পোস্টগুলি

হিন্দুধর্ম লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আদরের পুসি ও হিন্দুধর্মে বিড়াল সমাচার

ছবি
ছোটবেলা থেকেই কুকুর, বিড়াল, গরু-ছাগল ভালোবেসে আসছি। এই ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত নয়, ঘরের জিনিসপত্র নষ্ট করে ফেলা ইঁদুরও। মাঝে মাঝে দুপুরে কিংবা রাতে ভাত খেতে বসলে নিজে খাওয়ার আগে ঘরের ইঁদুরগুলোর জন্য একমুঠো ভাত বাসার এক কোণে রেখে দিই। রাতে সবাই ঘুমিয়ে গেলে সেই একমুঠো ভাত ঘরের উষ্ণতা খুঁজে বের করা ইঁদুরগুলো মিলেমিশে খেয়ে ফেলে। আবার, রাস্তায় কোনো কুকুর সামনে এলে ওকে খাবার কিনে দিই—কুকুরটা মনের আনন্দে লেজ নেড়ে খায়। বিড়াল সামনে পড়লে তাকেও খাওয়াতে ইচ্ছা করে। কারও গরু-ছাগল দেখলে গিয়ে আদর করি, মাথায় হাত বুলিয়ে দিই। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো—মনের ভেতর পশু-পাখির প্রতি এত ভালোবাসা থাকলেও নিজের কোনো বাড়ি না থাকায় এসব ভালোবাসা প্র্যাকটিকালি পূরণ করা হয়ে ওঠে না। তবুও মাঝেমধ্যে শত ঝামেলা সত্ত্বেও ভাড়া বাসায় কুকুর বা বিড়াল পুষে ফেলি। এইতো কয়েক বছর আগে, ২০১৬ সালে শখ করে একটা কুকুরছানা বাসায় নিয়ে এসেছিলাম, পুষব বলে। ওর নাম রেখেছিলাম “ধলু”। কিন্তু যেহেতু আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী, কুকুর ঘরে আনা নিয়ে সহধর্মিণীর সঙ্গে লাগল তুমুল ঝগড়া! ছিছিছি, রাম রাম, হায় ভগবান—সব শব্দ একসাথে চলতে লাগল! তারপরও দমে যাইনি...

হিন্দুধর্মে হাতেখড়ি ইতিহাস, নিয়ম ও তাৎপর্য

ছবি
✍️ হিন্দুধর্মে হাতেখড়ি: ইতিহাস, নিয়ম ও তাৎপর্য 🪔 ভূমিকা হিন্দু সমাজে শিক্ষা গ্রহণের সূচনাকে অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। এই সূচনাকেই বলা হয় “হাতেখড়ি” বা “বিদ্যারম্ভ” । এটি শিশুর জীবনে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আশীর্বাদ নিয়ে এগিয়ে চলার এক শুভ সূচনা। 📜 ইতিহাস প্রাচীন ভারতে গুরুকুল প্রথায় শিক্ষার সূচনা ছিল একটি ধর্মীয় আচার। বৈদিক যুগে শিশুর বিদ্যাচর্চা শুরু হতো উপনয়নের মাধ্যমে। পরবর্তীকালে গৃহস্থ পরিবারগুলোও এই বিদ্যারম্ভ আচার পালন করতে শুরু করে, যা আজ হাতেখড়ি নামে পরিচিত। 📋 নিয়ম বা পদ্ধতি হাতেখড়ি সাধারণত শিশুর বয়স ৪-৬ বছর হওয়ার পর শুভ দিনে পালন করা হয়। সবচেয়ে জনপ্রিয় দিন হলো সরস্বতী পূজা (বসন্ত পঞ্চমী) । 📌 সাধারণ রীতি: 🔸 পূজা-অর্চনা: সরস্বতী দেবীর মূর্তির সামনে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হয়। 🔸 শিশুকে বসানো: নতুন বা পরিষ্কার কাপড় পরিয়ে বসানো হয়। 🔸 প্রথম লেখা: শিশুকে চালের উপর বা স্লেটে লিখানো হয় — “অ” / “ওঁ” / “ॐ नमः शिवाय” ইত্যাদি। 🔸 আশীর্বাদ: আত্মীয়রা আশীর্বাদ করেন ও মিষ্টি খাওয়ান...

দূর হোক শিবলিঙ্গ নিয়ে ভুল ধারনা

ছবি
                    ভগবান শিব বা মহাদেব  আমরা হিন্দু ধর্মাবলম্বী সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী। সে সাথে মূর্তিপূজা ও বিভিন্ন দেবদেবীর পূজার্চনায়ও বিশ্বাসী। অথচ এই 'হিন্দু' নামের কোনও শব্দ কোনও শাস্ত্রগ্রন্থে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাহলে এই হিন্দু শব্দটা আসলো কোথা থেকে? মূলত 'আর্য' ধর্মের পরিবর্তিত নাম হল 'হিন্দু' ধর্ম। আর এই আর্য ধর্ম সবচেয়ে প্রাচীন বলেই এ ধর্মকে সনাতন ধর্ম বলা হয়। আর এই আর্য-ধর্মের মূল গ্রন্থ ছিল বেদ। এই আর্য ধর্মের উৎপত্তি কখন বা কবে সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়েও বহু মতবিরোধ রয়েছে। এর সঠিক তথ্য আজ পর্যন্ত কোথাও পাওয়া যায়নি। তাই এই আর্য ধর্মটি 'সনাতন' (পুরাতন) ধর্ম নামে বিশ্বের বুকে প্রসিদ্ধ।                    “ শিবলিঙ্গ” ছবি ইন্টারনেট থেকে। জানা যায় 'হিন্দু' শব্দের উৎপত্তি প্যারসিক শব্দ থেকে। প্রাচীন কালে নাকি প্যারসিক বলা হত ইরানিদের। হিনস্‌র ভাষায় 'হিন্দু' শব্দের অর্থ হল যিনি হিংসা করে না। অতএব যিনি হিংসা করে, তিনি হিন্দু হতে পারে না। অথচ এই হিংসা আর অহংকার...

দেবতা গণেশের আসল মাথা আর হাতির দেহ কোথায়?

ছবি
গণেশ পূজা ও “মঙ্গলঘট”: একটি প্রশ্নের উত্তর সন্ধানে আমি একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী। অর্থাৎ আমি হিন্দু। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি, আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, কাকা-কাকী, মামা-মামীসহ হিন্দু সমাজের সকলেই ধর্মীয় নিয়মনীতি মেনে বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজার্চনা করে আসছেন। আমিও প্রতিবছর নিজ এলাকায় অনুষ্ঠিত প্রায় প্রতিটি পূজায় অংশগ্রহণ করে ভক্তিভরে পালন করি। সবচেয়ে বেশি আনন্দ উপভোগ করি আমাদের হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ উৎসব দুর্গাপূজায়। আর প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ, অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের এই দিনে, দিনটি শুরু করি গণেশ পূজা করে। এই দিনেই প্রতি বছর নিজেকে একটি প্রশ্ন করি— “আচ্ছা, দেবতা গণেশের মাথা হাতির কেন? গণেশের আসল মাথা কোথায় গেল? আর হাতির দেহটাই-বা কোথায় গেল এবং কিভাবে পূজিত হচ্ছে?” এই প্রশ্নের উত্তর আমি কখনোই সঠিকভাবে পাইনি, এমনকি কোনো পুরোহিতের কাছ থেকেও নয়। কিন্তু আমি থেমে থাকিনি। আমার জানার আগ্রহ বরাবরই প্রবল। সেই আগ্রহ থেকেই একদিন ঘাঁটতে শুরু করলাম শিবপুরাণ। সেখান থেকেই পেলাম গণেশের মাথা বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং তাঁর দেহে হাতির মাথা স্থাপন হওয়ার কাহিনী। পরবর্তীতে আমি আমার স্বর্গীয় বড়দার কাছে বিষয়ট...

হিন্দু ধর্মে ৫১ শক্তিপীঠ কী

ছবি
অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী জানেনা যে, ৫১ শক্তিপীঠ কী এবং এই ৫১ শক্তিপীঠ কোথায় কোথায় অবস্থিত! তাহলে জেনে নিতে পারি কামরূপ কী আর কামাখ্যা-ই বা কী? কামরূপ কামাখ্যার ব্যাখ্যা দিতে হলে, আগে হিন্দু শাস্ত্রে বর্ণিত ৫১ শক্তিপীঠ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে হয়। শক্তিপীঠ হলো, হিন্দুধর্মের পবিত্রতম তীর্থস্থানগুলোর অন্যতম। লোকবিশ্বাস অনুসারে, শক্তিপীঠ নামাঙ্কিত তীর্থগুলিতে দক্ষ রাজার কন্যা দেবী দাক্ষায়ণী সতী-র দেহের নানান অঙ্গ ও দেহে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, নেপাল, পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে রক্ষিত আছে। শাস্ত্রমতে ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়ে থাকলেও, শাস্ত্রভেদে শক্তিপীঠের সংখ্যা ও অবস্থান নিয়ে মতভেদও আছে। তবে এই ৫১টি পবিত্র শক্তিপীঠ মন্দির এবং স্থান ইতিহাসের পাতায় সুলিখিতভাবে বর্ণিত রয়েছে। শক্তিপীঠ কী এবং কীভাবে? সনাতন ধর্মের শাস্ত্র ঘেঁটে আর বিভিন্ন অনলাইনভিত্তিক তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় সত্যযুগের এক ঘটনার ইতিহাস। সত্য যুগের কোনও এক সময়ে মহাদেবের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য দক্ষ রাজা বৃহস্পতি নামে এক যজ্ঞের আয়োজন করেন। দক্ষ রাজার কন্যা ছিলেন, দাক্ষায়ণী সতী দেবী। কন্য...