পোস্টগুলি

বিদায়ের আগে যা বলতে চাই

ছবি
  🌫️ বিদায়ের আগে যা বলতে চাই — একজন ক্ষণজন্মা পথিক আমি বুঝি… এই পৃথিবীতে আমার সময় ফুরিয়ে আসছে ধীরে ধীরে। বাতাসে আজ কেমন এক বিদায়ের গন্ধ, বুকের ভিতর দীর্ঘশ্বাস, সময়ের ভারে চুপচাপ। প্রভু পাঠিয়েছিলেন আশায়, মানুষের মাঝে মানবতা ছড়াতে, ভালোবাসা দিতে, আঁধারে আলো জ্বালাতে। কিন্তু পারিনি সে পথে পুরোপুরি চলতে— থেমেছি মাঝে মাঝে, হে মহান স্রষ্টা, তোমার কাছে আজ তাই নিঃশব্দ ক্ষমা প্রার্থনা। আমি বলতে চাই— বন্ধুরা, সহযাত্রীরা, যারা পাশে ছিলেন নীরব ছায়ার মতো, তোমাদের ভালোবাসি, আজীবনের মতো। যদি কোনো দিন ভুলে কষ্ট দিয়ে থাকি, মাফ করে দিও—এই হৃদয়ের খোলা চিঠি পাঠ করে। আমি তো নিভে আসা প্রদীপ, তবু চাই, একটুখানি আলো তোমার কোনো অন্ধকার ঘরে পৌঁছাক। জীবন আমাকে শিখিয়েছে— প্রার্থনার চেয়ে ক্ষমা বড়, ঐশ্বর্যের চেয়ে করুণাই মহৎ, আর ভালোবাসার চেয়ে পবিত্র কিছু নেই। তাই… শেষ ক’টি দিনে আমি শুধু চাই বলতে, ভালোবাসুন মানুষকে— তার মতভেদ, বিশ্বাস, ব্যর্থতা নিয়েই। ক্ষমা করুন—ভুলগুলো হোক হৃদয়ের ঘামে ধুয়ে যাওয়া। ধরুন হাত—কারণ একা একা কেউই পারবে না বাঁচতে। আর যদি এই লেখাটুকু পড়েন— জা...

শেষ ক'টি দিনে যা বলতে চাই

ছবি
  শেষ ক'টি দিনে যা বলতে চাই একটা সময় আসে, যখন মানুষ থেমে দাঁড়ায় নিজের ছায়ার মুখোমুখি। আজ আমি তেমন এক মুহূর্তে পৌঁছেছি। জানি না আর কতটা সময় আছে হাতে, কিন্তু হৃদয়ের গভীরে অনুভব করছি—আমি হয়তো এই সুন্দর পৃথিবীতে আর বেশিদিন নেই। মহান সৃষ্টিকর্তা হয়তো অনেক আশা নিয়ে আমাকে এই দুনিয়ায় পাঠিয়েছিলেন—এই পৃথিবী, এই সমাজ, এই দেশের মানুষের জন্য কিছু করবো বলে। আমি চেষ্টা করেছি। কখনো কলম দিয়ে, কখনো কথা দিয়ে, কখনো নীরবতা দিয়ে সমাজকে বোঝাতে চেয়েছি আমার মনের কথা। তবুও আমি জানি, অনেক কিছুই করতে পারিনি। অনেক সময় ব্যর্থ হয়েছি, পিছিয়ে গেছি, ক্লান্ত হয়েছি। হয়তো সাহস ছিল না, সুযোগ ছিল না, অথবা ছিল না পাশে থাকার মতো কেউ। আজ আমি হাতজোড় করে ক্ষমা চাই—মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে, এই সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছে। আমি চাই, আমার এই শেষ ক'টি দিন যেন হয় কিছু দেওয়ার, কিছু জানানোর, কিছু ফিরে পাওয়ার। আমি চাই, আমার লেখা—আমার অনুভব—আমার কথাগুলো থেকে কেউ যদি একটিবার থেমে ভাবে, তাহলেই আমি সার্থক। জানি, এই পৃথিবী চলে যাবে নিজের ছন্দে। আমি থাকি বা না থাকি, নদী বইবে, পাখিরা গাইবে, রোদ ঝরে পড়বে জানালায়। আমি শুধু ...

শ্মশানের জীবন্ত

ছবি
  🖤 কবিতা: শ্মশানের জীবন্ত শ্মশানের জীবন্ত জীবিত, অথচ মৃতের বেশে — ভয়ানক এক অভিনয়! প্রাণের ভেতর প্রাণহীন দেশ, হৃদয়ে নীরব মৃত্যুর জয়। শেষকৃত্যের গন্ধ বাতাসে, চেতনায় অন্ত্যেষ্টির গান, জাগ্রত এক সমাধি দেহে, জীবন-মরণ একাকার জান। আত্মার শবযাত্রা চলে নীরবে, প্রহর গুনে বিষণ্ন দিন, ছায়ার মতো হেঁটে চলে, নিঃশব্দ শোকের এক কঠিন কিনারায়। আলো হারায় অন্ধকারে, নিভে যায় প্রাণের দীপ, আশার প্রদীপ চূর্ণ হয়ে পড়ে, অন্তরে বিষণ্ন রূপ। তবুও বেঁচে থাকা এক অভিশাপ— যেন শ্মশানের জীবন্ত ছায়া, জীবনেরই অন্তিম চাপ। নিতাই বাবু পুরস্কারপ্রাপ্ত নাগরিক সাংবাদিক — ২০১৭ সাহিত্য, সমাজ এবং সৃজনশীলতায় তাঁর পদচারণা ব্যাপক। নিয়মিত লেখেন ব্লগ, কবিতা ও সমাজ ভাবনার নানা বিষয়ে।

দুঃখের ছায়া

ছবি
  🖤 দুঃখের ছায়া নীরব রাতের কান্না শুনি, চাঁদের আলোয় ভেজে ধূনি। হৃদয় জুড়ে জমে ব্যথা, কেউ বোঝে না, রাখে না কথা। ভাঙা স্বপ্ন কাঁচের মতো, পায়ে লাগে, রক্ত ঝরতো। হাসির আড়াল বিষাদ ভরা, জীবন যেন নিঃশ্বাস ধরা। বন্ধ জানালায় চেয়ে থাকি, আলো আসে, ছুঁয়ে না মাখি। স্মৃতিরা আসে, বসে পাশে, বলে, “তুমি একা নও আশে।” ছোট্ট কিছু কথা, হারানো গান, ভেসে আসে দূর অতীতের প্রাণ। একটি চিঠি, একটি ছবি, ভালোবাসা ছিল, আজ শুধু রবি। মায়ের মুখ, বাবার ছায়া, বন্ধুর হাসি, প্রেমের মায়া। সবই যেন স্বপ্নের মতো, জেগে উঠি, নেই কেউ ততো। দুঃখ আমার সাথী হয়ে, চলে দিন, রাতের ছোঁয়ায়। সে-ই জানে, কতটা কাঁদি, সে-ই বোঝে, কতটা ভাঙি। তবু আশার আলো জ্বলে, একটি নাম, একটি ছলে। ভবিষ্যতের একটুখানি রঙ, দুঃখের মাঝে স্বপ্নের ঢঙ। আমি লিখি, আমি গাই, ব্যথার মাঝে শান্তি পাই। দুঃখ যদি বন্ধু হয়, তবে সে-ই তো হৃদয়ের জয়। ✍️ লেখক পরিচিতি: নিতাই বাবু পুরস্কারপ্রাপ্ত নাগরিক সাংবাদিক — ২০১৭ ব্লগ ডট বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম 📚 আরও পড়ুন: 👉 জীবনের ঘটনা | নিতাই বাবু ব্লগ | ...

গদ্য কবিতা: এখনো বেঁচে আছি…

ছবি
  ✍️ গদ্য কবিতা: "এখনো বেঁচে আছি…" লেখক: নিতাই বাবু আমি এখনো বেঁচে আছি… কারণ, এখনও অনেক কিছু দেখা বাকি। দেখেছি আগুনে পুড়তে বাংলার মাটি, রক্তে ভেসে যেতে সরু খাল আর কাঁচা পথ। দেখেছি মা-বোনের আর্তনাদে কেঁপে উঠতে আকাশ, সেই আকাশ এখনো মাথার ওপর। আমি ছিলাম ছোট, তবুও চোখে আঁকা সব দৃশ্য— নির্মমতা, নির্যাতন, ভয়ের ছায়া, বুকে গেঁথে আছে এখনো। আজ দেখি আরেক রূপ, দ্রৌপদীর বস্ত্র হরণ আজও চলে... তফাৎ শুধু—আজ হানাদার বিদেশি নয়, আজকের রক্তচক্ষু আমাদেরই কাঁধে ব্যাজধারী! আজ যারা চালায় গুলি, ফাটায় বোমা, তারা আমাদেরই রক্ত। আজ যাদের হাতে পঙ্গু হয় যুবক, তাদের ডান হাতে জাতীয় পতাকা, বাম হাতে রাইফেল! কী নিদারুণ ব্যথা! যে স্বাধীনতার জন্য ত্রিশ লক্ষ প্রাণ, লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম উৎসর্গ, আজ সেই দেশের বুকে গর্জে ওঠে রাষ্ট্রীয় বর্বরতা। আরো কষ্ট হয় যখন দেখি— আমাদেরই পাশের বাড়ির লোকটা, দুধেভাতে বড় হওয়া ছেলেটা, হিংসার চোখে মিছিল দেখে, চুপচাপ সহযোগিতা করে দমনযন্ত্রকে। ঠিক যেমন ১৯৭১-এ— আমাদেরই কিছু মানুষ হয়েছিলো সহিংসতার বন্ধু। তখন শত্রু ছিল বাইরে, এখন শত্রু আমাদের ভিতরে। দেখেছি ২০২৪ সালে ...

অক্ষরের মেলা

ছবি
  📚 অক্ষরের মেলা 📚 ✍️ স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের ছড়া আ -কে বলে আদর করে, আ -কারেতে নামটা ধরে। ই-উ এসে দেয় যে হাসি, ঋ বলে, “আমিও আসি!” এ -ও আছে, ঐ -ও পরে, ও -ও বলে, “আমি থাকি পড়ে!” ঔ নাচে ঢেউয়ের তালে, স্বরবর্ণ থাকে লেখার জালে। কিন্তু দেখো, ব্যঞ্জন দল , আটত্রিশ জনের একটাই বল! ক–খ গ–ঘ , হায় রে ভাই, চ–ছ জ–ঝ , বলে উপায় নাই! ট–ঠ ড–ঢ টানাটানি, ত–থ দ–ধ শোনায় মধুর বাণী। প–ফ ব–ভ দারুণ রাগে, ম–য র–ল কেন আগেভাগে? শ–ষ–স একসাথে হাঁটে, হ বলে, “আমিও আছি পাঁটে!” ক্ষ–ত্র–জ্ঞ জটিল বটে, তবুও তারা চলে একজোটে! স্বর আর ব্যঞ্জন মিলে, শব্দের পিঠে ছন্দ গিলে। বাংলা ভাষা বাজে হৃদয়তারে, গল্প বলে সুখে-দুঃখে, ছন্দ-সঞ্চারে। ✍️ লেখক: নিতাই বাবু 🏅 পুরস্কারপ্রাপ্ত নাগরিক সাংবাদিক – ২০১৭ 🌐 ব্লগ ডট বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম 🔗 শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সঙ্গে: Facebook Twitter WhatsApp Email

কেউ এগিয়ে এলো না!

ছবি
  "একটা মানুষও এগিয়ে এলো না!" নিহতের স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন— “এতো মানুষ মিলে একটা মানুষকে মারলো, একটা মানুষও এগিয়ে এলো না…” তার কণ্ঠে কান্না ছিলো, কিন্তু তার কথায় ছিলো এক ভয়ংকর প্রশ্নের দহন। তাঁর স্বামীকে প্রকাশ্যে পাথর দিয়ে হত্যা করা হলো, আর চারপাশে শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে থাকলো— তাকিয়ে থাকলো। কেউ কিছু বললো না, কেউ হাত বাড়ালো না। কেউ প্রতিবাদ করলো না। কেউ সাহস দেখালো না। এখন প্রশ্ন জাগে… এই দেশের মানুষ কী তবে খুনিদের মৌন সমর্থক? নাকি সবাই শুধু নীরব দর্শক? নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকা কি সত্যের পাশে না দাঁড়ানোর অন্য নাম নয়? ভয়ের কাছে আত্মসমর্পণ কি খুনের অনুমোদন নয়? একটি সমাজের ভয়, নির্বাকতা, আর আত্মকেন্দ্রিকতা যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে থামিয়ে দেয়, তখন অপরাধীরা সাহস পায়—আর নিরীহরা প্রাণ হারায়। এই ঘটনায় শুধু একজন মানুষ মারা যায়নি, আসলে আহত হয়েছে আমাদের মানবতা। মারা গেছে নৈতিকতা। চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা সেই শত শত মানুষ— তারা কি সত্যিই নিরাপদ? 🕯️ আমরা কি এক ভয়াবহ নির্লিপ্তির যুগে প্রবেশ করলাম, যেখানে ন্যায়বোধ নেই, প্রতিবাদ নেই, শুধু আছে চোখ, কিন্তু নেই দৃষ্টি...