পোস্টগুলি

আমি লিখতে চাই

ছবি
  লিখতে চাই পৃথিবী নিয়ে… এই বিশাল পৃথিবীতে আমি কেন এলাম — এই প্রশ্নটা বারবার ফিরে আসে। মা-বাবার কোলে জন্ম নিলেও, আমার আসার পেছনে কি শুধু জৈবিক কারণ? না কি কোনো অদৃশ্য হাত আমাকে নামিয়ে দিয়েছে এই মাটির গ্রহে — কিছু শেখানোর, কিছু ভুল শোধরানোর, কিছু ভালোবাসার দায় দিয়ে? এই পৃথিবী — যেখানে নদী আছে, পাখি আছে, কাঁদে মানুষ, হাসে শিশুরা — এত সুন্দর হয়েও এত ভঙ্গুর কেন? কেন এতো হিংসা, যুদ্ধ, লোভ? কেন এত ক্লান্ত দুঃখ জমে থাকে বাতাসে? আমি লিখতে চাই এই পৃথিবীর যত অপূর্ণতা নিয়ে, আবার লিখতে চাই তার অপার সৌন্দর্য নিয়েও — যে সৌন্দর্য আমাকে প্রতিদিন বাঁচিয়ে রাখে। লিখতে চাই সংসার নিয়ে… সংসার — শব্দটা ছোট হলেও, এর ভেতরেই লুকিয়ে থাকে জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। দুজন মানুষ যখন পাশে দাঁড়ায়, তখন শুধু শরীর নয়, দুটি জীবন জড়ায় — আশা, ভরসা, দুঃখ, ক্লান্তি, কষ্ট, স্বপ্ন নিয়ে। সংসার মানে একটা ঘর, কিছু দেয়াল, কিছু ব্যবহৃত বাসন নয় — সংসার মানে একটা পৃথিবী, যেটা গড়া যায় আবার ভেঙেও যায়। লিখতে চাই সেই ঘরবন্দি হাসিমুখগুলো...

ছিলাম প্রকাশ্যে, এখন আলো-আঁধারে

ছবি
  ছিলাম প্রকাশ্যে, এখ আলো-আঁধারে একদিন ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুমটা যেন ছিল কোনো নরম হাতের আশীর্বাদ, শান্তির চাদরে মোড়ানো এক অচেনা যাত্রা। ঘুমের ঘোরে আমি এমন এক স্বপ্নে প্রবেশ করলাম, যেটা আমার পূর্বজীবনের কোনো গল্প নয়—এ যেন ভবিষ্যতের, বা তারও ওপারে কোনো অলিখিত অধ্যায়। স্বপ্নে আমি আনন্দে ভেসে বেড়াচ্ছিলাম। হালকা আলো, শীতল বাতাস, গায়ে গায়ে নরম তরঙ্গের মতো ভেসে আসা হাসির ছায়া—যেন স্বর্গের সীমানায় হেঁটে বেড়াচ্ছি আমি। না কোনো দুঃখ, না কোনো ক্লান্তি, না কোনো সময়ের গলা টিপে ধরা বাঁধন। কেবল প্রশান্তি আর মুক্তির গান। এই অপার্থিব অনুভবের মাঝে হঠাৎই কানে আসে এক কান্নার শব্দ। খুব পরিচিত। ঘরের ভেতরের কেউ যেন কাঁদছে—চিৎকার করে বলছে, "ওঠো না কেন? শুনছো না? আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছো?" আমি চোখ ফেরালাম। দেখি আমারই ঘরের মেঝেতে আমি শুয়ে আছি—নিস্তব্ধ, নিশ্চল। আমার চারপাশে পরিবার, আত্মীয়, প্রতিবেশীরা জড়ো হয়ে কাঁদছে। আমি সবই দেখছি, শুনছি, কিন্তু আমার শরীরে ফিরতে পারছি না। যেন সেই দেহ হয়ে উঠেছে একটি শূন্য ঘর, যার প্রতিটি দরজা-জানালা বন্ধ। আমি অনেক চেষ্টা করেও ভেতরে ঢুকতে পারছি ...

আমি ছিলাম, আমি নেই

ছবি
  আমি ছিলাম, আমি নেই একদিন হঠাৎ, ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে পড়ি গভীর ঘোরে, নির্মল শান্তি, আলোর ভুবন দেখি স্বপ্নে—এক অচেনা চৌরাস্তায়। সেখানে ছিল আনন্দ-ছায়া, মুগ্ধ হাসির নির্জন হাওয়া, ভেসে চলি, গান গাই মনভরে মুগ্ধ স্বর্গের ঘোরে ঘুরে। কিন্তু তখনই কোথাও দূরে, আমার ঘরের কান্না কূলে, স্বজনেরা চিৎকার করে— "ওঠো না কেন? তুমি কি শোনো?" আমি শুনি, আমি দেখি তবু ফিরতে পারি না, আমার ঘুমন্ত দেহখানা শুয়ে আছে নিঃসাড়, নিস্পন্দ। দেহের জানালা-দরজা বন্ধ আত্মা ঢুকতে চায় কিন্তু কান্নার দেওয়াল গেঁথে তারা রচনা করে এক অপার প্রাচীর। আমি অসহায়, অশ্রুমুখে দাঁড়িয়ে থাকি করুণ চোখে, দেখি—আমারই মৃতদেহকে সাদা কাপড়ে মুড়ে, নিয়ে চলেছে তারা। শ্মশানের পথে, হরিবোল বলে তারা দেহ নামায় চিতায়, খড়-জ্বলন্ত আগুনের নিচে আমার দেহ জ্বলে ওঠে ধ্বংসে। আমি তাকিয়ে থাকি—নিঃশব্দ, শ্মশানের বাতাসে, নিঃসঙ্গ ধূপগন্ধে, এক কোণে বসে থাকি মৃত্যুর সাক্ষ্য দিতে দিতে। দিন কেটে যায়, রাতও তেমনি একটি দুটি করে এগারো দিন, আমি থাকি বাইরেই, দেহহীন চিনির মতো গলে যাই ধীরে। ১১তম দিন, পুরোহিত এলো, মন্ত্র পড়ে, শ...

যেই গল্পের শেষ নেই

ছবি
যেই গল্পের শেষ নেই - কবিতা ✨ যেই গল্পের শেষ নেই ✨ ✍️ লেখক: নিতাই বাবু 🪶 ভূমিকা জীবনে কিছু কিছু গল্প থাকে, যেগুলোর শুরু কোথা থেকে তা মনে থাকে না, আবার শেষ কবে হবে—সেটাও কেউ জানে না। সেই গল্পগুলো হয়তো কারো চোখে জল হয়ে ঝরে, কারো ঠোঁটের কোণে হাসি হয়ে ফুটে ওঠে। এই কবিতাটি ঠিক তেমন এক অন্তহীন অনুভবের গল্প , যেটা কোনো এক নীরব বিকেলে শুরু হয়, আর চলে যায় সময়ের সীমানার বাইরেও। এই কবিতা শুধু শব্দের নয়—এটা ভালোবাসার, প্রতীক্ষার, আর মানুষের মধ্যেকার এক নীরব সংলাপ। 🌠 মূল কবিতা 🌅 একটা গল্প শুরু হয়েছিলো একটি নিঃশব্দ সন্ধ্যায়... দিগন্তে তখন শেষ রোদের হালকা আঁচ, পাখিরা ফিরছিলো আপন গৃহে 🕊️। 📖 সেই গল্পের — না ছিলো সূচনা, না ছিলো পরিণতি, শুধু কিছু অনুভূতি, শব্দহীন ভাষা… যা হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়। ❤️ গল্পটা কেমন ছিলো? তোমার-আমার মাঝখানে একটা অলিখিত কবিতা, যেখানে প্রত্যেকটা নিঃশ্বাস একটি করে বাক্য হয়ে জন্ম নেয়। 🌊 প্রতিদিন নতুন একটি পৃষ্ঠা, নতুন আলো, নতুন ছায়া— ...

আনন্দ থাকবে, আমি থাকবো না

ছবি
  ✍️ ভূমিকা: জীবন বড়ই ক্ষণস্থায়ী। আমরা এই পৃথিবীতে এসেছি, থাকি কিছুদিন, আবার হারিয়ে যাই এক নিরব অনন্তের দিকে। অথচ জীবন চলতেই থাকে—সূর্য ওঠে, পাখি গান গায়, ফুল ফোটে, আর মানুষ নতুন স্বপ্নে পথ হাঁটে। তবু কোনো এক গভীর মুহূর্তে আমাদের মনে পড়ে যায়—এই পথেও তো কেউ হেঁটে গিয়েছিল একদিন। এই কবিতাটি সেই হারিয়ে যাওয়া, চলে যাওয়া, এবং থাকবার তীব্র ইচ্ছের এক মর্মস্পর্শী স্বীকারোক্তি। “আনন্দ থাকবে, আমি থাকবো না” —এই পংক্তিতে যেমন সময়ের সত্য উচ্চারিত হয়েছে, তেমনি রয়েছে ভালোবাসা, আত্মঅনুধ্যান ও বেঁচে থাকাকেই উপলক্ষ্য করে যাওয়ার এক তীব্র চেষ্টা। এটি শুধুই একটি কবিতা নয়, এটি এক নিরব আলাপন—জীবনের সাথে, মৃত্যুতে হারিয়ে যাওয়া সমস্ত মুখগুলোর সাথে। 🌌 আনন্দ থাকবে, আমি থাকবো না এই পৃথিবীর আনন্দ থাকবে সারাক্ষণ, আমি থাকবো না—জীবন থামবে কোন গোপনক্ষণ। নিঃশ্বাস হলো অবিশ্বাস, থেমে যাবে যবে, আনন্দ, গান, রং-তামাশা—সব মিলাবে ভবে। সূর্য উঠবে, পাখি গাইবে ভোরের নতুন গান, আমার খালি ঘরে আর ফিরবে না কারো টান। চায়ের কাপ থাকবে, রুমালও থাকবে...

আমরা কী না খাই?

ছবি
  আমরা কী না খাই? আমরা ভাত খাই, মাছ খাই, মাংস খাই, বিস্কুট খাই, রুটি খাই, কলা খাই, ডিম খাই, মামলেট খাই, ভাজি খাই, হালুয়া খাই, পরোটা খাই, পরেরটা খাই, আমরা কী না খাই? আমরা সব খাই! আমরা বুট খাই, বাদাম খাই, চানাচুর খাই, বার্গার খাই, কেক খাই, জিলাপি খাই, নিমকি খাই, মুড়ি খাই, চিড়া খাই, খিরা খাই, কীড়া খাই, কসম খাই, আমরা কী না খাই? আমরা সব খাই! আমরা কচু খাই, লতি খাই, শিম খাই, আলু খাই, পটল খাই, বেগুন খাই, ফুলকপি খাই, বাঁধাকপি খাই, লাউ খাই, কুমড়া খাই, হামলা খাই, মামলা খাই, আমরা কী না খাই? আমরা সব খাই! আমরা পিঠা খাই, মিষ্টান্ন খাই, খই খাই, লাড়ু খাই, পায়েস খাই, সন্দেশ খাই, মিষ্টি খাই, ছানা খাই, দানা খাই, দুধ খাই, দই খাই, নদী খাই, আমরা কী না খাই? আমরা সব খাই! আমরা মাঠা খাই, ঘোল খাই, মাখন খাই, পুরি খাই, সিঙ্গারা খাই, চটপটি খাই, ফুচকা খাই, হালিম খাই, গ্রিল খাই, কাবাব খাই, গোল খাই, দোল খাই, আমরা কী না খাই? আমরা সব খাই! আমরা বেদানা খাই, কমলা খাই, পেস্তা খাই, বড়ই খাই, চড়ুই খাই, তেল খাই, বেল খাই, ঝোল খাই, আম...

দুষ্ট লোকের মিষ্টি কথা

ছবি
  🎭 দুষ্ট লোকের মিষ্টি কথা 🎭 — সমাজের ছলনাবাজ মুখোশধারীদের মুখোশ উন্মোচনের প্রতীকী কবিতা দুষ্ট লোকের মিষ্টি কথা, মনে হয় যেন সুধা, হাসিমুখে ডাকে কাছে, পিছনে থাকে দুধর্ষ বুধা। চোখে চোখে স্বপ্ন বোনে, কানে কানে সুর, বুঝতে যখন চাও ওদের — তখন জ্বলে নূর! মিষ্টি ভাষার জাল বিছিয়ে নয়নে দেয় ঘোর, হৃদয় খুঁড়ে নেয় ধীরে বিনিময়ে দেয় বঁড়। মনের মাঝে রাখে চাবি, চুপে চুপে চুরি, বিশ্বাস করে যারা ওদের, হয় সর্বস্ব হরি। ভালোবাসা দেখায় মুখে, অন্তরে তেজাল ছুরি, সুযোগ পেলে কৌশলে চাপে দিয়ে যায় ধুরি। তারা কাঁদে, তারা হাসে, ভক্তি মাখা ছলে, আসলে খোঁজে স্বার্থ শুধু, ভালোবেসে নয় চলে। তাদের চোখে নকল জ্যোতি, ভবিষ্যতের ধোঁকা, ঘর পুড়িয়ে দেয় নিমিষে, মুখে বলে – "ভালো থাকো।" গুণীজনের অপমান করে, নামে আনে দোষ, নিজেকে সব জানে ভাবে, দেয় না ন্যায়ের তোষ। তাদের হাসি মুক্তার মতো, আছে বিষের ধারা, পারে যারা চিনতে না, তারা হারায় সারা। তাদের কথা মধুর স্বরে মুগ্ধ করে মন, তবু তাতে লুকিয়ে থাকে বিষাক্ত এক দহন। চোখে পড়ে চমৎকার, বক্তব্যে বড়ো ধার, ভেতরে শুধু ফাঁপা স...