পোস্টগুলি

খুঁজেছিলাম

ছবি
খুঁজেছিলাম সুখ খুঁজেছিলাম ভোরের শিশিরে, পাখির কূজনে, ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণে— কিন্তু পাইনি শান্তি এক বিন্দুও হৃদয়পটে। পেয়েছি কেবল দুখীর দীর্ঘশ্বাস, পেয়েছি ক্লান্ত আত্মার কান্না নিঃসাড় রাতে। শান্তির মা’কে খুঁজেছিলাম উপবাসে, প্রার্থনায়, বসে ছিলাম ধ্যানস্থ নিস্তব্ধ বিকেলে— কিন্তু নেমে এলো কেবল অশান্তির ঝড়, আমার হৃদয়ের নিভৃত বাগানে। ভালোবাসা খুঁজেছি দুয়ারে-দুয়ারে, কিন্তু ফিরেছি কেবল শূন্যতার হাহাকারে। প্রেমের পিপাসা নিয়ে ঘুরেছি দ্বারে-দ্বারে, দেখেছি সেখানে অভিনয়ের বাজারে তামাশার ঝাড়ে। টাকা-পয়সা খুঁজেছি রাস্তায় রাস্তায়, পেয়েছি কেবল মরিচিকার ধুলো ছড়ায়। ধনসম্পদ খুঁজেছি মহল্লায় মহল্লায়, শেষে হাতে উঠেছে অদৃশ্য ফাঁসির দড়ি—নিভৃতে বালায়! মানুষ খুঁজেছি মানুষের মেলায়, তবু মনুষ্যত্ব পাইনি কোথাও, ছিল শুধু ছায়া! স্রষ্টাকে খুঁজেছি পাথরে, ধূপে, রীতিতে, তিনি ধরা দেননি—শুধু ছিলেন আমার হৃদয়ের গভীর সীমানায়! ✍️ লেখক পরিচিতি: নিতাই বাবু — একজন সাহিত্যনিবেদিত প্রাণ, সমাজসচেতন ও দার্শনিক কবি। তাঁর কবিতায় ফুটে ওঠে মানুষের বেদনা...

আমার বলতে কিছুই নেই

ছবি
আমার বলতে কিছু নেই যতই বলি, “এটা আমার, ওটা আমার”— স্রষ্টা বলেন, “নির্জনে শোনো আমার বারংবার: তোমার কিছুই নয় সত্যিকার! তোমার এই শরীর, তোমার এই প্রাণ, আমারই সৃষ্টি, আমারই দান। শুধু তোমার কর্মের ফলই চিরকাল তোমার।” বাড়ি, গাড়ি, ধন-দৌলত, সবই রবে ধুলোয়, নিঃস্ব আর কোলাহলহীন মৌনতায়। তোমার ‘আমার’ বলার অধিকারে আমি তো দিইনি কোনো স্বীকৃতি কোনো দিন। তোমার ‘তুমি’ও একসময় বিলীন— শুধু কর্ম, শুধু ন্যায়ের দিন-রজনী, সেইটুকুই যাবে তোমার সাথে, বাকিটুকু পড়ে থাকবে নিঃস্পন্দ পৃথিবীতে। তাই বলি, আমার বলতে কিছুই নেই— সবই মহান স্রষ্টার, এই জীবন, এই দেহ, এই শেষ অবধি পথটাও, তাঁরই করুণায় দেয়া উপহার। ✍️ লেখক পরিচিতি: নিতাই বাবু — পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্লগার, সাহিত্যপ্রেমী ও সমাজচিন্তক। লেখালেখির মাধ্যমে সমাজ, দর্শন ও মানবিক মূল্যবোধের কথা তুলে ধরেন। 📘 ব্লগ: নিতাই বাবুর ব্লগ 📤 শেয়ার করুন: 🔵 Facebook 🔷 Twitter 🟢 WhatsApp পাঠকের প্রতিক্রিয়া লেখককে অনুপ্রাণিত করে। আপনার অনুভূতি নিচে মন্তব্যে জানাতে ভ...

মা আমার মা

ছবি
✨ মা আমার মা ✨ মা আমার মা— তাঁকে দেখে মনে হতো, এই পৃথিবী যেন তাঁর মুখের হাসিতে আলোকিত। চোখে ছিল শান্ত এক জ্যোতি, কপালে কুঁচকে থাকত না কোনো অনুশোচনার রেখা— সকল দুঃখ, ক্লান্তি তিনি চেপে রাখতেন হৃদয়ের গভীরে, আমার একটি হাসির জন্য তিনি গোটা জীবনকে সঁপে দিতে পারতেন। আমার মা ছিলেন শুধু ‘মা’ নন— তিনি ছিলেন আমার প্রথম শিক্ষক, প্রথম শাসক, প্রথম বন্ধুও। তিনি শিখিয়েছেন, “ভাত না থাকলেও মনের ভিতরে যেন অভাব না থাকে,” তিনি বলেছেন, “ভালোবাসা হলো সবচেয়ে বড় পুঁজি, আর ক্ষমা—সেই পুঁজির সুদ।” মা আমার মা— তাঁর কপালের ঘাম দিয়েই গড়া ছিল আমাদের সংসার। ভোরবেলা উঠে হাঁড়িতে ভাত বসাতেন, তারপর সারা দিন খাটুনি, মাঠের ধুলো, পিঠের ঘাম— তবুও তাঁর ঠোঁটে থাকত সন্তুষ্টির প্রশান্ত হাসি। বৃষ্টি হলে, তিনি আমার বুকের নিচে হাত রেখে বলতেন, “ঘুমা, বাবা, আমি জাগছি।” তখন আমি ভাবতাম, আমার চেয়ে সুখী কেউ নেই এই দুনিয়ায়। মা আমার মা— তিনি রূপে ছিলেন অপরূপা, কিন্তু রূপের চেয়েও তাঁর মন ছিল আরও মোহময়। অনেকেই তাঁকে বলত, “তুমি চলচ্চিত্রে গেলে তারকা হতে,” কিন্তু মা বলতেন...

শূন্য আমি ধন্য আমি

ছবি
শূন্য আমি, ধন্য আমি শূন্য আমি, ধন্য আমি আজ, নেই আমার কোনো স্থির বাড়ি ঘর, পরের বাড়ি আমার প্রিয় আশ্রয়, নিজের দেহখানাও যেন পরম পর। পর পর সকলই আমার থেকে যায় দূরে, নিজস্ব কিছুই থাকে না সবার মাঝে, ‘আপন’ বলতে কোনো মর্ম নেই জীবনে, কর্মই শুধু আমার একমাত্র বড় আপন। কর্মেই আমার প্রাণের অমল ধারা, কর্মে মিশে আছে আমার জীবনের সারা, কর্ম করতে হয় যতদিন বেলা শেষ, ধর্মে রাখি অটল বিশ্বাস ও ভক্তি। নিশ্বাসে নেই আর কোনো মিথ্যা বিশ্বাস, সততার পথে চলি অটল মনোবল নিয়ে, সততায় খুঁজি মুক্তির অনন্ত আলো, মোহ-মায়ার ঊর্ধ্বে উঠে মুক্তির ঠিকানা। শূন্য আমি, ধন্য আমি নিরন্তর, নিজেকে ভুলে গেছি পরের মাঝে ঘুরে, শুধু কর্মেই খুঁজে পাই স্বপ্নের গান, সেই গানেই আমার মুক্তির সুর বাজে। বাঁচার মানে না আমি খুঁজে নিজেকে, পার হয়ে যাবো এই ক্ষণস্থায়ী ভুবনে, আত্মার দীপ জ্বালাই কর্মের পাথেয় দিয়ে, যাতে মৃত্যুর পরও থাকে আলোর রেখা। শূন্য আমি, ধন্য আমি সত্যের পথে, কর্মের সাধনায় মুক্তির ছোঁয়া পাই, পরের দুঃখের পাশে দাঁড়াই হাত বাড়িয়ে, সত্যের আলোয় আমার জীবন ঝলমল করে। ✍️ লেখক: নিতাই বাবু 🔗 ব্লগ...

হিসাববিহীন এক জীবন

ছবি
❝হিসাববিহীন এক জীবন❞ শূন্য হাতে এসেছিলাম এই অদ্ভুত ভবে, ছিলাম শিশু, কোলে মা, চোখে ছিল জলে আলো। ধীরে ধীরে বড় হলাম কাঁধে বই, বুকে আশা, তরুণ বয়সে স্বপ্ন ছিলো আকাশ ছোঁয়ার পালো। হলো প্রেম, হলো ব্যথা, হলো জীবনের সংগ্রাম, কখনো হাসি, কখনো কান্না, ছিল না বিরাম। কর্মে-দুশ্চিন্তায় গড়িয়েছিল বহু রাত, বহু দিন, তবুও জীবন ছুটে চলেছে, ঠিক যেন রেলগাড়ির ছিন্। হঠাৎ দেখি চুলে রুপালি রেখা, হাঁটার গতি ধীরে ধীরে হারায় রেখা। সময় বলছে, “বন্ধু, গন্তব্য আর বেশি দূরে নয়” — তবু মানুষ ব্যস্ত, কেউ গুনছে টাকা, কেউ করছে কৌশল ভয়। কে কাকে দমন করে, কে কাকে চেপে ধরে, কে গড়ে অট্টালিকা, কে মুছে গরিবের ঘর চরে। হিসেব, হিসেব, সব কিছুরই হিসেব চলে — কে দিল কত, কে রাখল কী, কে কার টাকা খরচ করে। কিন্তু আমি? আমার নেই কিছু, নেই জমি, নেই গাড়ি, নেই ব্যাংক-ব্যালেন্স, নেই আলমারিতে স্বর্ণের ঝাড়ি। শুধু আছে বুকভরা নিঃশ্বাস আর দু'চোখে স্মৃতির কাঁচ, জীবনের শেষে দাঁড়িয়ে বুঝি — এ-ই ছিল আসল টান। মৃত্যু আসবে — অবধারিত সত্য,...

খুঁজি যারে

ছবি
“খুঁজি যারে” আমি খুঁজি যারে, পাই না যে তারে! খুঁজি ভোরের শিশিরে, সন্ধ্যার আঁধারে, ঝরে পড়া পাতায়, বাতাসের নাড়াচাড়ায়, সূর্যের দীপ্তিতে, চাঁদের নিঃশব্দ স্নেহে, পাই না, কোথাও পাই না—সে অদেখা প্রিয় মুখ। খুঁজি ঘরে-বাইরে, গ্রাম থেকে শহরে, নালার কাঁদায়, অথবা ঝিলের জলে, আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে মেঠো রোদে হেঁটে, পথিকের মতো খুঁজি নিরন্তর—একই ছায়ার পিছে! মহল্লার অলি-গলিতে, হাট-ঘাট-বাজারে, পাথরে-খোদাই মূর্তিতে, প্রাচীন মন্দিরে, পুরনো পাণ্ডুলিপির পাতায়, গানের সুরে, ধূপধুনোর গন্ধে, মন্ত্রোচ্চারণে— কোথাও পাই না তারে। কেউ বলে — “আছে সে হিমালয়ে”, “পাহাড়ের গুহায় ধ্যানে রত সাধু তার পথ চিনে”, কেউ বলে “বিরাট শূন্যে”, কেউ বলে “ঈশ্বরের সিংহাসনে”! তবুও আমার হৃদয় খুঁজে ফেরে—একটা চেনা চিহ্নের তরে। আমি গেছি মথুরায়, বৃন্দাবনে, কাশী-পুষ্করে, খুঁজেছি গয়া-প্রয়াগে, গঙ্গার ঘাটে শতবার স্নানে, তীর্থে-তীর্থে শুধাই সবাইকে— "তুমি কি জানো তার ঠিকানা?" কেউ দেয় চুপচাপ হাসি, কেউ চেয়ে থাকে অন্তরীক্ষের ...

রাজা ও প্রজার কথোপকথন

ছবি
রাজা প্রজা দৃশ্য: রাজপ্রাসাদ। রাজা তার সিংহাসনে বসলেন। সামনে দাঁড়িয়ে আছে তার প্রজা। রাজা: “প্রজারে! আ-রে বেটা, তোর এতো সাহস কে-রে? তুই কি জানিস, আমি কি করতে পারি তোকে? চুপ থাকিস! আমার পক্ষে থাকিস, নাহয় দেখবো তোকে।” প্রজা: “রাজা মহাশয়, আপনার মালিক, আমারও মালিক ঐ স্রষ্টা নির্দোষ। আমি জানি, আপনি মহান। কিন্তু আমরাও মানুষ, আমাদেরও প্রাণ, আমাদেরও আশা।” রাজা: “কি বললি? দিবো সাজা, কাটবো হাত তোদের! আমি রাজা, আমি মালিক, বুঝে নে ছোট জাত!” প্রজা: “মহান রাজা, শক্তি দিয়ে যদি শাসন চালাও, তাহলে অন্যায় হবে, জ্বলবে কারাগার! আমরা নই শুধুই ভয়ে, আমরা চাই ন্যায়, আমরা চাই শান্তি, প্রগতি আর আশা।” রাজা: “সত্য কি? সত্য আমার কথা! আমি চাই তোমরা শাসনের আওতায় থাকো, অথচ তোমরা বিদ্রোহী—কী করবে তা?” প্রজা: “বিদ্রোহ নয়, রাজা, তা স্বপ্নের ডাক, যে দিবে মুক্তি, যে দেখাবে সঠিক পথ। শাসন নয় প্রজা, আমরা চাই শ্রদ্ধা, তোমার গর্জন নয়, আমাদের হৃদয়ে শান্তি।” রাজা: “চুপ কর, নত মাথা, আমার কথা শুন! অবা...