পোস্টগুলি

আমি এদেশে সংখ্যালঘু

ছবি
আমি এদেশে সংখ্যালঘু আমি এদেশে সংখ্যালঘু , তবুও আমি “এদেশের” — এই মাটি, এই জল, এই পল্লীর পেঁপে গাছ, এই বর্ষার জলঢাকা পথ— সবই আমার চেনা। আমি হিন্দু, আমি বৌদ্ধ, আমি খ্রিস্টান— তবু আমি বাংলাদেশী , আমি সেই মা-বাবার সন্তান, যারা একাত্তরে কাঁধে বোমা নয়, কাস্তে-কলম-লাঠি তুলে দাঁড়িয়েছিল পাক-হানাদারের বিপক্ষে। আমার দাদার বুকেও বয়ে গিয়েছিল গুলি, জন্মভূমিকে ভালোবেসে। কিন্তু আজ তার নাতি আমি— নতুন করে পরিচয়ের সনদ চাই। আমি এদেশে সংখ্যালঘু, আমার ঈশ্বরকে আমি মাটির মূর্তিতে দেখি— তাই আমি ভয় পাই, কারণ একদিন সেই মূর্তি ভাঙা হয় ‘অপরাধে’ যে আমি ভিন্ন রূপে ঈশ্বরকে ভালোবাসি। আমি শারদীয়া দুর্গাপূজায় মা দুর্গাকে স্বাগত জানাই, আর সেই সময় আমার কাঁপে বুক— বাজার থেকে ফেরার পথে গলার মালা ছিঁড়ে ফেলা হতে পারে, ঘরের প্রতিমায় পাথর ছোঁড়া হতে পারে। পুলিশ হয়তো আসবে, আবার হয়তো আসবেই না। আমি স্কুলে বাংলায় ‘মা’ লিখি, কিন্তু প্রশ্ন আসে— “তুমি হি...

আমিও এদেশের মানুষ

ছবি
----আমিও এদেশের মানুষ---- একজন সংখ্যালঘুর কণ্ঠস্বর! আমি হিন্দু, তাই আমি এদেশে চারাল আমি অল্পশিক্ষিত, তাই আমি গণ্ডমূর্খ আমি গরীব, তাই আমি এদেশে অবহেলিত আমি পুজো করি, তাই আমি এদেশে ঘৃণিত। আমি দীপ জ্বালালে বলে — অশুভ আগুন আমি ঘণ্টা বাজালে বলে — যন্ত্রণা দেয় কানে আমি নাম না জপে, শুধু শান্তি চাই — তবু বলে, আমি ধর্মদ্রোহী, আমি অমানুষ! আমি কোরবানির বিরোধিতা করি না, তবু আমার উঠানে ছাগল বাঁধা অপরাধ আমি দুর্গাপূজায় আলপনা আঁকি — তবু বলে, এই দেশে আমার সংস্কৃতির অধিকার নাই। আমি "জয় মা" বলি — কেউ হাসে, কেউ হিংসে করে আমি নমস্কার করি — বলে, সালাম শেখ না রে! আমি খুশি থাকলে — গুজব ওঠে, বুঝি ইন্ডিয়ার টাকা আমি দুঃখী হলে — বলে, নাটক করিস! তোদের তো দেশই নাই! তবু আমি বলি — আমিও মানুষ! আমারও রক্ত লাল, আমারও বুক কাঁপে, আমারও মা আছেন, আমারও সন্তান স্বপ্ন দেখে। সময়সময় কৃতজ্ঞ রাখি, সংখ্যালঘু নির্যাতনে প্রতিবাদ দেখি! বহু মানুষ করে প্রতিবাদ অন্যায়ের, মানববন্ধন করে সবাই ন্যায়বিচারের। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে, শহরের ...

ঘরে বাইরে চলছে ক্রিকেট জুয়া

ছবি
     ক্রিকেটের আড়ালে সর্বনাশা জুয়া বর্তমানে হাতে হাতে স্মার্টফোন! ঘরে ঘরে রঙিন টেলিভিশনের ছড়াছড়ি। সাথে পাচ্ছে সীমিত মূল্যে 4G ইন্টারনেট সেবা এবং ওয়াইফাই। দেশের আনাচে-কানাচে, হাট-বাজারে, অলি-গলির প্রতিটি দোকানে চলছে টিভি চ্যানেলে ক্রিকেট খেলা। এই জনপ্রিয় খেলার ভেতরে চলছে আরেক ভয়াবহ খেলা — মরণঘাতী গুপ্ত জুয়া । ক্রিকেটের মাঠে উইকেট খেলে না, খেলে খেলোয়াড়রা। আর মাঠের বাইরের অনেক ভক্ত এই খেলার নামে খেলছে সর্বনাশা জুয়া। আমার ক্রিকেট স্মৃতি ❝সময়টা ছিল স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭৪-১৯৭৫ সাল। আমরা তখন টেনিস বল দিয়ে ব্যাটবল খেলতাম। বল না থাকলে ছেঁড়া কাপড় মুড়িয়ে বানাতাম বল। স্টাম্প বানাতাম গাছের ডালা বা ইট সাজিয়ে। ব্যাট হিসেবে থাকত কাঠের তক্তা। বল করতাম গড়িয়ে।❞ খেলোয়াড় বলেই জানতাম সবাইকে। উইকেট বা ব্যাটসম্যান শব্দ তখন অজানা। আজ সেই ব্যাটবল হয়ে গেছে জাতীয় ক্রিকেট খেলা, যা নিঃসন্দেহে জাতির জন্য এক গৌরব। জাতীয় ক্রিকেট ও তার উত্থান: ক্রিকেটের জন্ম ষোড়শ শতকে হলেও প্রথম টেস্ট খেলা শুরু হয় ১৮৭৭ সালে। বাংলাদেশের ক্রিকেট আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আত্মপ্রকাশ করে ১৯৭৯ সালে...

আমায় যদি প্রশ্ন করো, কেমন তোমার বাংলাদে?

ছবি
আমায় যদি প্রশ্ন করো, কেমন তোমার বাংলাদেশ? আমায় যদি প্রশ্ন করো, কেমন তোমার বাংলাদেশ? আমি মাথা নিচু করে বলব—এ এক গভীরতর বেদনার বাংলাদেশ। এ দেশে শিশুরা খুন হয়, কন্যারা ধর্ষিত হয়, তরুণেরা গুম হয়ে যায়, বয়োজ্যেষ্ঠরা অপমানিত হন, বিচার চাওয়ার চেয়ে চুপ থাকাই নিরাপদ মনে হয়। রাস্তায় বের হলে ঘরে ফেরা অনিশ্চিত, ট্রেন-বাসে উঠলে জান-বাঁচানোর তাগিদে প্রার্থনা করতে হয়। গলির মোড়ে ছিনতাই, হাটে-বাজারে প্রতারণা, রাজপথে রাজনৈতিক রাহাজানি— এই যেন আমাদের দৈনন্দিন চিত্র। কুমিল্লার রামচন্দ্রপুরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নির্মম ঘটনা আমাদের অন্তরকে রক্তাক্ত করেছে। শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা এক বর্মণ সম্প্রদায়ের ২৫ বছর বয়সী নারী — দরিদ্র এক মৎস্যজীবী পরিবারের সদস্য, যার কোনো প্রভাব-প্রতিপত্তি নেই, শুধুই একজন মানুষ, শুধুই একজন মেয়ে। রাতের আঁধারে তার ঘরে ঢুকে এক পিশাচ তাকে ধর্ষণ করেছে— তার কান্না, তার প্রতিবাদ, তার অসহায়ত্ব ছুঁয়ে যায় না এই সমাজকে। সমাজ তখনও নীরব থাকে, প্রশাসন তখনও উদাস, কিছু মিডিয়া কাভা...

এইতো জীবন

ছবি
এইতো জীবন — এক আক্ষেপ, এক উপলব্ধি জীবন বেশি সময়তো নয়, যতটুকুই সময়, অনেক সময় হয় অপচয় কতো জয়, কতো ক্ষয়, কতো ভয় আশা-নিরাশার দোলাচালে বেঁচে রয় সময় ফুরিয়ে গেলে চলে যেতে হয়। জীবন বেশি সময়তো নয়।। জীবন বেশি সময়তো নয়, খুবই অল্প সময়, চাওয়া-পাওয়ার জয়-পরাজয় প্রেম-বিয়ে ভালোবাসাও তো হয় কেউ ব্যর্থ, সফলতায় জীবন মধুময় সময় ফুরোলে সবকিছুই স্মৃতি হয়ে রয়। জীবন বেশি সময়তো নয়।। 🖊️ কবি: নিতাই বাবু ✍️ লেখক পরিচিতি: নিতাই বাবু—(মূল নাম: নিতাই চন্দ্র পাল) একজন চিন্তাশীল কবি, ব্লগার ও সমাজ-মনস্ক লেখক। জন্ম ১৯৬৩ সালের জুন মাসে, বাংলাদেশের এক প্রাকৃতিক শোভাময় গ্রামে—নোয়াখালীর মহতাবপুরে। তাঁর শৈশব কেটেছে মুক্তিযুদ্ধের ছায়া ও দারিদ্র্যের বাস্তবতায়, যা তাঁর লেখায় গভীর জীবনবোধ ও সংবেদনশীলতার ছাপ রেখে গেছে। তিনি bdnews24 ব্লগের পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্লগার, লেখেন মানবিকতা, শহর-জীবন, নদী-সংস্কৃতি, এবং নান্দনিক সমাজবোধ নিয়ে। তাঁর কবিতায় ফুটে ওঠে সময়ের ক্ষণস্থায়িত্ব, ভালোবাসা, অপচয়, বেদনা এবং আশা-নিরাশার দোলাচল। নিতাই বাবুর লেখনী সরল অথচ হৃদয়গ্রাহী—যেখানে পাঠক খ...

কাল কত প্রকার ও কী কী

ছবি
  কাল কত প্রকার ও কী কী? অনেকেই প্রশ্ন করেন, কাল কত প্রকার ও কী কী? উত্তর হলো—অতীতকাল, বর্তমানকাল ও ভবিষ্যৎকাল। তাতে দেখা যায়, কাল তিন প্রকার। তা যে যা বলুক, আমি এই লেখায় অন্তত ২৪ প্রকার কালের নাম-সহ কালের বিশদ বিবরণও উল্লেখ করেছি। কারণ কেউ কেউ এই কালকে অন্যরকমও মনে করে থাকে। তবে হ্যাঁ, কালে কালে এই মানবজাতির অনেক উন্নতি সাধিত হয়েছে। যেমন: বনমানুষ থেকে এপর্যন্ত মানুষ এখন সভ্য জগতে পদার্পণ করেছে। সেইসাথে সেসময় থেকে এসময় পর্যন্ত পৃথিবীর অনেক কিছুই বদলে গেছে। তাই আবারও উল্লেখ করেছি, কাল কিন্তু একটা সময়। তা হোক সুসময়, দুঃসময়। এই সময়ের কালগুলো হলো: ক্রিয়াকাল, আদিকাল, অনন্তকাল, মহাকাল, শিশুকাল, বাল্যকাল, যুবককাল, অকাল, বয়সকাল, চিরকাল, গতকাল, আগামীকাল, আজকাল, আধুনিককাল, সকাল, বিকাল, রাত্রিকাল, এযাবতকাল, একাল, সেকাল, কলিকাল, করোনাকাল, বৃদ্ধকাল, মরণকাল। এই সময়টা হতে পারে দীর্ঘ সময় বা অল্প সময়। যেমন: গানে আছে—“কতকাল দেখিনি তোমায়!” ... (সম্পূর্ণ বর্ণনা উপরের পাঠ্য অনুযায়ী সংরক্ষিত আছে) ২৪ প্রকার কালের সংক্ষিপ্ত তালিকা ও বর্ণনা: ক্রিয়াকাল : ক্রিয়ার ...

আদরের পুসি ও হিন্দুধর্মে বিড়াল সমাচার

ছবি
ছোটবেলা থেকেই কুকুর, বিড়াল, গরু-ছাগল ভালোবেসে আসছি। এই ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত নয়, ঘরের জিনিসপত্র নষ্ট করে ফেলা ইঁদুরও। মাঝে মাঝে দুপুরে কিংবা রাতে ভাত খেতে বসলে নিজে খাওয়ার আগে ঘরের ইঁদুরগুলোর জন্য একমুঠো ভাত বাসার এক কোণে রেখে দিই। রাতে সবাই ঘুমিয়ে গেলে সেই একমুঠো ভাত ঘরের উষ্ণতা খুঁজে বের করা ইঁদুরগুলো মিলেমিশে খেয়ে ফেলে। আবার, রাস্তায় কোনো কুকুর সামনে এলে ওকে খাবার কিনে দিই—কুকুরটা মনের আনন্দে লেজ নেড়ে খায়। বিড়াল সামনে পড়লে তাকেও খাওয়াতে ইচ্ছা করে। কারও গরু-ছাগল দেখলে গিয়ে আদর করি, মাথায় হাত বুলিয়ে দিই। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো—মনের ভেতর পশু-পাখির প্রতি এত ভালোবাসা থাকলেও নিজের কোনো বাড়ি না থাকায় এসব ভালোবাসা প্র্যাকটিকালি পূরণ করা হয়ে ওঠে না। তবুও মাঝেমধ্যে শত ঝামেলা সত্ত্বেও ভাড়া বাসায় কুকুর বা বিড়াল পুষে ফেলি। এইতো কয়েক বছর আগে, ২০১৬ সালে শখ করে একটা কুকুরছানা বাসায় নিয়ে এসেছিলাম, পুষব বলে। ওর নাম রেখেছিলাম “ধলু”। কিন্তু যেহেতু আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী, কুকুর ঘরে আনা নিয়ে সহধর্মিণীর সঙ্গে লাগল তুমুল ঝগড়া! ছিছিছি, রাম রাম, হায় ভগবান—সব শব্দ একসাথে চলতে লাগল! তারপরও দমে যাইনি...