পোস্টগুলি

হিন্দু_ধর্ম লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শিব পুরাণ কী? এতে কী আছে ও এর গুরুত্ব | ব্যাখ্যা সহ বর্ণনা

ছবি
  শিব পুরাণ কী? | ব্যাখ্যা সহ বর্ণনা 🕉️ শিব পুরাণ কী? শিব পুরাণ হিন্দু ধর্মের আঠারোটি মহাপুরাণের একটি। এটি মূলত ভগবান শিবকে কেন্দ্র করে রচিত। পুরাণ মানে প্রাচীন কাহিনি বা শাস্ত্র, আর এই গ্রন্থে শিবের মহিমা, বিভিন্ন লীলাকাহিনি, দর্শন ও ভক্তিমূলক শিক্ষা লিপিবদ্ধ আছে। শাস্ত্র মতে, মহর্ষি বেদব্যাস ই এই পুরাণ সংকলন করেন। ধারণা করা হয়, শিব পুরাণের প্রাচীনতম অংশ গুপ্তযুগে সংকলিত হয় এবং পরে ধীরে ধীরে বিস্তৃত ও সংশোধিত হয়েছে। 📖 শিব পুরাণে কী কী আছে? শিব পুরাণ মোট সাতটি সংহিতা বা ভাগে বিভক্ত। সেগুলো হলো— ১. বিদ্যেশ্বর সংহিতা সৃষ্টিতত্ত্ব শিবলিঙ্গের মাহাত্ম্য শিবপূজার নিয়ম ও ভক্তির শিক্ষা ২. রুদ্র সংহিতা শিবের লীলাকাহিনি পার্বতীর জন্ম ও বিবাহ কামদেবের দহন কার্তিকেয় ও গণেশের জন্ম ৩. শতরুদ্র সংহিতা রুদ্রের বিভিন্ন রূপ দেব-দানব সংঘর্ষ শিবস্তব ও স্তোত্র ৪. কোটি রুদ্র সংহিতা ব্রহ্মাণ্ডতত্ত্ব যোগপথ মুক্তি লাভের উপায় ৫. উমা সংহিতা দেবী উমার মাহাত্ম্য তার তপস্যা ও বিবাহ মাতৃত্ব ও দেবপুত্রের কাহিনি ৬. কৈলা...

শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস ও মা সারদা দেবীর যুগল সান্নিধ্য

ছবি
  🌸 শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস ও মা সারদা দেবীর যুগল সান্নিধ্য 🌸 🕉️ ঐতিহ্যবাহী শিল্পরূপে শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস ও মা সারদা দেবী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) ছিলেন ভারতের আধ্যাত্মিক নবজাগরণের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর জীবনযাপন, ভক্তি, আর সাদামাটা ভাষায় বলা আধ্যাত্মিক সত্য আজও কোটি মানুষের পথপ্রদর্শক। অন্যদিকে, মা সারদা দেবী ছিলেন তাঁর জীবনসঙ্গিনী ও আধ্যাত্মিক সহযাত্রী। যুগলভাবে তাঁরা এক মহান আদর্শ উপহার দিয়েছেন— "গৃহস্থ জীবনেও ঈশ্বরপ্রেম ও সাধনা সম্ভব" । শ্রী রামকৃষ্ণের ভক্তরা তাঁকে ঈশ্বররূপে মানলেও, মা সারদা দেবী ছিলেন মাতৃস্বরূপ— স্নেহ, দয়া ও করুণার প্রতীক। তাঁদের এই যুগল জীবনযাপন শুধু আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরণাই নয়, সামাজিক সমতা, নারী-পুরুষের সমান মর্যাদা এবং ভক্তির ভিন্ন ভিন্ন পথের ঐক্যকেও তুলে ধরে। 🌼 তাঁরা যেন সকলের জীবনে আলো, শান্তি ও প্রেমের উৎস হয়ে থাকেন 🌼 ✍️ নিতাই বাবু 🏆 পুরস্কারপ্রাপ্ত নাগরিক সাংবাদিক – ২০১৭ 🏆 ব্লগ ডট বিডিনিউজ টুয়...

মহাদেব দেবাদিদেব: লিঙ্গ প্রতীকী ও পূজার বিধান ব্যাখ্যা

ছবি
  🔱 মহাদেব দেবাদিদেব: লিঙ্গ প্রতীকী এবং পূজার বিধান মহাদেব, যিনি শিব নামে পরিচিত, হিন্দু ত্রিদেবের মধ্যে একজন প্রধান দেবতা। তাঁকে বলা হয় “দেবাদিদেব” অর্থাৎ সকল দেবতার মধ্যে সর্বশক্তিমান। শিবপূজা বিশেষভাবে লিঙ্গ প্রতীকী মাধ্যমে করা হয়, যা তাঁর শক্তি ও সৃষ্টিশীলতার প্রতীক। 🔹 লিঙ্গের অর্থ: লিঙ্গ হলো সৃজনশীল শক্তির প্রতীক। এটি মহাদেবের অসীম শক্তি ও সৃষ্টিশীলতার প্রকাশ। লিঙ্গকে পূজার মাধ্যমে ভক্তরা শিবের শক্তি, জ্ঞান ও ধার্মিকতা লাভের উদ্দেশ্য সাধন করে। 🔹 মহাদেব পূজার বিধান: শিবলিঙ্গে জল, দুধ, গোবর, গঙ্গাজল, ফলা ইত্যাদি অর্চন করা হয়। শিবলিঙ্গকে ফুল, ধূপ ও আলো দিয়ে পূজা করা হয়। মহাদেবের পূজা সাধারণত সোমবার বা মাঘ ও শ্রাবণ মাসে বিশেষ গুরুত্ব পায়। ভক্তরা মন্ত্র উচ্চারণ (যেমন "ওম নাম: শিবায়") ও ধ্যানের মাধ্যমে শিবের আর্শীবাদ লাভ করে। 🔹 পূজার লিঙ্গ প্রতীকী অর্থ: লিঙ্গের শীর্ষ অংশকে "অন্যপ্রাণ" এবং নীচের অংশকে "সৃজনশীল শক্তি" হিসেবে দেখা হয়। এটি মানব জীবনের শক্ত...

গণেশ ও কার্তিক – দুই ভাই কি, দুর্গার সন্তান? বিস্তারিত ব্যাখ্যা

ছবি
  গণেশ ও কার্তিক – দুই ভাই কি, দুর্গার সন্তান? বিস্তারিত ব্যাখ্যা হিন্দু পুরাণে শিব ও পার্বতীর দুই সন্তান হিসেবে গণেশ ও কার্তিকের উল্লেখ রয়েছে। গণেশকে সাধারণত বুদ্ধি, জ্ঞান ও বাধা দূর করার দেবতা হিসেবে মানা হয়। তিনি হস্তি-মুখধারী এবং শিশুরাও সহজে চিনতে পারে এমন রূপে পূজিত। অন্যদিকে, কার্তিক বা কুমারকে যুদ্ধ, বীরত্ব এবং শত্রুপক্ষ বিনাশের দেবতা হিসেবে সম্মান করা হয়। তিনি দেবতাদের সৈনিক এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত। গণেশ ও কার্তিক **দুই ভাই**, অর্থাৎ একই পিতামাতা (শিব ও পার্বতী) দ্বারা জন্মগ্রহণ করেছেন। শাস্ত্রে তাদের জন্মের পটভূমি ও ধর্মীয় কাহিনী বিস্তারিতভাবে বর্ণিত আছে। গণেশের জন্মকথা অনুযায়ী, পার্বতী নিজে থেকে মাটি দিয়ে তাকে সৃষ্টি করেছিলেন এবং শিবের সঙ্গে সংঘর্ষের পরই তাকে আর্শীবাদ দেওয়া হয়েছিল। কার্তিকের জন্মকথা অনুসারে, তিনি পবিত্র গঙ্গা ও শিবের শক্তি দ্বারা সৃষ্টি হয়েছেন এবং তাঁর মূল উদ্দেশ্য শত্রুদের ধ্বংস করা। কিছু লোকমুখের রূপকথা বা লোককাহিনীতে গণেশ ও কার্তিককে **দুর্গার সন্তান** হিসেবে উল্লেখ করা...

মা কালী বারো বোন — নাম, রূপ ও ব্যাখ্যা

ছবি
  মা কালী — "বারো বোন" ও তাদের অর্থ বাংলার গণধারা এবং শাক্ত ঐতিহ্যে কালীকে বিভিন্ন রূপে আরাধনা করা হয়। গ্রামীণ বিশ্বাসে কালী প্রায়ই বারো রূপে বা বারো বোন হিসেবে পরিচিত — অর্থাৎ তার বিভিন্ন শক্তি, প্রতিভা ও রূপকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও আত্মিক বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য গ্রামে গ্রামে পুজো করা হতো। 🔹 সংক্ষেপে ব্যাখ্যা "বারো বোন" ধারণাটি মূলত লোকবিশ্বাস— প্রতিটি বোনের আলাদা দায়িত্ব: কেউ রক্ষা করে, কেউ দান দেয়, কেউ জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রদান করে, আবার কেউ রাক্ষস-অসুর বিনাশকারী। পূজা আর কীর্তনে গ্রামবাসী তাকে সম্মিলিতভাবে স্মরণ করে। 🔹 প্রধান উদ্দেশ্য অসুর-দুষ্ট শক্তি থেকে সামূহিক সুরক্ষা। প্লীহার ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিরাপত্তা কামনা। অন্ন-সমৃদ্ধি, পরিবার-কল্যাণ ও সামাজিক সংহতি বজায় রাখা। ✨ বারো বোনের নাম (আঞ্চলিক ভিন্নতা থাকতে পারে) নিচের তালিকাটি সাধারণভাবে বাংলার লোকধর্মে প্রচলিত নামের উপরে ভিত্তি করে দেওয়া — কিছু এলাকায় নাম বা গঠন আলাদা হত...

সুদর্শনচক্র: ভগবান বিষ্ণুর মহাশক্তিধর দেবঅস্ত্র ও এর ব্যবহার

ছবি
  ✦ সুদর্শনচক্র: ভগবান বিষ্ণুর দেবঅস্ত্র ✦ সুদর্শনচক্র হিন্দু ধর্মগ্রন্থে ভগবান বিষ্ণুর এক মহাশক্তিধর অস্ত্র। এটি একটি চক্রাকৃতি ঘূর্ণায়মান চাকতি , যা অসুর ও দুষ্ট শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত হত। বিশ্বকর্মা এটি নির্মাণ করেছিলেন এবং এর শক্তি অপরাজেয়। 🔹 সুদর্শনচক্রের বৈশিষ্ট্য 🔥 দীপ্তিময় ও অদম্য অস্ত্র ⚔️ অসংখ্য ধারালো প্রান্ত রয়েছে 🌌 সর্বদা বিষ্ণুর ডান হাতে অবস্থান করে 🌟 স্পর্শ করলে যেকোনো কিছু ধ্বংস করতে সক্ষম 🔹 দেবতাদের কাজে ব্যবহার প্রাচীনকালে যখন অসুররা দেবতাদের পরাজিত করত, তখন ভগবান বিষ্ণু সুদর্শনচক্র ব্যবহার করে দেবতাদের রক্ষা করতেন। এর মাধ্যমে— 🚩 অসুর ও দানব ধ্বংস করা হতো 🛡️ ধর্ম ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা হতো 🙏 ভক্তদের রক্ষায় ব্যবহৃত হতো 🔹 পুরাণের উদাহরণ ✔️ মহাভারত -এ শ্রীকৃষ্ণ সুদর্শনচক্র দিয়ে শিশুপালকে হত্যা করেন। ✔️ ভাগবত পুরাণে ভক্তদের রক্ষার্থে দুর্যোগ ও শত্রুবিনাশে সুদর্শনচক্র পাঠানো হয়। ✔️ সমুদ্র মন্থনের সময় দেবতাদের রক্ষায়ও এট...

সাত বারের বার-দেবতা: হিন্দু পুরাণে সপ্তাহের দিনভিত্তিক দেবতা পূজা ও তাৎপর্য

ছবি
  ✨ সাত বারের বার-দেবতা ✨ একবার তারাপীঠে এক বয়োবৃদ্ধ সাধকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। আমার লেখা বই “তান্ত্রিক ও তন্ত্রসাধনা” বইয়ের প্রথম ভাগে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করেছি। আমি তাঁর কাছে 'কুলকুণ্ডলিনী' সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ঋকবেদ, শতপথ ব্রাহ্মণ, মহাভারত ও রামায়ণের উদাহরণ টেনে বলেছিলেন— ঋকবেদে ৩৩ জন দেবতার কথা বলা আছে, যাঁরা পরবর্তীতে কথকতা ও পৌরাণিকে তেত্রিশ কোটিতে পরিণত হয়েছেন। দেবতাদের শ্রেণীবিভাগ (৩৩ জন) ১২ আদিত্য — অর্যমা, বরুণ, মিত্র, ইন্দ্র, বিষ্ণু প্রমুখ ১১ রুদ্র — ত্র্যম্বক, শম্ভু, ঈশ্বর প্রমুখ ৮ বসু — সোম, সবিতা, অনল, অনিল প্রমুখ + ইন্দ্র ও প্রজাপতি = ৩৩ সংস্কৃতের ‘কোটি’ মানে শুধু কোটি সংখ্যা নয়, ‘ধরণ’ বা ‘প্রকার’। তাই তেত্রিশ কোটি দেবতা = তেত্রিশ প্রকার দেবতা। 🌸 সপ্তাহের প্রতিদিনের দেবতা 🌸 ☀️ রবিবার — ভগবান সূর্য ভক্তরা বিশ্বাস করেন সূর্য স্বাস্থ্য, শক্তি ও সমৃদ্ধি দেন। লাল পোশাক ও লাল ফুল অর্পণ করুন। উপবাসে পেঁয়াজ-রসুন পরিহার করুন। 🌙 স...

স্কন্দপুরাণে শিবতীর্থের মাহাত্ম্য ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

ছবি
  স্কন্দপুরাণে শিবতীর্থের মাহাত্ম্য (সূত্র: স্কন্দপুরাণ, কাশীখণ্ড, পূর্বার্ধখণ্ড, ৩৩.৩১-৩৪) 📖 শাস্ত্রীয় বর্ণনা ত্রিভুবন তথা ভূলোক, অন্তরিক্ষলোক এবং স্বর্গলোকের মধ্যে যত তীর্থ আছে, তার মধ্যে প্রধান এই তীর্থ শিবতীর্থ নামে খ্যাত হবে। শিবশব্দার্থজ্ঞ পণ্ডিতেরা বলেন— শিব মানে জ্ঞান । এই তীর্থে ভগবান শিব নিজ মহিমায় সেই জ্ঞানকে জলের মধ্যে দ্রবীভূত করেছেন। এজন্য এই তীর্থ ত্রিলোকে ‘জ্ঞানোদ’ নামে প্রসিদ্ধ হবে। এই কুণ্ডতীর্থ দর্শন করলে সর্বপাপ মোচন হয়, স্পর্শ করলে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল লাভ হয়, আর আচমন ও পানে রাজসূয় ও অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল প্রাপ্ত হয়। ফল্গুতীর্থ, পুষ্কর বা কুরুক্ষেত্রের সমতুল্য ফল এখানে সহজেই পাওয়া যায়। এমনকি বৃহস্পতিবার, পুষ্যানক্ষত্রযুক্ত শুক্লপক্ষীয় অষ্টমীতে ব্যতীপাতযোগ হলে এই কুণ্ডতীর্থে শ্রাদ্ধ করলে গয়ার শ্রাদ্ধ অপেক্ষা কোটি গুণ ফল লাভ হয়। 🌊 তীর্থস্নানের মাহাত্ম্য এই তীর্থে স্নান ও শ্রাদ্ধ করলে পিতৃলোকের মুক্তি ঘটে। অষ্টমী ও চতুর্দশীতে উপবাস করে প্রভাতে স্নান করলে হৃদয় শিবময় হয়ে ওঠে। একাদশ...