পোস্টগুলি

আমার শিক্ষা নেই, তবু আমি লিখি

ছবি
আমার শিক্ষা নেই, তবু আমি লিখি 🎧 এই কবিতাটির অডিও শুনুন আপনার ব্রাউজার অডিও প্লেব্যাক সমর্থন করে না। আমার শিক্ষা নেই, তবু আমি লিখি, ছেঁড়া পানের খোলায়, মায়ের কাঁথায় চিরুনি আঁকি। বর্ণমালা শিখিনি কোনোদিন, তবু অক্ষরের ব্যথা বুঝি — ভাতের চেয়ে না-পাওয়া দিনের হাহাকার যে গভীরতর। প্রাইমারি শেষে হাইস্কুলে যাইনি, গিয়েছি ক্ষেতে, চালের কুড়ো কুড়াতে গিয়ে শিখেছি জীবনের ব্যাকরণ। শীতের রাতে বাবার কাশি, মায়ের চোখে লুকানো লবণের হিসেব, সেগুলোই তো আমার পাঠশালা ছিল। অবশেষে মা মরল ওষুধের অভাবে — ডাক্তার লিখে দিয়েছিল নাম, আমি বুঝিনি, শুধু এত জানি, একটা নাম না-পড়ার শাস্তি চিরজীবন ভোগ করি। আমার শিক্ষা নেই, তবু আমি লিখি — কারণ কষ্টগুলো চুপ করে থাকতে পারে না, ওরা কলম খোঁজে, কাগজ না পেলে দেয়ালের গায়ে উঠে যায়। হৃদয়ের ভিতর জমে থাকা কান্না, একদিন গলেই কালি হয়ে পড়ে, অক্ষর হয়ে ওঠে ভাষা। আমার নাম নেই কোনো খাতা পাতায়, কিন্তু প্রতিদিন আমি ইতিহা...

সৃষ্টিকর্তা একজন

ছবি
✨ সৃষ্টিকর্তা একজন ✨ কতো ধর্মের কতো মানুষ সৃষ্টিকর্তা হলো একজন, ধর্ম হোক ভিন্ন ভিন্ন মানুষ মানুষের আপনজন। তুমি রাজা আমি প্রজা পার্থক্য শুধু এখানে, মৃত্যুর পরে চলে যাবো আমরা সবাই একস্থানে। কেউ খাচ্ছে কোরমা পোলাও কেউ পঁচা পান্তাভাত, কেউ ঘুমায় লেপ তোষকে কেউ জাগে রাত। কেউ থাকে দালান কোঠায় কেউ থাকে রাস্তায়, সবার দিনই যাচ্ছে চলে সবারই রাত পোহায়। আমি গরিব তুমি ধনী রক্তের বর্ণ একরকম, মানবজাতির হাসি কান্না হয়না তো দুইরকম! কেউ বলে আল্লাহ রসূল কেউ বলে ভগবান, কেউ বলে গড ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা বড়ই মহান। ✍️ লেখক পরিচিতি: নিতাই চন্দ্র পাল (নিতাই বাবু) — একজন নিবেদিতপ্রাণ ব্লগার, যিনি bdnews24.com-এর ব্লগ প্ল্যাটফর্মে লেখেন। তিনি সমাজ, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে লেখালেখিতে সিদ্ধহস্ত। তাঁর কলমে উঠে আসে জীবন, যৌবন ও যন্ত্রণার নিখুঁত চিত্র। 📘 ফেসবুকে লেখক: fb.com/srinitai.srinitai ...

পৃথিবীটা গোল

ছবি
🌍 পৃথিবীটা গোল পৃথিবীটা গোল, তাইতো এতো হট্টগোল। চারদিকে চিৎকার, কান্নার রোল, দেশে দশে বাজছে যুদ্ধের ডামাডোল! পৃথিবীটা গোলাকার, তাইতো দেখি চারদিকে হাহাকার। আশ্রয়হীনের আর্তনাদ, ক্ষুধার্তের চিৎকার, স্বদেশহারা শরণার্থীদের বুকফাটা আর্তচিৎকার! পৃথিবীটা ঘূর্ণায়মান, তবু কেন থেমে যায় মানবতার গান? বুকের ভিতর জমে ওঠে শত অভিমান, শান্তির নামে চলে রক্তাক্ত অভিযান। পৃথিবীটা ঘোরে, তবু বাঁচে না কাতর মায়ের চোখের কোণে ঘোরে। ক্ষমতার লোভে গড়ে বন্দুকের পাহাড় চূড়ে, অভাগাদের স্বপ্ন ভেঙে পড়ে মৃত্যু কবরের গহ্বরে। পৃথিবীটা ঘোরে ঠিকই, তবু হৃদয় যেন চিরদিনই অধিকারহীন একদিক! তবু কিছু শিশু আজও গায় নতুন দিনের সঙ্গীত, ভালোবাসা আর মানবতা হোক এই ধরণীর একমাত্র ঐশ্বরিক শক্তি চিরস্থায়ী নীত! ✍️ নিতাই বাবু পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্লগার, কবি ও সমাজসচেতন লেখক। bdnews24 ব্লগ -এ ‘নিতাই বাবু’ নামে লেখালেখি করেন বহু বছর ধরে। তাঁর লেখায় উঠে আসে শৈশব, গ্রামীণ জীবন, নারায়ণগঞ্জ শহর ও শীতলক্ষ্যার আত্মজ স্মৃতি...

বিশ্বে সকল দিবসের সাথে ভিক্ষা দিবস চাই

ছবি
🌍 বিশ্বে সকল দিবস থাকতে ভিক্ষা দিবস নেই কেন? ভালোবাসা দিবস আছে, মা দিবস আছে, বাবা দিবস আছে, শিশুদিবস, নারী দিবস, শ্রমিক দিবস, এমনকি টয়লেট দিবসও আছে! কিন্তু বিশ্বে আজও একটি দিবস নেই, যার নাম হতে পারত ‘বিশ্ব ভিক্ষা দিবস’। ভাবছেন, আমি কি ব্যঙ্গ করছি? হয়তো কিছুটা। কিন্তু প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে—এই পৃথিবীতে যখন প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ অভুক্ত ঘুমায়, যখন শিশুদের হাতে বইয়ের বদলে প্লাস্টিক বোতল আর ভাঙা বাটি, তখন কি ভিক্ষুকদের কথা স্মরণ করার জন্য একটা দিনও বরাদ্দ হতে পারত না? ভিক্ষুক কারা? বস্তুত, ভিক্ষুক মানে শুধু রাস্তার মোড়ে বসে থাকা কাঁপা হাতে পয়সা চাওয়া মানুষ নয়। ভিক্ষুক মানে সেই বাবা, যে সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে না পেরে সমাজের কাছে সাহায্যের হাত বাড়ায়। ভিক্ষুক মানে সেই মা, যে হাসপাতালে বেড পাওয়ার জন্য রাজনৈতিক পরিচয়ের দরজায় দরজায় ঘোরে। ভিক্ষুক মানে সেই পুরো জাতি, যাদের শাসকগোষ্ঠী বৈদেশিক অনুদানের জন্য মাথা নিচু করে বসে থাকে। ভিক্ষা কি লজ্জা, না প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা? আমরা ভিক্ষুকদের দেখি, করুণা করি, অনেকে গালও দিই। কিন্তু কতজন ভাবি, কেন তারা পথে? কতজন ভাবি, এই ...

বাংলাদেশের বিভাগভিত্তিক নদী তালিকা

ছবি
বাংলাদেশে নদীসমূহের পূর্ণাঙ্গ তালিকা বাংলাদেশের বিভাগভিত্তিক নদীগুলোর তালিকা বাংলাদেশে ৮টি প্রশাসনিক বিভাগের প্রায় ৪০০–৭০০ খণ্ড বড় ও ছোট নদী রয়েছে। এখানে প্রতিটি বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর নাম ও প্রাথমিক অবস্থান উল্লেখ করা হলো (আরও বিস্তারিত ~৪০০+ নদীর PDF তালিকার জন্য নিচের পদক দেখুন)। 📍 ১. ঢাকা বিভাগ বুড়িগঙ্গা – ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ধলেশ্বরী – মানিকগঞ্জ, ঢাকা শীতলক্ষ্যা – গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ তুরাগ – ঢাকা আড়িয়াল খাঁ – মাদারীপুর 📍 ২. চট্টগ্রাম বিভাগ কর্ণফুলী – চট্টগ্রাম হালদা – রাউজান, চট্টগ্রাম সাঙ্গু – বান্দরবান মাতামুহুরী – কক্সবাজার 📍 ৩. সিলেট বিভাগ সুরমা – সিলেট, সুনামগঞ্জ কুশিয়ারা – মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ খোয়াই – হবিগঞ্জ 📍 ৪. রাজশাহী বিভাগ পদ্মা – রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহানন্দা – চাঁপাইনবাবগঞ্জ আত্রাই – নাটোর, নওগাঁ বারনই – রাজশাহী 📍 ৫. রংপুর বিভাগ তিস্তা – লালমনিরহাট, নীলফামারী ধরলা – কুড়িগ্রাম দুধকুমার – কুড়িগ্রাম যমুনেশ্বরী – ঠাকুরগাঁও 📍 ৬. খুলনা বিভাগ ...

এই বঙ্গদেশে একটি নদীর নাম শীতলক্ষ্যা

ছবি
এই বঙ্গদেশে একটি নদীর নাম শীতলক্ষ্যা বাংলার মানচিত্রে অসংখ্য নদ-নদীর ছাপ দেখা যায়, আর সেগুলোর প্রতিটিই যেন এই মাটির ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সভ্যতার অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেইসব নদ-নদীর মধ্যে শীতলক্ষ্যা একটি উজ্জ্বল নাম, বিশেষ করে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক শহর নারায়ণগঞ্জ -এর সঙ্গে যার আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে শত শত বছর ধরে। শীতলক্ষ্যার জন্ম ও ইতিহাস শীতলক্ষ্যা নদী একসময়ের প্রবল বেগে প্রবাহিত একটি শাখা নদী, যার উৎস গাজীপুর জেলার টঙ্গী থেকে। এই নদী মূলত ব্রহ্মপুত্রের একটি শাখা। নদীটি টঙ্গী, নারায়ণগঞ্জ হয়ে মেঘনা নদীতে গিয়ে মিশেছে। প্রাচীনকালে একে ‘লক্ষ্যা’ নামে ডাকা হতো, পরবর্তীতে এর শান্ত ও নির্মল প্রবাহের কারণে ‘শীতল’ শব্দটি যুক্ত হয়ে দাঁড়ায় ‘শীতলক্ষ্যা’ । মুঘল আমল থেকে শুরু করে ব্রিটিশ শাসনামল পর্যন্ত এই নদী ছিল বাংলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলপথ । বাণিজ্য, পরিবহন, খাদ্য সরবরাহ ও সৈন্য চলাচলের জন্য শীতলক্ষ্যা ছিল অপরিহার্য। ইংরেজরা এ নদীকে কেন্দ্র করেই নারায়ণগঞ্জে স্থাপন করেছিল পাট গোডাউন, স্টিমার ঘাট ও রপ্তানি কেন্দ্র। এই নদীর দুই তীরে গড়ে উঠেছিল বিখ্যাত পাটকল, বস্ত্রকল, ছাপাখানা ...

একটি মাঠ; হাজারো প্রাণের স্মৃতি

ছবি
একটি মাঠ, হাজারো প্রাণের স্মৃতি সময় বদলায়, মানুষ বদলায়, বদলায় শহরের চেহারাও। কিন্তু কিছু কিছু স্মৃতি থেকে যায় আমাদের ভেতরে অমলিন, যা ফিরে ফিরে আসে জীবন যখন খানিকটা স্থির হয়—ঠিক যেমন ফিরে আসে গোদনাইলের সেই প্রিয় খেলার মাঠের কথা। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১০নং ওয়ার্ডে অবস্থিত এই মাঠটি কেবল একটি খেলার মাঠ নয়—এ যেন হাজারো প্রাণের গল্পগাথা , অসংখ্য শৈশব-কৈশোরের উঠেপড়া আর স্বপ্ন বোনা একটা জীবন্ত ইতিহাস। একসময়কার চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্‌ -এর প্রাণকেন্দ্রে থাকা এই মাঠ আজও বহন করে তার গৌরবময় অতীত। ২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী -র আন্তরিক উদ্যোগে এই মাঠটি সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বে আসে। তারপর থেকেই শুরু হয় ব্যাপক উন্নয়ন—পশ্চিম পাশে বসার সিঁড়ি, মাঠ পাইলিং করে সমতলকরণ, চারপাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা, শতাধিক বৃক্ষরোপণ এবং সন্ধ্যার পরও খেলার জন্য অর্ধশত লাইটপোস্ট স্থাপন—সব মিলিয়ে মাঠটি যেন এক নতুন প্রাণ ফিরে পায়। এই মাঠের ঘাসে গড়াগড়ি খেতে খেতে বড় হয়েছে চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্‌ এলাকার হাজারো ছেলে। কেউ আজ দ...