গভূমি আমার জন্ম ১৯৬৩ সালের ৮ই জুন, নোয়াখালীর চৌমুহনী থানার অন্তর্গত বজরা রেলস্টেশনের পাশের গ্রাম মাহাতাবপুরে। আমাদের পরিবার ছিল গ্রামের মধ্যে অন্যতম প্রতিষ্ঠিত ও সম্মানিত হিন্দু পরিবার। আমার শৈশব যেন ছিল এক নির্মল সময়ের রঙিন ক্যানভাস — ট্রেনের হুইসেল, পাশের খালের জেলেদের মাছ ধরা, আম-কাঁঠালের বাগানে খেলাধুলা, আর সন্ধ্যায় হারিকেনের আলোয় গল্পে মেতে ওঠা। 🔥 একাত্তরের আগুনে আমাদের উঠোন ১৯৭১ সালে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। আমার জ্যাঠা ছিলেন পাকিস্তান আমলে পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করা একজন দেশপ্রেমিক মানুষ। তাঁর অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বে আমাদের বাড়ি হয়ে ওঠে মুক্তিবাহিনীর এক গোপন ঘাঁটি। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধারা এসে জড়ো হতেন, আমার জ্যাঠার সঙ্গে যুদ্ধের পরিকল্পনা করতেন। অস্ত্রও আনা হতো গোপনে। শিশুরা দূরে থাকত, তবু টের পাওয়া যেত সবকিছু। ⚔️ স্বাধীনতা, কিন্তু শান্তি ন...

একটি মাঠ; হাজারো প্রাণের স্মৃতি

ছবি
একটি মাঠ, হাজারো প্রাণের স্মৃতি সময় বদলায়, মানুষ বদলায়, বদলায় শহরের চেহারাও। কিন্তু কিছু কিছু স্মৃতি থেকে যায় আমাদের ভেতরে অমলিন, যা ফিরে ফিরে আসে জীবন যখন খানিকটা স্থির হয়—ঠিক যেমন ফিরে আসে গোদনাইলের সেই প্রিয় খেলার মাঠের কথা। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১০নং ওয়ার্ডে অবস্থিত এই মাঠটি কেবল একটি খেলার মাঠ নয়—এ যেন হাজারো প্রাণের গল্পগাথা , অসংখ্য শৈশব-কৈশোরের উঠেপড়া আর স্বপ্ন বোনা একটা জীবন্ত ইতিহাস। একসময়কার চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্‌ -এর প্রাণকেন্দ্রে থাকা এই মাঠ আজও বহন করে তার গৌরবময় অতীত। ২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী -র আন্তরিক উদ্যোগে এই মাঠটি সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বে আসে। তারপর থেকেই শুরু হয় ব্যাপক উন্নয়ন—পশ্চিম পাশে বসার সিঁড়ি, মাঠ পাইলিং করে সমতলকরণ, চারপাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা, শতাধিক বৃক্ষরোপণ এবং সন্ধ্যার পরও খেলার জন্য অর্ধশত লাইটপোস্ট স্থাপন—সব মিলিয়ে মাঠটি যেন এক নতুন প্রাণ ফিরে পায়। এই মাঠের ঘাসে গড়াগড়ি খেতে খেতে বড় হয়েছে চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্‌ এলাকার হাজারো ছেলে। কেউ আজ দ...

আমার শৈশবের বন্ধু— শীতলক্ষ্যা

ছবি
🌊 আমার শৈশবের বন্ধু – শীতলক্ষ্যা 💙 নদী মানেই শুধু পানি নয়... নদী মানে এক বুক স্মৃতি, একমুঠো স্বপ্ন, একটুকরো শৈশব। স্বাধীনতার পর, বন্দরে আসার শুরুতেই আমার নতুন জীবনের গল্পে শীতলক্ষ্যা ছিল আমার প্রতিদিনের সঙ্গী। সকালবেলা স্কুলে যাওয়ার পথে তার কলকল শব্দ, দুপুরে ঘাটের ছেলেদের খেলাধুলা, আর বিকেলে নৌকার হালকা দুলুনিতে স্বপ্ন দেখা—এসব কিছুই বাঁধা ছিল এই নদীর সঙ্গে। কিন্তু আজ... আমার সেই প্রিয় বন্ধুটা আর আগের মতো নেই। কলকারখানার দূষণ, বেদখল আর লোভের আগ্রাসনে সে যেন দম বন্ধ হয়ে আসা এক নীরব আত্মা। এই নদীর বুকেই আমি ছুঁয়েছিলাম জীবনের প্রথম স্বাধীনতা। আজ সেই নদীর বুক চিড়ে বয়ে চলে বিষ ও বিসর্জনের ধারা। তবুও স্মৃতির ভেতর সে এখনো আছে। আমি আজও শুনতে পাই সেই ঢেউয়ের ডাক। — নিতাই বাবু