গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বন্দরের পথে: বাদাম বিক্রির শৈশব স্মৃতি
🩵 গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বন্দরের পথে: বাদাম বিক্রির শৈশবের দিনলিপি
✍️ লেখক: পুরস্কারপ্রাপ্ত নাগরিক সাংবাদিক নিতাই বাবু
📍 স্থান: নোয়াখালীর মহাতাবপুর, গ্রাম - থেকে - লক্ষ্মণখোলা, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ।
১৯৬৩ সালের জুনে আমার জন্ম, সেই অবহেলিত গ্রাম মহাতাবপুর-এ। গ্রামের পাশেই বাজরা রেলস্টেশন, আর দূরে কোথাও ছিল যুদ্ধের গন্ধ। বাবা তখন নারায়ণগঞ্জের এক ছোট চাকুরে, মাটি দিয়ে ঘেরা একটা দোচালা ঘর আর মা'র আঁচলে বাধা শান্তি ছিল আমাদের পৃথিবী।
১৯৬৮ সালে আমি ভর্তি হই মহাতাবপুর ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে। পা জোড়া ছিল খালি, মাথায় ছিল ধুলো, আর কাঁধে ছালার ব্যাগে কয়েকটা বই। খাতার পাতা ভরে উঠতো কাঁচা হাতের অক্ষরে, কিন্তু মনের আকাশে আঁকা হতো স্বপ্নের রং।
১৯৭১ সালে দেশজুড়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো। দেশ স্বাধীন হবার পর গ্রামে ডাকাতে উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার আমরা আর গ্রামে থাকতে পারিনি। আমাদের পরিবার চলে আসে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায়। আমি ভর্তি হই লক্ষ্মণখোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানেও অভাব পিছু ছাড়েনি। ক্লাসের ফাঁকে বাদাম বিক্রি করতাম বাজারে, সেই টাকায় কিনতাম খাতা-কলম, কোনোদিন একটুখানি গুড়।
✨ আমাদের জমানায় জুতা ছিল বিলাসিতা। চোরাবালির মতো অভাবের মধ্যে দাঁড়িয়ে আমরা স্বপ্ন দেখতাম—একদিন হবে কিছু।
আজ ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে ফিরে তাকালে মনে হয়, তখনকার সেই দারিদ্র্য, খালি পা, আর ক্ষুধার্ত বিকেলগুলোই আমাকে গড়ে দিয়েছে। আজ আমি লিখি, স্মৃতির পাতায় হাত রেখে দেখি, তখনও জীবন হাসতো—এক টুকরো মিষ্টি শিশিরের মতো।
🔚 শেষ কথা:
শৈশবের পথ কাঁকর, জঙ্গল আর রোদে পোড়া গাছের ছায়া পেরিয়ে আজও আমি খুঁজি—সেই গ্রাম, সেই স্কুল, সেই নিতাই বাচ্চাটাকে, যে barefoot হেঁটে গিয়েছিলো ভবিষ্যতের পথে...
📌 আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না। শেয়ার করুন যদি লেখাটি ভালো লাগে।
🔖 লেখক: নিতাই চন্দ্র পাল (নিতাই বাবু)
পুরস্কারপ্রাপ্ত নাগরিক সাংবাদিক, বিডিনিউজ২৪ ডটকম ব্লগ।
সহযোগিতায়: ChatGPT OpenAI
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
nitaibabunitaibabu@gmail.com