পোস্টগুলি

ঈশ্বর_ভাবনা লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ঈশ্বরের চিঠি —গদ্য কবিতা (পর্ব-৮)

ছবি
  💌 গদ্য কবিতা – পর্ব-৮ ঈশ্বরের চিঠি প্রিয় মানুষ, আমি জানি, তুমি অনেক ব্যস্ত। জীবনের দৌড়ে তুমি কখনো কাঁদো, কখনো হাসো, কখনো পাপ করো, কখনো প্রেমে পড়ো। আমি সব দেখি, তবু চুপ থাকি। তুমি ভাবো আমি দূরে আছি— আকাশে, মিনারে, বা কোনো ধর্মগ্রন্থে আটকে। অথচ আমি আছি তোমার ভিতরে, যখন তুমি চুপ করে কারও কাঁধে হাত রাখো, কিংবা মা'র কপালে একটু তেল মেখে দাও। তুমি প্রার্থনা ভুলে গেছ? কোনো ক্ষতি নেই। আমি তোমার কান্নার ভাষাও বুঝি। তুমি হয়তো পাপ করেছ, তাও আমি তোমাকে ত্যাগ করিনি। আমি প্রতিদিন অপেক্ষা করি— তুমি একবার নিজেকে ক্ষমা করো, তাহলেই আমিও ক্ষমা করব। তুমি যদি ভাবো, আমি শাস্তির ঈশ্বর— তবে তুমি আমাকে চিনোনি। আমি ভালোবাসার ঈশ্বর। আমি চাই তুমি ভেঙে পড়ো না, জেগে উঠো। তুমি যদি কখনো একা অনুভব করো, চোখ বুজে আমার নাম নিও না, বরং তাকাও আয়নায়— আমি তোমার মাঝেই আছি, কণ্ঠে নয়, হৃদয়ে আমার বসবাস । ভালো থেকো, মানুষ হও, বাকিটা আমি আছি। —তোমার ঈশ্বর ...

ঈশ্বর কি ক্ষমা করেন? গদ্য কবিতা (পর্ব-৭)

ছবি
  🙏 গদ্য কবিতা – পর্ব-৭ ঈশ্বর কি ক্ষমা করেন? আমরা ভুল করি, প্রতিদিন। মাঝে মাঝে জানি, তবুও করি। আবার অনেক সময় অজান্তেই হেঁটে ফেলি অপরাধের পথে। তখন প্রশ্ন জাগে— ঈশ্বর কি ক্ষমা করেন? তুমি বলো— “তওবা করো, ক্ষমা মিলবে।” সে তো নিয়ম। কিন্তু তুমি কি জানো, একজন কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়া পাপীর বুকেও ঈশ্বর এসে হাত রাখেন? আমার ঈশ্বর শাস্তির আগে বোঝান, ধ্বংসের আগে ডাকেন ফিরে, আর যখন কেউ ভেঙে পড়ে নিজের ভেতরেই, তখন ঈশ্বর এসে বসেন তার পাশে। তুমি বলো, ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ। আমি বলি, তিনি ক্ষমাশীল । আমার ঈশ্বর শাস্তি দিতে ভয় পান না, তবে তিনি অপেক্ষা করেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত— যদি আমি নিজেই বুঝি, আর নিজেকেই ত্যাগ করি। তুমি মন্দিরে, মসজিদে, গির্জায় মাথা ঠেকাও। আমি একা ঘরে ঈশ্বরকে বলি— “আমি ভুল করেছি, নিজেকে আর সেই ভুলের কাছে ফেরত পাঠাব না।” এবং আমি জানি, তিনি শুনেন। কারণ ঈশ্বর রক্ত চান না— তিনি চান অনুশোচনা। আর যেখানে অনুশোচনা আছে, সেখানেই তাঁর ক্ষমা জেগে ওঠে — ধীরে ধীরে, নিঃশব্দে, প্রেমে। তাঁর কাছে ...

ঈশ্বরকে যদি কাছে পেতাম— গদ্য কবিতা (পর্ব-৬)

ছবি
  🪔 গদ্য কবিতা – পর্ব-৬: ঈশ্বরকে যদি কাছে পেতাম… ঈশ্বরকে যদি কাছে পেতাম, জিজ্ঞেস করতাম— এত কষ্ট দিয়ে কেন পাঠালে? ভাঙা ঘর, অনাহারী শিশু, বৃদ্ধ মায়ের কাঁপা হাত এসব কি তোমার ইচ্ছার ফল? আমি হয়তো কাঁদে ফেলতাম, তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে বলতে চাইতাম— “তুমি কি দেখো না? তোমার নামে কত হত্যা, ঘৃণা, দ্বন্দ্ব?” ঈশ্বরকে যদি কাছে পেতাম, একটিবার জড়িয়ে ধরতাম তাঁকে বলতাম— "তুমি কি জানো, তোমাকে না দেখতে পেয়ে কত রাতে ঘুম আসেনি?” আমি চাইতাম না সোনার মন্দির, চাইতাম না কোনো ধর্মের প্রমাণ, শুধু একটা হাত রাখতেন আমার কাঁধে আর বলতেন, “আমি আছি, পাশে আছি।” ঈশ্বরকে যদি কাছে পেতাম, বলতাম— “চলো, একদিন পথে হাঁটি, দেখো কত মানুষ তোমায় ডাকে কিন্তু কেউ পায় না— কেবল ঘরভরা নিয়ম আর ভয়!” আমি তাঁর চোখে চোখ রেখে বলতাম, “ভালোবাসা শেখাও, ভয় নয়। মানবতা শেখাও, ধর্ম নয়। কারণ তুমি যদি ঈশ্বর হও, তবে তোমার প্রথম নাম হওয়া উচিত— ভালোবাসা ।” — নিতাই বাবু নিতাই বাবু পুরস্কারপ্রাপ্ত নাগরিক সাংবাদিক – ২০১৭। লেখালেখির শুরু শৈশবে, এখনো চল...

ঈশ্বর কি ভয় পান? গদ্য কবিতা (পর্ব-৫)

ছবি
  🕯️ গদ্য কবিতা – পর্ব-৫: ঈশ্বর কি ভয় পান? তুমি বলো— ঈশ্বর সব কিছু জানেন। তাহলে তিনি ভয় পান কিসে? নারীর খোলা চুলে? প্রেমের আলিঙ্গনে? নাকি নিরীহ কার্টুনের তুলিতে আঁকা এক চেহারায়? আমি শুনি, কেউ কেউ বলে ঈশ্বর নারাজ হন হাসিতে, রেগে যান স্বাধীন চিন্তায়, অপমান বোধ করেন— প্রশ্নে! ঈশ্বর কি এতটাই দুর্বল যে তাঁর ভক্তের ঠোঁট থেকে নামটা সরে গেলেই কাঁপে? তাঁকে যে ভালোবাসে না— সে কি চিরদিন দগ্ধ হবে? তাহলে সে ঈশ্বর নয়, ভয়ভীতির একটা নামমাত্র তলোয়ার! আমি বিশ্বাস করি, ঈশ্বর ভয় পান না, তিনি চান— মানুষ মুক্ত থাকুক, ভালোবাসুক, প্রশ্ন করুক, তাঁকে খোঁজে হৃদয়ে, রক্তে, জীবনে— কোনো বাধ্যতায় নয়। ঈশ্বর কি ভয় পান? না, আমি বলি— ভয় পান আমরা, তাই ঈশ্বরের নামে বানিয়ে ফেলি দেয়াল, পড়াই ভয়, বানাই ধর্ম, আর ভুলে যাই— ঈশ্বর আসলে ভালোবাসা। — নিতাই বাবু নিতাই বাবু পুরস্কারপ্রাপ্ত নাগরিক সাংবাদিক – ২০১৭। লেখালেখির শুরু শৈশবে, এখনো চলছে। মূলত সমাজ, সংস্কৃতি, স্মৃতিচারণা ও ছন্দনিবদ্ধ রচনায় আগ্রহী। ভ...

তোমার ঈশ্বর, আমার ঈশ্বর — গদ্য কবিতা (পর্ব-২)

ছবি
  🕊️ গদ্য কবিতা: তোমার ঈশ্বর, আমার ঈশ্বর – পর্ব-২ তোমার ঈশ্বর সিংহাসনে বসে বিচার করেন, আমার ঈশ্বর ভেজা মাটিতে হাঁটেন খালি পায়ে। তুমি বলো— "ঈশ্বরের ভয় কর" , আমি বলি— "তাঁকে ভালোবাস" । কারণ ভালোবাসা শাস্তির চেয়ে বড়, আর ভয় কখনো প্রার্থনার ভাষা হতে পারে না। তোমার ঈশ্বর শুধুই পুরুষ, আমার ঈশ্বর কখনো মা, কখনো মেয়ে, কখনো শ্রান্ত নারীর বুকের নিঃশ্বাস। তুমি বলো— “এটা ধর্মবিরোধী” , আমি বলি— “মানুষবিরোধী কিছুই ধর্ম হতে পারে না” । তোমার ঈশ্বর শুধু পবিত্র স্থানে থাকেন, আমার ঈশ্বর থাকেন বস্তির ধারে, কুড়িয়ে পাওয়া খাবারে যার মুখ ভরে ওঠে। তুমি ভেবো, আমি ঈশ্বরবিরোধী— কারণ আমি মূর্তি দেখি না, কাবার দিকেও ফিরি না, শুধু বিশ্বাস করি, যেখানে চোখে জল, সেখানেই তাঁর সিংহাসন। তোমার ঈশ্বর যুদ্ধের পাশে দাঁড়ান, আমার ঈশ্বর গুলির শব্দে কাঁপেন। তুমি বলো — ঈশ্বর আমাদের পক্ষ নেন, আমি বলি — ঈশ্বর শুধু মানুষ খোঁজেন। আমার ঈশ্বর কিছু বলেন না, কিন্তু আমি জানি— তিনি শুনেন সেই মায়ের কান্না, যা...