শ্মশানের নীরবতা: অহংকারের ছাইচাপা শিক্ষা

 

🪔 শ্মশানের নীরবতা: অহংকারের ছাইচাপা শিক্ষা

একদিন গুরু বলেছিলেন— "যখন সময় পাবি, শ্মশানে আছিস— দেখবি কত অহংকার পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।" সে উপদেশ আজও কানে বাজে। সত্যিই তো! এই দুনিয়ার সব চাহিদা, লোভ, ক্রোধ, হিংসা, দম্ভ— সবই তো এক মুঠো ছাইয়ে শেষ হয়ে যায়।

সেখানে নেই কোনো জাত-বর্ণের পার্থক্য, নেই ধনী-গরিবের ভেদাভেদ। চিতা যখন জ্বলে ওঠে, তখন সকলের দেহই একইভাবে পুড়ে ছাই হয়। সেই ছাইভস্ম বাতাসে উড়ে চলে যায়, যেখানে আর কেউ ফিরে তাকায় না। জীবনের এই নির্মম সত্য দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলে, অন্তরের অন্ধকারে আলোর রেখা পড়ে। তখন নিজেকে প্রশ্ন করতে হয়—

“আমি কি পারছি অহংকার পরিহার করতে?
পারছি কি লোভ, লালসা, হিংসা, পরনিন্দার জাল ছিঁড়ে বের হতে?”

শ্মশান আমাদের শেখায়— জীবন ক্ষণিক, মৃত্যু নিশ্চিত। অথচ সেই চিরসত্যকে ভুলে আমরা প্রতিদিন যে দম্ভে, যে বিভ্রান্তিতে জীবন পার করি, তার শেষ পরিণতিই তো সেই নীরব শ্মশান। যেখানে কেউ কিছু বলতে আসে না, কেউ কিছু নিতে পারে না।

আজ বেঁচে আছি— কাল কে জানে কোথায় থাকব! সময় থাকতে তাই নিজেকে শুধরে নেওয়া জরুরি। মনটাকে প্রশ্ন করা দরকার, আজ আমি যে জীবনযাপন করছি, সেটা কি মৃত্যুর পর সত্যিকারের কোনো ছাপ রেখে যেতে পারবে?

শ্মশান শুধু মৃত্যু নয়— এটি এক নিরব, গভীর, নীরব শিক্ষক। যা শেখায়— বিনয়, ক্ষমাশীলতা, সংযম আর আত্ম-অনুসন্ধান।

Nitai Babu
নিতাই বাবু
পুরস্কারপ্রাপ্ত নাগরিক সাংবাদিক — ২০১৭
লেখক, ব্লগার ও সমাজসচেতন কলমযোদ্ধা।
✍️ nitaibabublog.blogspot.com

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার শৈশবের বন্ধু— শীতলক্ষ্যা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঈশ্বর ভাবনা

মা নাই যার, সংসার অরণ্য তার