পোস্টগুলি

বৌলতলি-বাজার লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মেয়ের বাড়ি করপাড়ায়

ছবি
সবুজ ছায়া ছুঁয়ে আসে, বৌলতলি বাজার পেরিয়ে— করপাড়ার পথ ধরে হাটছি, যেন গ্রামজীবনের গভীর এক বয়ে যাওয়া গান। এক পাশে কলাপাতা নড়ে, চুপিচুপি বলে যায় গল্প, অন্য পাশে ধানক্ষেতের হাসি মাঠের বুক ভরে দেয় স্বপ্ন। এই পথে কতদিন হেঁটেছে পা, মাঠের ছেলে, স্কুলের মেয়ে, কখনো বর্ষায় কাদামাখা, কখনো শরতে রোদে ভেজা। বোলাকর বাজারের ডাক, দূরে বাজে যেন শালিকের গান, এই পথ শুধু রাস্তা নয়— এ এক মায়ার টান। গোধূলি নামলে গাছেরা কাঁপে, হাওয়ার সাথে বাজে বাঁশির সুর, এই করপাড়ার শান্ত ছায়াপথ আমার হৃদয়ের উর্বর থির। ভূমিকা গ্রাম মানেই একটানা চলতে থাকা প্রাণের ছন্দ— সবুজ গাছ, পাখির ডানা, মাঠের বুকজুড়ে বাতাসের পরশ। আমার জন্মভূমি গোপালগঞ্জের করপাড়া গ্রাম— যেখানে বৌলতলি বাজার থেকে শুরু হয়ে একটি সরু পিচঢালা রাস্তা এগিয়ে চলে মাঠের পাশ দিয়ে, গাছের ছায়া পেরিয়ে, মানুষের চেনা মুখ, হারিয়ে যাওয়া গন্ধ আর ফেলে আসা দিনগুলোর মতো এক অনুভব বয়ে নিয়ে। এই পথ শুধু যাত্রার মাধ্যম নয়, এ পথ আমার শৈশবের সঙ্গী, আমার নীরব ভালোবাসা, আমার স্মৃতির রঙিন রেখা। এই করপাড়ার পথকে ঘিরেই রচিত হয়েছে একটি কবিতা— যার প্রতিটি শব্দে মিশে আছে মাটি, গন্ধ, ছায়...

স্মৃতির পাতায় অঞ্জলি বিশ্বাস

ছবি
স্মৃতির পাতায় অঞ্জলি বিশ্বাস সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই ফিকে হয়ে যায়, কিন্তু কিছু মুখ, কিছু হাসি, কিছু স্বপ্ন থাকে মনে গেঁথে—আজীবন। বৌলতলি বাজারের অঞ্জলি বিশ্বাস তেমনই এক মুখ। সে শুধু একটি মেয়েই নয়, সে এক সম্ভাবনার প্রতীক, এক মাটির কাছাকাছি থাকা ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি। এই কবিতায় অঞ্জলিকে স্মরণ করা হয়েছে একজন স্বপ্নবান কিশোরী হিসেবে—যার হাঁসিতে, কথায়, আর চলাফেরায় মিশে থাকে গ্রামের সহজ-সরল জীবনের সৌন্দর্য। এই কবিতাটি তার জন্যই—আমাদের স্মৃতির পাতায় অক্ষয় হয়ে থাকুক সেই মুখ।               অঞ্জলি বিশ্বাসের জলরঙ প্রতিকৃতি একদিন অনেক বছর পরে, যখন দিনের আলো কিছুটা কমে আসবে, যখন আমরা অতীতের পাতাগুলো উল্টে দেখব— তখন এক কোমল মুখ মনে পড়বে বারবার। সে মুখে ছিল মায়ার ছায়া, চোখে ছিল বিস্ময়ের দীপ্তি। সে মুখ—অঞ্জলি বিশ্বাস। বৌলতলি বাজারের সরু গলিতে যেখানে দুধওয়ালার সাইকেল সকালে ঘণ্টা বাজাত, সেই পথে হেঁটে স্কুলে যেত অঞ্জলি। পিঠে বইয়ের ভার, মনে স্বপ্নের দিগন্ত। সে ...

বৌলতলির হাটের দিন

ভূমিকা : বাংলার গ্রামীণ জীবনের নান্দনিক রূপ ফুটে ওঠে তার হাটবাজারে, যেখানে শুধু বাণিজ্য নয়—প্রকাশ পায় জীবন, সম্পর্ক ও সংগ্রামের গল্প। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কুমার নদীর তীরে অবস্থিত বৌলতলি বাজার এমনই এক প্রাণময় আবহ তৈরি করে সপ্তাহে দু’দিন—সোমবার ও শুক্রবার। বাঁশ, কাঠ, মাছ, চাল, শাকসবজির পাশাপাশি এখানে বিক্রি হয় নারীর ঘাম, পরিবারের স্বপ্ন আর গ্রামের স্বাবলম্বিতা। এই বাজার শুধু পণ্য নয়, তুলে ধরে এক সামাজিক রূপান্তরের চিত্র, যেখানে গ্রামের নারী এখন শুধু গৃহস্থালির গণ্ডিতে আবদ্ধ নন—তিনি বিক্রেতা, উদ্যোগতা ও পরিবার রক্ষার অন্যতম স্তম্ভ। বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কুমার নদী যেন সাক্ষী হয়ে থাকে এই সবজীবনের।               বৌলতলির হাটের দিন বৌলতলির হাটে আজ উঠেছে ভোর, কুমার নদীর ঢেউ বলে — "এসো গোর!" নৌকায় মাল, বাঁশের ছাউনির ঘর, গ্রামের মাটি জাগে, বাজে জীবন সুর। সোম ও শুক্রবার — দুই দিনের ডাক, হাট বসে যেন প্রাণের আলোক, বউ-ঝিরা সব আজ দোকানদার, তাঁদের মুখে হাসি, হাতে সংসার। বাঁশ কেটে সাজায় নতুন গৃহপথ, চালের বস্তা, পিঁয়াজ, মাছের গন্ধ, লাল-নীল চটের নিচে পণ্য সাজানো, মাটি...