পোস্টগুলি

আদরের পুসি ও হিন্দুধর্মে বিড়াল সমাচার

ছবি
ছোটবেলা থেকেই কুকুর, বিড়াল, গরু-ছাগল ভালোবেসে আসছি। এই ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত নয়, ঘরের জিনিসপত্র নষ্ট করে ফেলা ইঁদুরও। মাঝে মাঝে দুপুরে কিংবা রাতে ভাত খেতে বসলে নিজে খাওয়ার আগে ঘরের ইঁদুরগুলোর জন্য একমুঠো ভাত বাসার এক কোণে রেখে দিই। রাতে সবাই ঘুমিয়ে গেলে সেই একমুঠো ভাত ঘরের উষ্ণতা খুঁজে বের করা ইঁদুরগুলো মিলেমিশে খেয়ে ফেলে। আবার, রাস্তায় কোনো কুকুর সামনে এলে ওকে খাবার কিনে দিই—কুকুরটা মনের আনন্দে লেজ নেড়ে খায়। বিড়াল সামনে পড়লে তাকেও খাওয়াতে ইচ্ছা করে। কারও গরু-ছাগল দেখলে গিয়ে আদর করি, মাথায় হাত বুলিয়ে দিই। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো—মনের ভেতর পশু-পাখির প্রতি এত ভালোবাসা থাকলেও নিজের কোনো বাড়ি না থাকায় এসব ভালোবাসা প্র্যাকটিকালি পূরণ করা হয়ে ওঠে না। তবুও মাঝেমধ্যে শত ঝামেলা সত্ত্বেও ভাড়া বাসায় কুকুর বা বিড়াল পুষে ফেলি। এইতো কয়েক বছর আগে, ২০১৬ সালে শখ করে একটা কুকুরছানা বাসায় নিয়ে এসেছিলাম, পুষব বলে। ওর নাম রেখেছিলাম “ধলু”। কিন্তু যেহেতু আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী, কুকুর ঘরে আনা নিয়ে সহধর্মিণীর সঙ্গে লাগল তুমুল ঝগড়া! ছিছিছি, রাম রাম, হায় ভগবান—সব শব্দ একসাথে চলতে লাগল! তারপরও দমে যাইনি...

নিজেদের শান্তির জন্য মহান সৃষ্টিকর্তাকে অশান্তিতে রাখা

ছবি
আমার ঠাকুরদার সংসারে সন্তান ছিল মাত্র তিনজন—তিন ছেলে। তাদের মধ্যে যিনি সবার বড়, তিনিই আমার বাবা। আর বাকী দুজন ছিলেন আমার বাবার ছোট ভাই, অর্থাৎ আমার মেজো কাকা ও ছোট কাকা। এখন হয়তো তাঁদের কেউ-ই আর বেঁচে নেই। আমার বাবার সংসারে আমরা ছিলাম ছয় ভাই-বোন—দুই ভাই ও চার বোন। ছোটবেলায় আমাদের মধ্যে হরহামেশাই ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকত। কখনো কখনো সেটা রীতিমতো হাতাহাতিতে গড়াত। বাবা আমাদের থামানোর আপ্রাণ চেষ্টা করতেন। জোর করে আলাদা করতেন, বোঝাতেন, কিন্তু তবুও যখন আমাদের থামানো যেত না, তখন তিনি চুপচাপ বাড়ির উঠোনে বসে পড়তেন। আমি আজও ভুলতে পারিনি সেই দৃশ্য— বাবা কপালে হাত রেখে চোখের জল ফেলে বুক ভাসাতেন। অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলতেন: > “ওরে তোরা ঝগড়া করিস না! আমার ভালো লাগে না! তোদের এই অশান্তি আমি আর সইতে পারছি না! হে দয়াল, আমাকে মৃত্যু দাও!” সেই সময় আমরা, শিশুমনে, বাবার সেই কান্নার গভীরতা বুঝতে পারিনি। কিন্তু আজ, যখন বাবা নেই, বড়দাদা নেই, বড়দিদিও নেই—তখন নির্জনে বসে ভাবি, সেই সময় বাবা কেন কেঁদেছিলেন? বুঝি, তিনি কাঁদতেন আমাদের মধ্যে শান্তি না দেখে, পরিবারের ভেতরে ভাঙন দেখে, ভালোবাসার অভাব দেখে। আজ এই...

ভুটানের একটা জায়গার নাম গুমটু

ছবি
সময়টা তখন ১৯৯৩ ইংরেজি ১৪০০ বঙ্গাব্দ। সেসময় আমি আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাথে ভারত গিয়েছিলাম। গিয়েছিলাম অনেক আশা নিয়ে। কিন্তু সেই আশা আর পূরণ হয়নি। খামোখা দেড়বছর নিজের পরিবারবর্গ থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরেছিলাম। লাভের মধ্যে লাভ হয়েছিল আমার বড়দি’র দেখা পেয়েছিলাম। দিদির বাড়ি খুঁজে পেয়েছিলাম। আমার বড়দি’র বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার বীরপাড়া। বীরপাড়া হলো কোলকাতা থেকে শিলিগুড়ি হয়ে মিজোরাম যাওয়ার পথিমধ্যে। বীরপাড়া ভুটানের পাহাড় ঘেঁষা চা-বাগানের লীলাভূমি জনবহুল একটা জায়গার নাম। আর আমার বড়দি’র বাড়ি হলো, বীরপাড়া এলাকায় রাবিন্দ্র নগর কলোনি। কোলকাতা থেকে বড়দি’র বাড়ি বীরপাড়া গিয়েছিলাম খুবই বিপদে পড়ে। এমনই এক বিপদের সম্মুখীন হয়েছিলাম যে, তখন আমার বড়দি’র বাড়িই ছিলো একমাত্র ভরসা। কিন্তু বড়দি’র বাড়ি ছিলো আমার অচেনা। তবে আমার মনে খুবই সাহস ছিলো এবং অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসও ছিলো। বিশ্বাস ছিলো, একভাবে-না-একভাবে আমি আমার বড়দি’র বাড়ি অবশ্যই খুঁজে বের করতে পারবো। মনের সেই বিশ্বাস নিয়েই একদিন কোলকাতা ধর্মতলা থেকে উত্তরবঙ্গের রকেট বাসের টিকেট নিলাম। তারপর উত্তরবঙ্গের রকেট বাসে চড়ে প্রায়...

সূর্যকে করেছিলাম দুটি প্রশ্ন!

ছবি
🔆 প্রশ্ন ও উত্তর 🔆 মহান স্রষ্টা নিরাকার। আমরা দুই, দু’য়েতে একাকার । শুধু পৃথিবীর মাঝেই দেখি যত হাহাকার ,  অত্যাচার  অবিচার । তা দেখে মহান স্রষ্টা হতবাক নির্বিকার ! তিনি বলে— "জানি না তোমাদের মাঝে কিসের এতো অহংকার !" প্রশ্ন: তুমি কেন পাপি-তাপীদের মাঝে সমানভাবে তোমার আবির মাখা আলো বিতরণ করছো? আমাদের সমাজপতিরা তো তাঁদের ক্ষমতা বলে নিজেদেরই আখের গোছায়। উত্তর: আমার কাজ আলো বিতরণ করা। কে পাপী , কে তাপী , তার হিসাব না করা। পাপ করে যাঁরা সজা পাবে তাঁরা। পূণ্য করবে যাঁরা, সুখ পাবে তাঁরা। আমার কাজ সুষ্ঠু বিতরণ । আমাদের মহান স্রষ্টা করেছে বারণ । কোরো না কারোর অধিকার হরণ । আর তোমারা জীবের সেরা মানুষ হয়েও করছো অসুরের রূপধারণ । বুঝি না এর কী কারণ ! — নিতাই বাবু ✍️ লেখক পরিচিতি: নিতাই বাবু একজন জননন্দিত কবি, ব্লগার ও সমাজসচেতন লেখক। নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রিক নাগরিক সমস্যা, ভাষাচর্চা ও দর্শনভিত্তিক রচনার জন্য তিনি পরিচিত। bdnews24 ব্লগে তাঁর লেখাগুলো পাঠকের মন ছুঁয়ে যায় গভীরভাবে। 📤 শে...

শহরের ফুটপাত

ছবি
ফুটপাত,  কিছুতেই কমছে না হকারদের উৎপাত এতে শত উন্নয়ন-ই হয়ে যাচ্ছে ধূলিসাৎ, পথচারীদের মাথায় পড়ছে বজ্রপাত ফুটপাতের কারণেই যানজটের সূত্রপাত!  ফুটপাত,  শহরের রাস্তা মাত্র কয়েক হাত তারমধ্যে অর্ধেক রাস্তাই ফুটপাত, সরাতে গেলে পেটে লাগে আঘাত কেউ বলে গরিবের উপর কষাঘাত!  ফুটপাত,  তাহলে কীভাবে হবে মুক্ত ফুটপাত? যদি না থাকে বিশিষ্টজনের দৃষ্টিপাত, শহরের উন্নয়ন সৌন্দর্য সবই ধূলিসাৎ  নির্বিঘ্নে হাঁটার বিঘ্ন ঘটাচ্ছে ফুটপাত।  নিতাই বাবু  ৩০/০৪/২০২৩ইং। ছবি নারায়ণগঞ্জ কালীর বাজার সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল ও নারায়ণগঞ্জ কলেজ'র সাননে থেকে।

হৃদয়বিদারক দিনগুলো

ছবি
হৃদয়বিদারক দিনগুলো চোখে জল, মন ব্যথায় ভরা, কেউ আসে না কাছে, কেউ বোঝে না। শূন্যতার অন্তরালে এক অজানা ভয়, প্রতিবেশী স্মৃতির ছায়ায় সব হারিয়ে যায়, সময়ের ধূলোর বুকে ফিকে হয়ে যায়। বিচ্ছেদের ব্যথায় ছিন্নবিচ্ছিন্ন প্রাণ, নিরবতা আজ গানের ভাষা হয়ে বাজে। এত বিষাদের ভার কখনো ভুলে যাবো কী? অবাঞ্ছিত এই দুঃখের সাগরে ডুবি, অন্ধকারে পতিত, হারিয়ে যাই। তবুও কোথাও দূরে জ্বলজ্বল করে আশা, সময়ের কূলে আবার আসবে আলোর প্রভা। তখন হয়তো এই হৃদয়বিদারক দিনগুলো হবে শুধুই স্মৃতি, এক হারানো ছায়ার মতো। — নিতাই বাবু Facebook-এ শেয়ার করুন Tweet করুন ✍️ লেখক পরিচিতি নিতাই বাবু একজন সংবেদনশীল ও অভিজ্ঞ লেখক, যিনি বাংলা ভাষায় জীবন, সমাজ ও মননের গভীর অভিব্যক্তি তুলে ধরেন। তিনি বিডিনিউজ২৪.কম-এর ব্লগ প্ল্যাটফর্মে "Nitai Babu" নামে লেখালেখি করে পাঠকমহলে পরিচিতি পেয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ শহর, শীতলক্ষ্যা নদী ও নিজ শৈশবের স্মৃতি তাঁর লেখার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। 🔗 ...

আমার ছোটবেলা

ছবি
আমার ছোটবেলা ✍️ নিতাই বাবু আমার ছোটবেলা খুব সাদামাটা, খুব চুপচাপ। তাতে ছিল না দামি খেলনা, না ছিল চকচকে জামা। তবে ছিল রোদ, ছিল ধুলা, ছিল ঘামের গন্ধ মাখা একটা জীবন্ত জীবন। ভোরবেলায় মায়ের ডাকে উঠত ঘুম। "তাড়াতাড়ি ওঠ, বাজারে যেতে হবে, বই কিনতে পারবি না তাহলে!" আমি ঘুমচোখে ভাবতাম, বই না কিনলে কী হবে? কিন্তু পরে বুঝেছি, একটা বই মানে একটা দরজা— যে দরজা দিয়ে আমি আমার দারিদ্র্যকে পেছনে ফেলে স্বপ্নের দিকে হেঁটে যেতাম। স্কুলে যেতাম ছেঁড়া ব্যাগ আর পায়ে ছেড়া চপ্পল নিয়ে। বন্ধুরা পেছনে তাকিয়ে হাসত—তাদের হেসে ফেলতে দোষ নেই, কারণ তারা জানত না, আমি বাদামও বেচি, আবার অঙ্কও কষি। তারা দেখত কেবল বাদামের ঝুড়ি, আমি দেখতাম তার ভেতরে লুকানো বইয়ের টাকা। অনেক দিন স্কুলের পেছনের বেঞ্চে বসেছি, তবু কখনও পড়া ছেড়ে দিইনি। যেদিন খাতার পাতা শেষ হয়ে যেত, সেদিন রাস্তার মোড়ে আরও একটু বেশি হাঁটতাম। একটা বাদাম বেশি বিক্রি মানে, একটা পৃষ্ঠা বাঁচানো যায়। ছুটির দিনে যখন অন্যরা খেলত ক্রিকেট, আমি গুনতাম কয়টা বাদাম বাকি আছে ঝুড়িতে। তবু মন খারাপ করিনি, ক...